ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নিউজিল্যান্ডকে উড়িয়ে দিল অস্ট্রেলিয়া

প্রকাশিত: ০৯:৪৩, ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯

নিউজিল্যান্ডকে উড়িয়ে দিল অস্ট্রেলিয়া

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক মাইকেল ভন বলেছেন, ভারতকে যদি কোন দল চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে তবে সেটি অস্ট্রেলিয়া। বাস্তবেও তেমনটাই দেখা যাচ্ছে। বিশ্বকাপের পর ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া এ্যাশেজ দিয়ে শুরু হয় নতুন প্রবর্তিত আইসিসি ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। যেখানে তিনটি সিরিজে ৭ ম্যাচের সবকটি জিতে টেবিলের শীর্ষে বিরাট কোহলির দল। সমান তিন সিরিজে ৯ ম্যাচের ৬টিতে জিতে দ্বিতীয় স্থানে অস্ট্রেলিয়া। ঘরের মাটিতে ঐতিহাসিক বক্সিং ডে টেস্টে ২৪৭ রানের বিশাল জয়ের পথে নিউজিল্যান্ডকে উড়িয়ে দিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিশ্চিত করেছে টিম পেইনের দল। ৪৮৮ রানের অসম্ভব লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে রবিবার চতুর্থদিনে ২৪০ রানে অলআউট হয়ে গেছে সফরকারী কিউইরা। প্রথম ইনিংসে কেন উইলিয়ামসনের দল গুটিয়ে গিয়েছিল মাত্র ১৪৮ রানে। অস্ট্রেলিয়া ৪৬৭/১০ ও ১৬৮/৫ (ডিক্লেঃ)। ১১৪ রানের দারুণ ইনিংসটির জন্য ম্যাচসেরা হয়েছেন ট্রাভিস হেড। পার্থের প্রথম টেস্টেও অসিরা জিতেছিল ২৯৬ রানের বড় ব্যবধানে। শুক্রবার সিডনিতে শুরু আনুষ্ঠানিকতার তৃতীয় ও শেষ টেস্ট। ৩২ বছর আগে ১৯৮৭ সালে সর্বশেষ বক্সিং ডে’ টেস্টে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয়েছিল কিউইরা। মেলবোর্নের এই ম্যাচ ঘিরে তাই ছিল ব্যাপক আগ্রহ। নিউজিল্যান্ড থেকে খেলা দেখতে আসা হাজারও দর্শকের জন্য বিশেষ ফ্লাইটের ব্যবস্থা করেছিল অস্ট্রেলিয়া সরকার। কিন্তু সাড়ে তিনদিনেই বড় হারে তাদের হতাশ করে কেন উইলিয়ামসনের দল। ৪ উইকেটে ১৩৭ রান নিয়ে রবিবার চতুর্থদিন শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। দিনের দশম ওভারে ট্রাভিস হেড ২৮ রান করে আউট হওয়ার পরই ৫ উইকেটে ১৬৮ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করে স্বাগতিকরা। ৩০ রানে অপরাজিত থেকে যান ম্যাথু ওয়েড। প্রথম ইনিংসের ৩১৯ রান মিলে জয়ের জন্য ব্ল্যাক-ক্যাপসদের সামনে দাঁড়ায় বিশাল লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যে দ্বিতীয় ইনিংসেও সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে পারেননি উইলিয়ামসন (০)। ৩২ রানে উদ্বোধনী জুটি বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর