ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২

ইউএস-বাংলার দ্বাদশ বর্ষে পদার্পণ: ২৪টি এয়ারক্রাফট দিয়ে ২০টি গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা

প্রকাশিত: ০৮:৪৪, ১৭ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০৮:৪৫, ১৭ জুলাই ২০২৫

ইউএস-বাংলার দ্বাদশ বর্ষে পদার্পণ: ২৪টি এয়ারক্রাফট দিয়ে ২০টি গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স সাফল্যের সাথে এগারোটি বছর অতিক্রম করে আজ ১৭ জুলাই ২০২৫ তারিখে দ্বাদশ বর্ষে পদার্পণ করেছে। একাদশ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ইউএস-বাংলা তাদের সকল শুভানুধ্যায়ীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছে।

২০১৪ সালের ১৭ জুলাই ড্যাশ৮-কিউ৪০০ এয়ারক্রাফট দিয়ে ঢাকা-যশোর রুটে ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে ইউএস-বাংলা তাদের যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে এই এয়ারলাইন্সের বিমান বহরে ২টি এয়ারবাস ৩৩০-৩০০, নয়টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ সহ মোট ২৪টি এয়ারক্রাফট রয়েছে। যাত্রা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৯০% এর বেশি অন-টাইম ফ্লাইট পরিচালনার রেকর্ড রয়েছে ইউএস-বাংলার।

অভ্যন্তরীণ রুটে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, যশোর, সৈয়দপুর ও রাজশাহীতে ফ্লাইট পরিচালনা করছে ইউএস-বাংলা। ২০১৬ সালের ১৫ মে ঢাকা-কাঠমান্ডু রুটে ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক রুটে ডানা মেলে সংস্থাটি। বর্তমানে আন্তর্জাতিক রুটে কলকাতা, চেন্নাই, মালে, মাস্কাট, দোহা, দুবাই, শারজাহ, আবুধাবী, জেদ্দা, রিয়াদ, কুয়ালালামপুর, সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক ও গুয়াংজুসহ মোট ২০টি গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা করছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।

খুব শীঘ্রই ইউএস-বাংলার বিমান বহরে আরও একটি এয়ারবাস ৩৩০-৩০০ এয়ারক্রাফট যুক্ত হতে যাচ্ছে। এছাড়া, ২০২৬ সালের মধ্যে লন্ডন, রোম সহ ইউরোপের বিভিন্ন গন্তব্য এবং ২০২৮ সালের মধ্যে নিউইয়র্ক ও টরেন্টোতে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।

সাম্প্রতিক সময়ে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স ধারাবাহিক সাফল্য অর্জন করেছে। ২০২৪ সালে তারা 'বেস্ট ডমেস্টিক এয়ারলাইন্স' খেতাবে ভূষিত হয়েছে। এর আগে ২০২২ ও ২০২৩ সালেও এই পুরস্কার পেয়ে হ্যাট্রিক অর্জন করেছে। ২০১৫ সালেও তারা 'বেস্ট ডমেস্টিক এয়ারলাইন্স' হিসেবে সেরা পুরস্কার পেয়েছিল।

যাত্রীসেবায় অনন্য নজির স্থাপন করে ইউএস-বাংলা দেশীয় এয়ারলাইন্স হিসেবে যাত্রীদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে। দেশে-বিদেশে বর্তমানে প্রায় ৩০০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী এই সংস্থায় কাজ করছেন, যা দেশের বেকারত্ব সমাধানেও ভূমিকা রাখছে। এছাড়া, নিয়মিত ট্যাক্স-সারচার্জ পরিশোধ করে ইউএস-বাংলা দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখছে এবং আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করে দেশের সুনাম বৃদ্ধি ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে অবদান রাখছে।

ইউএস-বাংলার টিকেট সংগ্রহের জন্য ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপসের সুবিধা রয়েছে। দেশে এবং দেশের বাইরে নিজস্ব ৪০টিরও বেশি সেলস্ অফিস রয়েছে। এছাড়া, কয়েক হাজার ট্রাভেল এজেন্সি ও অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি ইউএস-বাংলার টিকেট সংগ্রহের সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ফ্রিকোয়েন্ট ফ্লাইয়ারদের জন্য তাদের 'স্কাইস্টার' প্রোগ্রাম চালু আছে।

স্বাধীনতার পর ইউএস-বাংলাই প্রথম কোনো দেশীয় বিমান সংস্থা যা চীনের কোনো গন্তব্যে বা ভারতের চেন্নাই কিংবা মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যাত্রীদেরকে বেশ কয়েকটি বিশেষ সার্ভিস দিয়ে ইউএস-বাংলা এভিয়েশন শিল্পে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। উল্লেখযোগ্য সার্ভিসগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট অবতরণের পর মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যে লাগেজ ডেলিভারি। 'আপনি লাগেজের জন্য অপেক্ষা করবেন না বরং লাগেজ আপনার জন্য অপেক্ষা করবে'—এই ধারণাটি প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যেই ইউএস-বাংলা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। ইউএস-বাংলা শুধু যাত্রীই পরিবহন করে না, সাথে বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক গন্তব্যে কার্গোও পরিবহন করে থাকে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে ইউএস-বাংলা দেশের বিভিন্ন শিক্ষা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানসহ খেলাধুলার উন্নয়নের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল-মামুন একাদশ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বলেন, "প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে আমরা যেকোনো ধরনের প্রতিযোগিতার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে প্রস্তুত। বর্তমান বিশ্বে যাত্রীদের সঠিক সেবা প্রদান করার জন্য আধুনিক এয়ারক্রাফটের কোনো বিকল্প নেই। ইউএস-বাংলা যাত্রীদের আরামদায়ক সেবাকে নিশ্চিত করার লক্ষ্যেই প্রতিনিয়ত নতুন নতুন এয়ারক্রাফট বহরে যুক্ত করে চলেছে। দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতির সাথে সম্পৃক্ত থাকতে পেরে ইউএস-বাংলা পরিবার অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত।" তিনি আরও বলেন, "ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের সাফল্যে ভরা এগারো বছর এর সাথে যে সকল সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্ট, ট্যুর অপারেটর, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, বিভিন্ন কর্পোরেট অফিস, বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক, অনলাইন মিডিয়ার কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ, সর্বোপরি প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত যে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে তাদের সকলের প্রতি ইউএস-বাংলা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছে।"

সাব্বির

×