
গোলের পর পিএসজি ফুটবলারদের উল্লাস
ক্লাব বিশ^কাপের সেমিফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ যেন কিছু বুঝে ওঠার আগেই ম্যাচটা হেরেছে। প্যারিস সেইন্ট জার্মেইর (পিএসজি) বিপক্ষে ২৪ মিনিটের মধ্যে হজম করেছে ৩ গোল। নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার ৩ মিনিট আগে আরও একটি। রীতিমতো রিয়ালকে ৪-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে ফরাসি ক্লাবটি।
এর বাইরে আরও কয়েকটি গোল করার সুযোগ ছিল ইউরোপীয় চ্যাম্পিয়নদের সামনে। শেষ পর্যন্ত দারুণ এই জয়ে আগামী রবিবার ফাইনালে চেলসির মুখোমুখি হওয়া নিশ্চিত করেছে লুইস এনরিকের শিষ্যরা। এ মৌসুমে ফ্রেঞ্চ কাপ, লিগ আঁ ও চ্যাম্পিয়নস লিগজয়ী পিএসজি ক্লাব বিশ্বকাপেও শিরোপা জিতলে এ মৌসুমে যত প্রতিযোগিতায় তারা অংশ নিয়েছে, তার সব কটিতেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বাদ পাবে।
বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কের মেটলাইফ স্টেডিয়ামে এই হারে ১ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিতে হয়েছে কিলিয়ান এমবাপে, ভিনিসিয়াস জুনিয়র-জুড বেলিংহামদের। এই টুর্নামেন্ট দিয়েই রিয়ালের সঙ্গে যাত্রা শুরু হয়েছে কোচ আলোনসোর। ঘরোয়া ও ইউরোপীয় প্রতিযোগিতায় শিরোপাহীন মৌসুম কাটানো দলটি এমনিতেই অগোছালো। উড়তে থাকা পিএসজি তাদের যেন বাস্তবতাই দেখাল! ফরাসি জায়ান্টদের পক্ষে ফ্যাবিয়ান রুইজ দুটি, উসমান দেম্বেলে ও গঞ্জালো রামোস একটি করে গোল করেছেন। কার্ডজনিত কারণে রিয়াল মাদ্রিদ সেমিফাইনালে ডিফেন্সের নতুন ভরসা ডিন হুইজসেনকে ছাড়াই খেলতে নামে।
কিন্তু ম্যাচের আগমুহূর্তে ইনজুরির কারণে ছিটকে যান আরেক বড় সাইনিং ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার-আরনল্ড। ফলে রক্ষণে দুজনকে হারানোর ধাক্কা রিয়ালের পারফরম্যান্সে বেশ ভালোভাবেই পড়েছে। থিবো কোর্তোয়া প্রথম চার মিনিটে দুটি দুর্দান্ত সেভ করলেও, পরক্ষণেই ডিফেন্ডারদের ভুল পিএসজিকে মোমেন্টাম এনে দেয়। পুরো ম্যাচে ৬৯ শতাংশ পজেশন রেখে ১৭টি শট নেয় পিএসজি, যার ৭টি ছিল লক্ষ্যে। বিপরীতে রিয়াল ১১ শটের মধ্যে ২টি লক্ষ্যে রাখতে পারে।
সাদা জার্সিধারী রিয়াল সমর্থকদের উত্তেজনায় ঠাসা ছিল মেটলাইফ স্টেডিয়াম। বিরুদ্ধ আবহে খেলতে নেমেও ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটে প্রথম লিড নেয় পিএসজি। রিয়ালের সেন্টারব্যাক রাউল অ্যাসেনসিও পেনাল্টি স্পটের কাছে বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে দেম্বেলের কাছে নিয়ন্ত্রণ হারান। কোর্তোয়া তাকে কড়া ট্যাকেল করলেও রুইজকে খুঁজে নেন দেম্বেলে। স্প্যানিশ মিডফিল্ডার বল জালে জড়াতে ভুল করেননি।
মিনিট তিনেক বাদে রিয়ালের খলনায়ক বনে যান অ্যান্টনিও রুডিগারও। সতীর্থকে বলটি তিনি ঠিকঠাক বাড়াতেই পারলেন না। তার দুর্বলতায় দেম্বেলে পেছন থেকে ছুটে গিয়ে আড়াআড়ি শটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন। ২৪তম মিনিটে দুর্দান্ত গতিতে রিয়ালের রক্ষণ ভেঙে আশরাফ হাকিমির চমৎকার পাস পেয়ে যান রুইজ। এরপর ঠাণ্ডা মাথায় তিনি বল জালে জড়িয়ে দেন, নাগাল পাননি গোলরক্ষক কোর্তোয়া। পুরো প্রথমার্ধে বলের নিয়ন্ত্রণও ঠিকঠাক রাখতে পারছিল না রিয়াল, পজেশন ছিল মাত্র ২০ শতাংশ।
বিরতির পর কিছু বুঝে ওঠার আগে মিনিট দুয়েকের মাথায় আবারও গোল হজম করে রিয়াল। কিন্তু দেজিরে দুয়ে’র করা গোল অফসাইডে কাটা পড়ে। ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা পিএসজি এরপর দেম্বেলে-কাভারাৎস্খেলিয়াকে তুলে নেয় ৬০ মিনিটের আগে।