ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মোঃ নাসির উদ্দিন আহমেদ

আগামীর প্রতিশ্রুতি সজীব ওয়াজেদ জয়

প্রকাশিত: ২১:২০, ২৭ জুলাই ২০২০

আগামীর প্রতিশ্রুতি সজীব ওয়াজেদ জয়

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালী, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে বুকে ধারণ করে অসীম দৃঢ়তায় দেশকে উন্নয়নের অদম্য অগ্রযাত্রায় নিয়ে যাচ্ছেন। আর এই উন্নয়নকে টেকসই করার লক্ষ্য নিয়ে জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য পুত্র ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় আমাদের সামনে খুলে দিয়েছেন অপার সম্ভাবনার এক নতুন দ্বার-তথ্যপ্রযুক্তির এক নতুন জগত। জাতি অত্যন্ত সৌভাগ্যবান যে, পেয়েছে সজীব ওয়াজেদ জয়ের মতো একজন তরুণ, দক্ষ ও মেধাবী নেতা, যিনি ডিজিটাল বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী যে ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিশন দিয়েছেন, সেখানে তার উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা ছিল ব্যাপক। সজীব ওয়াজেদ জয় তার দূরদৃষ্টি দিয়ে বুঝতে পেরেছিলেন, ভবিষ্যত বিশ্ব তথ্যপ্রযুক্তি দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হবে। সে জন্য নিজেকে তিনি আগামী দিনের বিশ্বের জন্য প্রস্তুত করেছেন। ICT বিভাগে নেতৃত্ব দান এবং দৃঢ়তার সঙ্গে তথ্যপ্রযুক্তি খাত নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। প্রযুক্তিতে বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বের কাতারে নিয়ে যেতে 5G চালুর প্রস্তুতিসহ ডিজিটাল অবকাঠামো ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণে নেতৃত্ব দিচ্ছেন তিনি। ফলে দ্রুত Digital প্রযুক্তি প্রসারে এগিয়ে থাকার দেশের তালিকায় উঠে এসেছে বাংলাদেশ। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence), বিগ ডাটা এনালাইসিস, ইন্টারনেট অব থিংস (IOT), ব্লক চেনের মতো প্রযুক্তি ব্যবহার করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে পা রাখবে বাংলাদেশ। উর্ধগতির মোবাইল ইন্টারনেট কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শিল্প ও সেবা খাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে এবং আসবে। গত কয়েক বছরে ডিজিটাল অর্থনীতিতে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জন করেছে। সচিবালয় থেকে গ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি। ফলে একদিকে যেমন সাধারণ মানুষ ভাল সার্ভিস পাচ্ছে, অপর দিকে বদলে যাচ্ছে ICT খাতের কর্মকাণ্ড। বিশ্বের ৬৭টি দেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিভিন্ন পণ্য ও সেবা রফতানি হচ্ছে। এখানে রফতানি আয় ১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে বহু আগে এবং ২০২৫ সাল নাগদ এ খাতের আয় ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। দেশে ইতোমধ্যে ২৮টি Software Technology Park স্থাপনের কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। ২০২৫ সাল নাগাদ ICT খাতে ২০ লাখ লোকের কর্মসংস্থান হবে আশা করা হচ্ছে। বর্তমানে দেশে সফটওয়্যার সেবার বাজার দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা। সকল দুর্যোগসহ বর্তমানে করোনাকালে ডিজিটাল প্লাটফর্মের কল্যাণে ব্যবসা-বাণিজ্য, চিকিৎসা, রিলিফসহ সাপ্লাই চেন ঠিক রাখা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী রূপকল্প বাস্তবায়নে তাঁরই সুযোগ্য উত্তরসূরি সজীব ওয়াজেদ জয় নিজের হাতে দেশের ICT খাতকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তার গতিশীল নেতৃত্ব, গাইডলাইন ও প্রত্যাক্ষ তত্ত্বাবধানে ICT খাতের অগ্রগতি দেশের সামনে সমৃদ্ধ আগামীর প্রতিশ্রুতি হিসেবে কাজ করছে। সম্ভাবনাময় আগামী বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, উন্নত চিন্তা ও প্রগতির ধারক বাহক, বাঙালীর হৃদয়ের স্পন্দন প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য সন্তান তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়-এর ৫০তম জন্মদিনে জানাই নিরন্তর শুভেচ্ছা। