ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মেসির ৭০০তম ম্যাচে নকআউট রাউন্ডে বার্সিলোনা

প্রকাশিত: ০৯:৩৫, ২৯ নভেম্বর ২০১৯

 মেসির ৭০০তম ম্যাচে নকআউট রাউন্ডে বার্সিলোনা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ মহানায়ক লিওনেল মেসি আরও একটি গৌরবময় মাইলফলক স্পর্শ করেছেন। আর্জেন্টাইন অধিনায়ক ক্লাব দল বার্সিলোনার হয়ে ক্যারিয়ারে ‘৭০০’ ম্যাচ খেলার অনন্য রেকর্ড গড়েছেন। বুধবার রাতে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ফুটবলে ‘এফ’ গ্রুপের ম্যাচে জার্মান ক্লাব বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের বিরুদ্ধে মাঠে নেমে এ রেকর্ড গড়েন বর্তমান ফিফা বর্ষসেরা তারকা। বার্সার মাঠ ন্যুক্যাম্পে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে স্বাগতিকরা জিতেছে ৩-১ গোলে। মাইলফলকের ম্যাচে এক গোল করাসহ দৃষ্টিনন্দন পারফর্মেন্স প্রদর্শন করেন মেসি। শুধু তাই নয়, দলের বাকি দুই গোলেও রাখেন অবদান। ম্যাচটি জিতে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের নকআউট রাউন্ড অর্থাৎ শেষ ষোলোতে খেলা নিশ্চিত করেছে কাতালানরা। এই হারে নকআউট রাউন্ডে খেলার অপেক্ষা বেড়েছে বরুশিয়ার। এখন তাদের গ্রুপের শেষ ম্যাচের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে। আরেক ম্যাচে চেক প্রজাতন্ত্রের ক্লাব স্লাভিয়া প্রাগেকে ৩-১ গোলে হারিয়ে শেষ ষোলোতে খেলার স্বপ্ন বাঁচিয়ে রেখেছে ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টার মিলান। বার্সিলোনার হয়ে ৭০০ ম্যাচে ৬১৩ গোল করার পাশাপাশি ২৩৭টি গোলে সতীর্থদের সহযোগিতা করেছেন মেসি। ম্যাচটিতে গোল করে আরও একটি অনন্য রেকর্ড গড়েছেন এমএলটেন। রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক দুই তারকা রাউল গঞ্জালেস ও ক্রিস্টিয়ানো রোনাল্ডোকে ছাড়িয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে সবচেয়ে বেশি প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে গোল করার নতুন রেকর্ড এখন মেসির। ইউরোপ সেরার আসরে এ নিয়ে সর্বোচ্চ ৩৪টি ভিন্ন দলের বিরুদ্ধে গোল করেছেন আর্জেন্টাইন সুপারস্টর। ম্যাচে বার্সিলোনার জন্য একমাত্র দুঃশ্চিন্তার বিষয় উসমান ডেম্বেলের ইনজুরি। প্রথমার্ধে আরও একবার পেশির ইনজুরির কারণে মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন ফরাসী এই ফুটবলার। ম্যাচের ২৬ মিনিটে তার জায়গায় খেলতে নামেন স্বদেশী এ্যান্টোনিও গ্রিজম্যান। ডিসেম্বরের শেষে মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোতে তার খেলা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে বার্সার জন্য সুখবর, গত ২১ সেপ্টেম্বরের পর প্রথমবারের মতো মূল একাদশে খেলতে নেমেছিলেন ক্রোয়েশিয়ান মিডফিল্ডার ইভান রাকিটিচ। একের পর এক আক্রমণ শানাতে থাকা বার্সা ২৯ মিনিটে সুয়ারেজের গোলে এগিয়ে যায়। ৩৩ মিনিটে সুয়ারেজের সহায়তায় ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মেসি। ৬৭ মিনিটে আবারও গোল পায় বার্সিলোনা। প্রথম গোলের মতো এই গোলেরও যোগানদাতা মেসি। গোলটি করেন গ্রিজম্যান। ম্যাচের ৭৭ মিনিটে বদলি খেলোয়াড় জাডোন মালিক সানচো বরুশিয়া ডর্টমুন্ডের হয়ে সান্ত¡নাসূচক এক গোল পরিশোধ করেন। ম্যাচ শেষে বার্সা কোচ আর্নেস্টো ভালভার্ডে মেসির প্রশংসা করে বলেন, সে অসাধারণ খেলোয়াড়। পরিসংখ্যানই বলে দেয় সে কি মানের খেলোয়াড়। তার পারফর্মেন্সেই বার্সিলোনা এতদূর এসেছে, এতে কোন সন্দেহ নেই। কাতালান বস আরও বলেন, এবারের মৌসুমে আমার মতে সবচেয়ে কঠিন গ্রুপে আমরা পড়েছি। যদিও এক ম্যাচ হাতে রেখেই আমরা গ্রুপের শীর্ষ দল হিসেবে পরের রাউন্ডে গেছি। এটা খেলোয়াড়দের জন্য অনেক বড় একটি পাওয়া। গ্রুপের আরেক ম্যাচে লটারো মার্টিনেজের জোড়া ও রোমেলু লুকাকুর এক গোলে ইন্টার ৩-১ গোলে হারিয়েছে স্লাভিয়া প্রাগেকে। লুকাকুর পাস থেকে ম্যাচের ১৯ মিনিটে ইন্টারের হয়ে গোলের খাতা খুলেন মার্টিনেজ। এটি ইন্টারের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লীগে মার্টিনেজের টানা চতুর্থ গোল। স্লভিয়ার হয়ে ৩৭ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোলটি পরিশোধ করে দেন টমাস সউচেক। স্টেফান ডি ভিরিজ বক্সেই স্ট্রাইকার পিটার ওরায়িনকাকে ফেলে দেয়ায় পেনাল্টির নির্দেশ দেন রেফারি। প্রথম দফায় অবশ্য সেটিকে আমলে নেননি পোলিশ রেফারি সায়মন মার্চিনিয়াক। কিন্তু ভিডিও রেফারির নির্দেশনায় পেনাল্টি পায় চেক ক্লাবটি। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার মাত্র নয় মিনিট আগে ইন্টারের টিকে থাকার গোল করেন লুকাকু। আর ৮৮ মিনিটে মার্টিনেজের আরেক গোলে স্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়ে ইতালিয়ান ক্লাবটি। ম্যাচ শেষে ইন্টার কোচ এ্যান্টোনিও কন্টে বলেন, এই জয়টি আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এখানে জয় ছাড়া বিকল্প কোন পথ ছিল না। আমরা নিজেদের প্রত্যাশার কথা জানতাম। আক্রমণভাগের দুই তারকা এই ফলাফল এনে দিয়েছে। তাদের এই দক্ষতায় আমি খুবই খুশি। ‘জি’ গ্রুপের ম্যাচে দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে ম্যাচের ৯০ ও ৯৬ মিনিটে দুই গোল করে পর্তুগীজ ক্লাব বেনফিকার সঙ্গে ২-২ গোলে ড্র করেছে জার্মান ক্লাব লাইপজিগ। সুইডিশ মিডফিল্ডার পিটার ফর্সবার্গের জোড়া গোলে নকআউট রাউন্ডে খেলা নিশ্চিত হয়েছে তাদের।
×