ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৭ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২

সেমিনারে ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব

ডিজিটাল প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জুলাই যোদ্ধাদের আত্মকর্মসংস্থান

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:০৮, ১৭ জুলাই ২০২৫

ডিজিটাল প্রশিক্ষণের মাধ্যমে জুলাই যোদ্ধাদের আত্মকর্মসংস্থান

ফয়েজ আহমেদ তৈয়্যব

প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, জুলাই যোদ্ধাদের জন্য আইসিটি থেকে তেমন কিছু করা হয়নি। আগামী দিনে আমরা জুলাই যোদ্ধাদের আইসিটিতে দক্ষ করে একটা সম্ভাবনাময় ভবিষ্যতের নিশ্চয়তা দিতে চেষ্টা করব। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে বুধবার আইসিটি টাওয়ারে ‘জুলাই শহীদ দিবস’ ও ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ পালন উপলক্ষে আয়োজিত ‘যুবশক্তি : ভাষা আন্দোলন ১৯৫২ থেকে কোটা সংস্কার আন্দোলন ২০২৪’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, আজ আমাদের জন্য একটি দুঃখের দিন। যে তরুণরা তাদের জীবন দিয়ে আমাদেরকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন এবং নতুন দায়িত্ব দিয়েছেন আমরা কতটা শ্রদ্ধাশীল থেকে সেই  দায়িত্ব পালন করেছি আজ তা বুঝে নেওয়ার দিন। আমরা যে কাজগুলো শুরু করেছি অনেক ক্ষেত্রেই গত এক বছরে আমরা সফল হইনি, আগামী দিনে কিভাবে সফল হতে পারি সে পরিকল্পনা আমাদের করতে হবে। প্রতিদিন যখন বাসায় ফিরি আমার মনে হয়, অনেক কাজ বাকি। আমি ছাত্রদের সামনে দাঁড়াতে পারি না, লজ্জা লাগে বলে তিনি আবেগতাড়িত হয়ে যান।
তিনি বলেন, আমরা আইসিটি থেকে তাদের জন্য খুব বেশি কিছু করতে পারেনি এই বিষয়টি আমাকে তাড়িত করে। আগামী মাসগুলোকে আমরা চেষ্টা করব জুলাইয়ের আহতদের আইসিটি স্কিল দিয়ে তাদেরকে একটা ভবিষ্যৎ সম্ভাবনাময় জীবনের নিশ্চয়তা দিতে।
ফয়েজ আহমেদ আরও বলেন, একই সঙ্গে নাগরিক সেবা নামে একটা প্ল্যাটফর্ম চালু করেছি, এর মাধ্যমে ডিজিটাল ট্রান্সফরমেশনে মানুষকে হয়রানিমুক্ত সেবা প্রদান করার প্রক্রিয়া শুরু করেছি।
এ ছাড়া বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় যে সফটওয়্যার পার্কগুলো করা হয়েছে, যেখানে শুধু বিল্ডিং দাঁড়িয়ে আছে ট্রেনিং কিংবা স্কিল ডেভেলপমেন্টের কোনো ব্যবস্থা নেই। সেখানে স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম চালুর বিষয়ে আইসিটি বিভাগ কাজ করছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
সভাপতির বক্তব্যে আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, বাঙালি মরতে জানে কিন্তু হারতে জানে না। জুলাই আন্দোলনে দুহাজারেরও বেশি মানুষকে হারিয়ে আমরা জগদ্দল পাথর সরিয়েছি।
৫ আগস্টের পর আমাদের অগ্রগতি কম নয়। ফ্যাসিবাদ বিরোধী দলগুলোর মধ্যে বিভাজনের জন্য চক্রান্ত চলছে, গত পনের বছর অবৈধভাবে অর্জিত টাকা এ চক্রান্ত সফল করতে ব্যয় করা হচ্ছে। কিন্তু আমরা তা সফল হতে  দেব না। 
আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মামুনুর রশীদ ভূঞা বলেন, আমরা দেখেছি জাতির ক্রান্তিলগ্নে তরুণরাই ত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হয়ে আমাদের আলোর পথ দেখিয়েছেন। জুলাই আন্দোলনে একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ স্লোগান ছিল যদি তুমি ভয় পাও তবে তুমি শেষ, যদি তুমি রুখে দাঁড়াও তুমিই বাংলাদেশ। আমরা প্রবীণরা কিন্তু রুখে দাঁড়াতে পারিনি, তরুণরাই রক্ত দিয়ে অন্যায়, অবিচার, জুলুমের এবং বৈষম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। আমরা যদি তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে না পারি, তারা যে পথ দেখিয়ে গেছে সে পথে চলতে না পারি, তাহলে শহীদদের আত্মা কষ্ট পাবে।
জুলাই যোদ্ধা এবং ছাত্র প্রতিনিধি মো. আবু বকর সিদ্দীক বলেন, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা পরিবর্তনের জন্য জুলাই আন্দোলন হয়েছে। তিনি বিচার এবং যথাযথ সংস্কারের পর নির্বাচন আয়োজনের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে অনুরোধ করেন।
ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী আহসান ইয়াসির শারার বলেন, আমরা এখনো  খুনিদের বিচার দেখছি না। পুলিশরা এখনো ফাংশনাল না। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করলেও তাদের ওপর ১০ শতাংশ কর আরোপ করা হয়েছে, তিনি তা প্রত্যাহার চান।
সেমিনারের শুরুতে জুলাই শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। তার আগে আইসিটি টাওয়ারের নিচতলায় নবনির্মিত জুলাই কর্নারের উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন টেকনোলজির প্রফেসর ড.এম মেজবাহ উদ্দিন সরকার।
বিসিসির নির্বাহী পরিচালক ড. মো. মেহেদী হাসানসহ আইসিটি বিভাগের আওতাধীন বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা এবং আন্দোলনে আহত ছাত্রছাত্রীরা সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।

×