ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ফেডারেশন কাপ ফুটবল ॥ উত্তর বারিধারা ৩-০ ব্রাদার্স ইউনিয়ন

ব্রাদার্সের বিদায় গ্রুপপর্ব থেকেই

প্রকাশিত: ২৩:২৮, ৩০ ডিসেম্বর ২০২০

ব্রাদার্সের বিদায় গ্রুপপর্ব থেকেই

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ৭১ বছর বয়সী ঐতিহ্যবাহী ফুটবল ক্লাব তারা। বাংলাদেশের মৌসুম সূচক ফুটবল টুর্নামেন্ট ফেডারেশন কাপ শুরু হয় ১৯৮০ সাল থেকে। সেই আসরে অংশ নিয়ে শিরোপা জিতেছিল তারা (যুগ্মভাবে মোহামেডানের সঙ্গে)। এরপর আরও দু’বার এই আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে (১৯৯১ ও ২০০৫ সালে)। যাদের কথা বলা হচ্ছে সেই তিনবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাদার্স ইউনিয়ন লিমিটেডকে কিনা চলমান ফেডারেশন কাপের ৩২তম আসরে গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় করে দিল মাত্র ২৫ বছর বয়সী উত্তর বারিধারা ক্লাব। মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দিনের প্রথম ম্যাচে (বি-গ্রুপ) বারিধারা ৩-০ গোলে হারায় ব্রাদার্সকে (খেলার প্রথমার্ধের স্কোরলাইন ছিল ২-০)। এ নিয়ে টানা তিন ম্যাচেই হারলো মহিদুর রহমান মিরাজের শিষ্যরা। আগের দুই ম্যাচে তারা হারে যথাক্রমে আরামবাগের কাছে ২-০ এবং সাইফ স্পোর্টিংয়ের কাছে ৬-১ গোলে। তিন ম্যাচে হেরে তাদের পয়েন্টের ভাণ্ডার শূন্য। এবারের আসর শুরু হওয়ার আগে অংশগ্রহণকারী ১৩ দলকে নিয়ে বাফুফে ভবনে যে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল তাতে ব্রাদার্স ইউনিয়নের সহকারী ম্যানেজার হাশেম মোল্লা বলেছিলেন, ‘বিভিন্ন ঝমেলায় আমাদের প্রস্তুতি হয়নি বললেই চলে। আজ থেকে অনুশীলন শুরু হবে।’ আর উত্তর বারিধারার কোচ শেখ জাহিদুর রহমান বলেছিলেন, ‘আমরা মাঝারি শক্তির দল। তাই আমাদের লক্ষ্য থাকবে এই আসরে কমপক্ষে পঞ্চম বা ষষ্ঠ হওয়া।’ লক্ষণীয় ব্যাপার- হাশেম ও জাহিদুর যা বলেছিলেন বাস্তবে ঠিক সেটাই হয়েছে বা হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশের ঘরোয়া ফুটবলের ইতিহাসে যথাসময়ে দলবদল না করার এক বিরল কীর্তি গড়ে বাফুফে কর্তৃক শাস্তির সম্মুখীন (প্রথম দিতে হয়েছে কারণ দর্শানো নোটিস) হয় ব্রাদার্স। ক্লাবের কর্মকর্তাদের মধ্যে দ্বন্দ্বের জেরে এমন বেহাল দশা। ফলে বিদেশী কোচ আসতে পারেননি। দলের ফুটবলারদেরও অনুশীলন হয়নি। ফলে যা হবার তাই হয়েছে, গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিতে হলো কমলা শিবিরদের। তাই বলে ২০১৪-১৫ মৌসুমের চ্যাম্পিয়নশিপ লীগ জেতা বারিধারা মঙ্গলবার যে আন্ডারডগ ছিল বা অঘটন ঘটিয়েছে .... এমনটা কিন্তু বলা যাবে না। তারা জিতেছে যোগ্যতাবলেই। তিন ম্যাচে তারা জিতেছে দুই ম্যাচেই। হেরেছে এক ম্যাচে। হারিয়েছে আরামবাগের মতো প্রতিষ্ঠিত শক্তিকে, হেরেছে সাইফের কাছে ৩-০ গোলে। ৬ পয়েন্ট তাদের। মঙ্গলবার ম্যাচের ৯ মিনিটে বারিধারাই গোল করার প্রথম সুযোগ পেয়েছিল। বক্সের বাইরে থেকে বল বাড়ান মিসরীয় মিডফিল্ডার মোস্তফা। বক্সে বল ধরে বাঁপ্রান্ত থেকে ফরোয়ার্ড সুজন বিশ্বাস পাস দেন সতীর্থ সুমন রেজাকে (যিনি কিছুদিন আগেই জাতীয় দলে অভিষিক্ত হয়েছেন)। কিন্তু ফাঁকা পোস্ট পেয়েও সুমন গোল করতে ব্যর্থ হন। তার শট চলে যায় মাঠের বাইরে। ১৩ মিনিটে মোস্তফার শটে বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে পোস্ট ছেড়ে বের হয়ে আসেন ব্রাদার্স গোলরক্ষক রানু। বল চলে যায় বারিধারার ফুটবলারদের পায়ে। ফাঁকা জাল পেয়ে ফিনিশ করেন উজবেক মিডফিল্ডার ইভজেনি কচনভ (১-০)। ১৬ মিনিটে সুমন রেজার দূরপাল্লার শট এবার দক্ষতার সঙ্গে ধরেন ব্রাদার্স গোলরক্ষক। ২২ মিনিটে গোলের সুযোগ নষ্ট করে ব্রাদার্স। স্যামসন ইলিয়াসুর শট গ্রিপে নেন উত্তর বারিধারার গোলরক্ষক মামুন আলিফ। পরের মিনিটে সতীর্থর যোগান দেয়া বলে শট নিলেও লক্ষ্যে পাঠাতে ব্যর্থ হন সিও জুনাপিও। এর আগে অন্তত দুটি গোলের সহজ সুযোগ হাতছাড়া করলেও ২৬ মিনিটে আর তা করেননি বারিধারার সুমন রেজা। সতীর্থর বাড়িয়ে দেয়া বল থেকে বক্সে জটলার মধ্য থেকে দারুণ শটে লক্ষ্যভেদ করেন বারিধারার অধিনায়ক (২-০)। ৬০ মিনিটে সতীর্থর ক্রসে উড়ে আসা বল বক্সে বুক দিয়ে রিসিভ করে বাঁ পায়ের কোনাকুনি শটে ব্রাদার্সের জালে পাঠান উত্তর বারিধারার মিসরিয়ান ডিফেন্ডার আবদেল রহিম (৩-০)। বাকি সময় অনেক চেষ্টা করেও কোন গোল করতে পারেনি ব্রাদার্স। বারিধারাও তাই। ফলে রেফারি বিটুরাজ বড়ুয়া খেলা শেষের বাঁশি বাজালে এই আসরের গ্রুপপর্ব থেকেই শূন্য হাতে বিদায় নিতে হয় তিনবারের শিরোপাধারী ব্রাদার্স ইউনিয়নকে।
×