ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার

প্রকাশিত: ২০:৪৬, ২০ মে ২০২০

প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার

করোনার দুঃসময়েও যথানিয়মে ঈদ আসছে। ঈদে এবার ভিন্ন আবহ করোনার কারণে। তবু উৎসব উৎসবই, মানুষের মিলনোৎসব। দেশের প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়টিকে সবসময়েই বিশেষ দৃষ্টিতে দেখে থাকেন। দেশের মানুষ কেমন আছে, তাদের সঙ্কট কোথায়, প্রয়োজন কী- এসব জননীর মতোই উপলব্ধি করেন তিনি। তাই উৎসব মানেই প্রধানমন্ত্রীর ‘ঈদ উপহার’। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে দেশের ৫০ লাখ পরিবারকে দেয়া হচ্ছে আর্থিক সহায়তা। কোন দুর্যোগ মহামারী বা অর্থনৈতিক মহামন্দায় উন্নত দেশগুলোতে আর্থিক সহায়তার আওতায় নাগরিকদের ব্যাংক হিসাবে নগদ টাকা প্রদানের রেওয়াজ একটি নিয়মিত ব্যাপার। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর আওতায় বয়স্ক, বিধবা, স্বামী পরিত্যক্তা কিংবা মুক্তিযোদ্ধাদের নগদ অর্থ প্রদানের রেওয়াজ গত দুই যুগ ধরে চালু হলেও এই প্রথম বাংলাদেশ সরকার একটি বৈশ্বিক দুর্যোগের সময় দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থিক সঙ্কট কাটাতে তাদের নগদ টাকা প্রদান করার কাজ শুরু করল। ফলে দরিদ্র মানুষের মুখে হাসি ফুটেছে- তারা অনুধাবনে সক্ষম হচ্ছে দেশের সরকার গরিবের বন্ধু। সরাসরি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে এ অর্থ প্রদান করা হচ্ছে বলে এখানে অনিয়ম-দুর্নীতির সুযোগ নেই। নগদ অর্থ প্রদানের তালিকায় রিক্সাচালক, ভ্যানচালক, দিনমজুর, নির্মাণ শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক, দোকানের কর্মচারী, ব্যক্তি উদ্যোগে পরিচালিত বিভিন্ন ব্যবসায় কর্মরত শ্রমিক, পোল্ট্রি খামারের শ্রমিক, বাস-ট্রাকের পরিবহন শ্রমিক ও হকারসহ নানা পেশার মানুষকে রাখা হয়েছে। সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর তালিকার বাইরে এই দুই কোটি মানুষকে নগদ অর্থ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচীর আওতায় ইতোমধ্যে দেশের প্রায় এক কোটি মানুষ নগদ অর্থ সহায়তা পাচ্ছে। প্রতি মাসে তাদের ব্যাংক হিসাবে এই ভাতা পৌঁছে দিচ্ছে সামাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বর্তমান জনকল্যাণমুখী সরকার একেবারে প্রথম থেকেই তালিকা করে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছে নতুন তালিকা প্রণয়ন করে জরুরী ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থা। করোনাজনিত সঙ্কটে একের পর এক জনকল্যাণমুখী পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার, যার সর্বসাম্প্রতিক দৃষ্টান্ত নগদ অর্থ প্রদান। কর্মহীন দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মানুষের মোবাইল ফোনে যখন নগদ অর্থের বার্তা আসে, সেটি তার জন্য যুগপৎ বিস্ময় ও আনন্দের বিষয় হয়ে ওঠে। ম্যাসেজ টোন শুনে ম্যাসেজটি খুলে অসহায় মানুষ দেখছেন দুই হাজার পাঁচশত টাকা প্রাপ্তির বার্তা এসেছে, তাতে লেখা রয়েছে- ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার। এমন উপহার নিঃসন্দেহে মানবতার দৃষ্টান্ত। সরকারপ্রধান হিসেবে দেশের মানুষের কাছে এক ধরনের দায় পূরণ। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দানের মাধ্যমে বিশ্বে প্রশংসিত আমাদের প্রধানমন্ত্রী। মাদার অব হিউম্যানিটি বা মানবতার জননী হিসেবে বিশ্বপরিচিতি পেয়েছেন। করোনা সঙ্কটের সময়ও তিনি দুস্থ অসহায় মানুষের কথা ভেবে যে সহায়তার উদ্যোগ নেবেন সেটি প্রত্যাশিত। করোনার কারণে প্রবাসী শ্রমিকদের আয়ও কমে গেছে। অনেকে চাকরি হারিয়েছেন। অনেকে দেশেও ফিরে আসছেন। প্রবাসীদের কল্যাণে আরও ৫০০ কোটি টাকা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগে ৪০০ কোটি টাকার তহবিল ছিল। এতে আরও ৫০০ কোটি টাকা যোগ করা হয়েছে। এবার রোজায় মসজিদ-মাদ্রাসা বন্ধ থাকায় ইমাম-মোয়াজ্জিনরা অসুবিধায় আছেন। তাই ঈদের আগে তাদেরও সহায়তা পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সব মিলিয়ে ঈদের আগে অভাবী মানুষের কাছে ঈদ উপহার পৌঁছে দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী কোটি মানুষের দোয়া পাবেনÑ এতে কোন সন্দেহ নেই।
×