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ২৭ জুলাই ঘর আলোকিত করে জন্ম নিয়েছেন বাংলার গৌরব সজীব ওয়াজেদ জয়। সজীব ওয়াজেদ জয়ের শৈশব ও কৈশর কেটেছে ভারতে। ভারতের নৈনিতালের সেন্ট জোসেফ কলেজ থেকে লেখাপড়ার পর তিনি যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস থেকে Computer Science-এ স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। পরবর্তীতে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জনপ্রশাসনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। আনুষ্ঠানিক শিক্ষাজীবন শেষে একজন IT Professional হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালিতে ক্যারিয়ার গঠন করেন। হয়ে ওঠেন একজন সফল উদ্যোক্তা। পৃথিবীর বিখ্যাত প্রতিষ্ঠান থেকে অর্জিত শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং পেশাগত কাজের অভিজ্ঞতা, সহজাত মেধা ও নেতৃত্ব দিয়ে বাংলাদেশের ICT খাতকে নিয়ে গেছেন এক অনন্য উচ্চতায়। সারা বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়ন এক বিস্ময়। ডিজিটাল বিশ্বের পথে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়ার স্বীকৃতিস্বরূপ ICT for Development Award পেয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা। গত কয়েক বছরে ডিজিটাল অর্থনীতিতে অগ্রগতি অর্জন করে হুয়াওয়ের ‘Global Connectivity Index’-এ ২০১৯ এর Top Mover-এর তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ। ২০০৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন ছিল Digital Bangladesh গড়ার ঘোষণা। নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ কনসেপ্টের প্রস্তাব রাখেন আইটি বিশেষজ্ঞ সজীব ওয়াজেদ জয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার জন্য জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যেতে থাকে। ২০০৯ সালের ICT পলিসি প্রণয়নের ক্ষেত্রেও সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিশাল ভূমিকা রয়েছে। বর্তমানে ICT খাতের রোডম্যাপ, নতুন নতুন পলিসি প্রণয়ন, অবকাঠামো নির্মাণ- সবক্ষেত্রেই মেধার স্বাক্ষর রেখে তিনি দেশকে ICT ক্ষেত্রে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নেয়ার প্রধান কারিগর হিসেবে কাজ করছেন। তিনি শুধু ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টাই নন, স্বপ্ন বাস্তবায়নকারীও। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেরণায় তিনি প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টেকসই উন্নয়নের জন্য ICT খাতকে নেতৃত্ব দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সরকারের ডিজিটাল কর্মসূচীর আওতায় গত প্রায় ১২ বছরে গড়ে ওঠা তথ্যপ্রযুক্তি অবকাঠামো এখন আগের চেয়ে অনেক শক্তিশালী। প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনায় এবং তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় যোগ্য তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ উৎক্ষেপণ করেছে। দ্বিতীয় স্যটেলাইট নিয়েও প্রস্তুতি চলছে। আগামী বছর আমরা প্রত্যাশা করছি 5G প্রযুক্তির। দেশের মানুষকে আজ ভীষণভাবে স্পর্শ করেছে ডিজিটাল উন্নয়ন। ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার থেকে বিদ্যুত বিল পরিশোধ, জমির ই-পরচা মিউটেশন, ব্যাংকিং, পাসপোর্টের ফর্ম পূরণ, ভিসা আবেদন, পুলিশ ক্লিয়ারেন্স, ই-চালান, পেনশনসহ নানাবিধ সেবা, প্রায় ৬০০ সরকারী এবং জনসেবায় তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ছে। এ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে সরকারী ওয়েব পোর্টাল, জাতীয় তথ্য বাতায়ন যা বিশ্বের মধ্যে সর্ববৃহৎ ওয়েব পোর্টাল হিসেবে স্বীকৃত। দেশব্যাপী ই-মিউটেশন বাস্তবায়নের স্বীকৃতি স্বরূপ জাতিসংঘের মর্যাদাপূর্ণ ‘ইউনাইটেড ন্যাশনাল পাবলিক সার্ভিস এ্যাওয়ার্ড-২০২০’ পেয়েছে বাংলাদেশ। তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়কে ষষ্ঠ শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণীতে বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত ছিল বড় ধরনের টার্নিং পয়েন্ট। সজীব ওয়াজেদ জয়ের আরেকটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত হচ্ছে ‘৯৯৯’ সেবা চালু করা, যার সেবা পাচ্ছে কোটি কোটি মানুষ। করোনাকালে Internet ও E-Commerce-এর ব্যবহার ৫০% এর বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। স্বাস্থ্য সেবা থেকে শুরু করে ত্রাণসহ জরুরী খাদ্য সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে নতুন হেল্পলাইন ‘৩৩৩’তে। একজন সজীব ওয়াজেদ জয়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার কারণে করোনাভাইরাস মোকাবেলায়ও ই-কমার্সভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করে যাচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশে। এ ছাড়া ICT মন্ত্রণালয়, ইউ অ্যাপ, Contact Tracing App, ভলানটিয়ার ডক্টরসপুল, ডিজিটাল ক্লাসরুম ইত্যাদি বিষয়ে প্ল্যাটফর্ম চালু করেছে। দেশের ৮ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা হয়েছে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পর্যায়ক্রমে এ কর্মসূচীর আওতায় আসবে। ছোটবেলা থেকেই শিক্ষার্থীদের ICT অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে। আর এসব কার্যক্রমের রূপকার হচ্ছেন সজীব ওয়াজেদ জয়। ২০১০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিতৃভূমি রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে আসেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা হিসেবে কর্মরত ও তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ কোন বেতন গ্রহণ করেন না। তিনি বিবাহিত এবং এক কন্যা সন্তানের গর্বিত পিতা। বিনয়ী স্বপ্লভাষী ও বুদ্ধিদীপ্ত এই মানুষটি ভালবাসেন গিটার বাজাতে, ফটোগ্রাফি করতে এবং সবচেয়ে বেশি পছন্দ করেন মায়ের হাতের রান্না খেতে। সজীব ওয়াজেদ জয় তারুণ্যের মেধা ও শক্তিকে ইতিবাচক কাজে লাগানোর জন্য অনবদ্য ও প্রেরণাদানকারী। তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবসময় যুদ্ধ করতে তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান। প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে তিনি সবসময় জনগণের টাকার রিটার্ন কি হবে সেটা মাথায় রাখেন। সজীব ওয়াজেদ জয়ের গুরুত্বপূর্ণ দুটি ভবিষ্যত পরিকল্পনা হচ্ছে ক্যাশলেস (Cashless) সমাজ গঠন। অর্থাৎ, সকল লেনদেন নগদের পরিবর্তে ডিজিটাল মাধ্যমে করা এবং সব সরকারী সেবা অনলাইনে নিয়ে আসা। তিনি বিশ্বাস করেন এই দুটি পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে লেনদেনে স্বচ্ছতা বাড়বে এবং জনগণ সেবার ক্ষেত্রে শতভাগ উপকার পাবে। ফলে একদিকে সরকারের আয় বাড়বে এবং দুর্নীতিও হ্রাস পাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুযোগ্য সন্তান তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের এই জন্ম শুভক্ষণে আমরা সকলে প্রত্যাশা করি, তিনি তার মেধা, দূরদৃষ্টি এবং সঠিক কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে দেশের ICT খাতকে নিয়ে যাবেন এক অনন্য উচ্চতায়। তিনি নতুন প্রজন্মের পথিকৃৎ, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার, তিনি ভিশনারি লিডার, তিনি সমৃদ্ধ আগামীর প্রতিশ্রুতি। লেখক : সাবেক তথ্য এবং সংস্কৃতি সচিব
×