ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ট্রাম্পের অভিশংসন বিষয়ে অভিযোগের শুনানি শুরু

প্রকাশিত: ০৯:১৮, ২২ জানুয়ারি ২০২০

 ট্রাম্পের অভিশংসন বিষয়ে অভিযোগের শুনানি শুরু

মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রক্রিয়া সংক্রান্ত অভিযোগের শুনানি মঙ্গলবার শুরু হয়েছে। এদিকে সিএনএনের এক জরিপে দেখা গেছে, ৫১ ভাগ মার্কিনী মনে করে সিনেটের উচিত ট্রাম্পকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেয়া। সিএনএন ও রয়টার্স। এর আগে মার্কিন পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন বিল পাস করে। যেখানে ২২৮-১৯৩ ভোটে বিলটি পাস হওয়ার পর মঙ্গলবার এটি সিনেটে ওঠে। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ট্রাম্প হচ্ছেন তৃতীয় প্রেসিডেন্ট, যাকে অভিশংসন নিয়ে সিনেটে বিচারের মুখোমুখি হতে হলো। তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও কংগ্রেসের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে সোমবার এক বক্তব্যে আবারও পুরো বিষয়টি অসাংবিধানিক বলে দাবি করেছেন ট্রাম্প। এদিকে সিনেটে ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান পার্টি সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ায় ট্রাম্পের বিপাকে পড়ার আশঙ্কা খুবই কম বলে মনে করা হচ্ছে। ট্রাম্পের অভিযোগ আনা হয়েছে যে প্রথমত, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তাকে ব্যবহার করে নবেম্বরে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জেতার চেষ্টা করেছেন। তিনি এক্ষেত্রে ইউক্রেন সরকারের সহায়তা চেয়েছেন। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি যেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দল থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী জো বাইডেনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত করেন এ জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিলেন। জেলেনস্কি যাতে এই তদন্তে বাধ্য হন তাই তাকে দেয়া যুক্তরাষ্ট্রে বহু কোটি ডলারের সামরিক সহায়তা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। একইসঙ্গে তিনি এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর সস্তা দর কষাকষি করতে জেলেনস্কিকে হোয়াইট হাউসে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। দ্বিতীয়ত, অভিশংসন প্রস্তাবের শুনানিতে গতবছর প্রথমে তিনি হোয়াইট হাউসের স্টাফদের সাক্ষ্য দেয়ার ক্ষেত্রে অস্বীকৃতি জানান। ডেমোক্র্যাটদের অভিযোগ, এর মধ্য দিয়ে সিনেটে বিচার প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করেছেন ট্রাম্প। তবে কোন অন্যায় করার কথা প্রত্যাখ্যান করেছেন ট্রাম্প। তিনি ও তার আইনী টিমের সদস্যরা বলছেন, তার বিরুদ্ধে যে ঠুনকো অভিযোগ আনা হয়েছে তা সংবিধানের মারাত্মক লঙ্ঘন। এক্ষেত্রে তিনি ২০১৬ সালের নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপের বিষয়ে স্পেশাল কাউন্সেল রবার্ট মুয়েলারের তদন্তে বাধা সৃষ্টি করেছিলেন বলে যে অভিযোগ আছে, তার কোন ভূমিকা নেই। ২০১৯ সালের আগস্টে এক হোয়াইট হাউস স্টাফ ট্র্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রথমে অভিযোগ আনেন। অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিনিধি পরিষদে এ নিয়ে তদন্ত হয়। শুনানি হয়। ট্রাম্পকে অভিশংসন করার পক্ষে প্রস্তাব পাস হয় প্রতিনিধি পরিষদে। এই মাসে ওই প্রস্তাব সিনেটে পাঠানো হয়েছে। যদি সেখানে ভোটে হেরে যান ট্রাম্প, তাহলে নিয়ম অনুযায়ী তার ক্ষমতার মেয়াদ শেষ হবে। সেক্ষেত্রে আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না। তবে তেমনটি হওয়ার কথা নয়। কারণ সিনেটে তার দল সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকায় তিনি রক্ষা পাবেন বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এর আগে অভিশংসনের প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছিল আর দু’জন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে। ১৮৬৮ সালে সাবেক প্রেসিডেন্ট এ্যানড্রুু জনসন একং ১৯৯৯ সালে বিল ক্লিনটন এই অভিযোগের মুখোমুখি হন। তবে দু’জনেই রক্ষা পেয়েছেন। এবার কিভাবে অভিশংসনের বিচার করা হবে তা নির্ধারণ করবেন দু’জন ব্যক্তি। তারা হলেন সিনেটে রিপাবলিকান নেতা মিশ ম্যাকলেন এবং ডেমোক্র্যাট নেতা চাক শুমার। সিনেটে আসন আছে মোট ১০০টি। এর মধ্যে দুই তৃতীয়াংশ অর্থাৎ ৬৭ জন সিনেটর যে পক্ষে অবস্থান নেবেন অভিশংসন প্রস্তাবের ভবিষ্যত তাই হবে। যদি তারা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন তবে ক্ষমতার ইতি ঘটবে ট্রাম্পের।
×