ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

১৪ নবেম্বরের পর বাস্তবায়ন ॥ কাদের

সড়ক পরিবহন আইন কার্যকরের সময় আরও এক সপ্তাহ বাড়ল

প্রকাশিত: ১০:৩৩, ৮ নভেম্বর ২০১৯

  সড়ক পরিবহন আইন কার্যকরের সময় আরও এক সপ্তাহ বাড়ল

স্টাফ রিপোর্টার ॥ গত এক নবেম্বর থেকে কার্যকর হওয়া সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ বাস্তবায়নের সময় আরেক দফা বাড়ল। নতুন আইন কার্যকর করার সময় আরও এক সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে। আগামী ১৪ নবেম্বরের আগে নতুন সড়ক আইনে কোন মামলা করা হবে না। বৃহস্পতিবার বনানীতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) কার্যালয়ে সড়ক পরিবহনের নতুন আইন কার্যকর নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভা শেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এর আগে দুই নবেম্বর গাজীপুরে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, এক সপ্তাহ প্রচারের সময় দেয়া হয়েছে। এরপর থেকে আইন প্রয়োগ করা হবে। তার এই বক্তব্যের পর পরই বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি বিআরটিএ নবনিযুক্ত চেয়ারম্যান, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারসহ পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা আইন কার্যকর করা নিয়ে একেক সময় একেক ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন। অন্যদিকে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকেও আইনের কিছু ধারা সংশোধনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে আইন কার্যকর কবে থেকে এ নিয়ে রীতিমতো ধোয়াশা সৃষ্টি হয়। যদিও সর্বশেষ মন্ত্রীর কথা অনুযায়ী তা আবারও পরিষ্কার হলো। অর্থাৎ আইন কার্যকরের ১৫ দিন পর থেকে তা কঠোরভাবে প্রয়োগ হবে। বৃহস্পতিবার বারের মতবিনিময় অনুষ্ঠানে সড়কমন্ত্রী বলেন, ‘এই আইন প্রয়োগের শুরুতে এক সপ্তাহ সময় বাড়ানো হয়েছিল সচেতনতা সৃষ্টির জন্য। এবার আরও এক সপ্তাহ সময় একই কারণে বাড়ানো হলো। এরপর থেকে কঠোরভাবে আইন বাস্তবায়নে কাজ করা হবে।’ ওবায়দুল কাদের বলেন, মূলত কঠোর আইন প্রয়োগের আগে আরও সময় দেয়া প্রয়োজন। তাই তাদের সচেতনতা বাড়াতে আরও এক সপ্তাহ সময় বাড়ানো হলো। এরপর থেকে আইনটি কঠোরভাবে প্রয়োগ করা হবে। এছাড়া এ আইনের বিধি প্রণয়নের কাজও শেষ পর্যায়ে রয়েছে। সড়ক আইন প্রয়োগে বিলম্বের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, বেটার লেট দ্যান নেভার আইনটি এখন প্রায়োগিক পর্যায়ে চলে এসেছে। সকল সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে সংযুক্ত (এ্যালাইনড) করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও তার প্রত্যাশা জানিয়েছেন। এখন আমরা প্রয়োগে যাওয়ার পর্যায়ে রয়েছি। আইনের বিধি প্রণয়নের কাজ শেষ পর্যায়ে। সড়ক আইন প্রয়োগে সবকিছু নিয়ে আট ঘাঁট বেঁধে নামতে হবে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, নগরে সড়কে, ফুটপাতে, পার্কিংয়ে শৃঙ্খলা আনতে দেশের দুটি সিটি কর্পোরেশন কাজ শুরু করলেও ডেঙ্গুর প্রকোপের কারণে তাতে কিছুটা ভাটা পড়েছিল। তারপরে আমরা কাজ এগিয়ে নিয়েছি তা বাস্তবায়নের পথে। এরইমধ্যে যেসব ড্রাইভারের লাইসেন্স নেই তারা লাইসেন্স করার জন্য ভিড় করছে। বিআরটিএ এর চেয়ারম্যানকে কোন অপকর্মের ছাড় না দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, বিআরটিএ’র কর্মকর্তারা যদি দুর্নীতি করে, তাহলে তাকে ছাড় না দিয়ে বাদ দিতে হবে। এই প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতি মুক্ত করতে যা করার দরকার তাই করা হবে। বিআরটিএ ভেতরেও দালাল আছে তা না থাকলে বাইরের দালাল থাকে কীভাবে, তাদেরও সরিয়ে দিতে হবে। সর্ষের মধ্যে ভূত রাখা যাবে না। তাহলে কাজ ভাল হবে না। মানুষ সেবা পাবে না। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, অন্য দল নিয়ে এখন ভাবছি না। আওয়ামী লীগে যারা অনুপ্রবেশকারী, তাদের নিয়ে আমরা বেশি ব্যস্ত। দেশে যেসব রাষ্ট্রদূত আছেন, বিকেলে তাদের সঙ্গে কথা হবে। বিএনপি কথায় কথায় বিদেশীদের কাছে নালিশ করে, অভিযোগ করে, কী অভিযোগ করেছে, সে কথা আমাদের শুনতে বলে। এর আগে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ বাস্তবায়ন এবং জনসচেতনতা তৈরিতে বিআরটিএ’র বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন ওবায়দুল কাদের। গতবছর ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় শহীদ রমিজউদ্দিন কলেজের দুই শিক্ষার্থী বাস চাপায় প্রাণ হারানোর পর শিক্ষার্থীদের নজিরবিহীন আন্দোলনের পর শাস্তির বিধান কঠোর করে নতুন সড়ক পরিবহন আইন প্রণয়ন হয়, যা ১ নবেম্বর থেকে কার্যকর করার কথা জানিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হলেও জনসচেতনতা ও বিধি প্রয়োজনের জন্য সময় নেয়া হচ্ছে। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিআরটিএ ও বিআরটিসি নিয়ে প্রায়শই আমি দুশ্চিন্তায় থাকি। প্রায়ই এই দুটি প্রতিষ্ঠান খারাপ খবরের শিরোনাম হয়। তিনি বলেন, বিআরটিএ ‘অপকর্মকারী’ কর্মকর্তাদের এখানে ওখানে বদলি করেও শোধরানো যায় না; চুরি-চামারি, দুর্নীতি তাদের রন্ধ্রে রন্ধ্রে। এদের বিষয়ে কঠোর হতে হবে, এদের বের করে দিতে হবে। নানা জায়গায় কাজ করে অপকের্মের বিষয়ে পাকা হয়ে গেছে অনেক কর্মকর্তা, তাদের বাদ দিতে হবে। এই ছিঁচকে চোর বদলি করেও পরিবর্তন হয় না।
×