দলের সবচেয়ে নির্ভরশীল ব্যাটসম্যান এলবিডব্লিউ হন কোন রান না করেই। একই ওভারে বোল্ড হন আরেক ভরসা রস টেইলরও (২)। তিনজনই পরিণত হন প্যাটিনসনের শিকারে। চতুর্থ ও পঞ্চম উইকেটে দুটি ফিফটি জুটিতে ব্লান্ডেলকে সঙ্গ দেন যথাক্রমে হেনরি নিকোলস ও কিপার-ব্যাটসম্যান বিজে ওয়াটলিং। তবে তা হারের ব্যবধান কমানো ছাড়া ম্যাচের ফলে কোন প্রভাব ফেলেনি। দু’জনই হন স্পিনার নাথান লেয়নের শিকার। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ব্লান্ডেল আউট হন অনিয়মিত বোলার মার্নাস লাবুশােেনর স্পিনে। এর আগে তুলে নেন তিন টেস্ট ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ২১০ বলে ১৫টি চারে ১২১ রান করে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফেরেন এ ওপেনার। ৩৫ রানে ৩ উইকেট নিয়ে টপঅর্ডারে ধস নামান জেমস প্যাটিনসন। তবে মিডলঅর্ডারে কাউকে দাঁড়াতে না দেয়া লেয়ন ছিলেন দিনের সেরা বোলার। অভিজ্ঞ অফস্পিনার নেন ৮১ রানে ৪ উইকেট। অস্ট্রেলিয়া বছর শুরু করেছিল শ্রীলঙ্কাকে ২-০তে ‘হোয়াটওয়াশ’ করে। বিশ্বকাপের পর ইংল্যান্ডের মাটিতে তারা সিরিজ ড্র করে ২-২এ। শুরু হয় টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের মিশন। এরপর পাকিস্তানকে ২-০ ব্যবধানে ‘হোয়াইটওয়াশের’ পর এবার নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এক ম্যাচ হাতে রেখেই ২-০তে সিরিজ নিশ্চিত করল অস্ট্রেলিয়া। অর্থাৎ এ নিয়ে ঘরের মাটিতে টানা চতুর্থ টেস্ট ম্যাচ জিতল অসিরা। স্কোর ॥ অস্ট্রেলিয়া প্রথম ইনিংস- ৪৬৭/১০ (১৫৫.১ ওভার; ওয়ার্নার ৪১, বার্নস ০, লাবুশানে ৬৩, স্মিথ ৮৫, ওয়েড ৩৮, হেড ১১৪, পেইন ৭৯, প্যাটিনসন ১৪; বোল্ট ১/৯১, সাউদি ৩/১০২, ডি গ্র্যান্ডহোম ২/৬৮, ওয়েগনার ৪/৮৩) ও দ্বিতীয় ইনিংস- ১৬৮/৫ ডিক্লেঃ (৫৪.২ ওভার; ওয়ার্নার ৩৮, বার্নস ৩৫, লাবুশানে ১৯, স্মিথ ৭, ওয়েড ৩০*, হেড ২৮; বোল্ট ০/৩০, ওয়েগনার ৩/৫০, স্যান্টনার ১/২২)। নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস- ১৪৮/১০ (৫৪.৫ ওভার; লাথাম ৫০, ব্লানডেল ১৫, উইলিয়ামসন ৯, টেইলর ৪, নিকোলস ০, ওয়াটলিং ১১, স্যান্টনার ৩, সাউদি ১০, ওয়েগনার ১৮*, বোল্ট ৮; স্টার্ক ২/৩০, কামিন্স ৫/২৮, প্যাটিনসন ৩/৩৪) ও দ্বিতীয় ইনিংস- ২৪০/১০ (৭১ ওভার; লাথাম ৮, ব্লান্ডেল ১২১, উইলিয়ামসন ০, টেইলর ২, নিকোলস ৩৩, ওয়াটলিং ২২, ডি গ্র্যান্ডহোম ৯, স্যান্টনার ২৭, সাউদি ২, ওয়েগনার ৬*, বোল্ট আহত অবসর; প্যাটিনসন ৩/৩৫, লেয়ন ৪/৮১, লাবুশানে ১/১১)। ফল ॥ অস্ট্রেলিয়া ২৪৭ রানে জয়ী। ম্যাচসেরা ॥ ট্রাভিস হেড (অস্ট্রেলিয়া)। সিরিজ ॥ তিন টেস্ট অস্ট্রেলিয়া ২-০তে এগিয়ে।
×