ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

মোস্তাফা জব্বার

আউটসোর্সিংয়ে দ্বিতীয় বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০৮:৫১, ২৪ জুন ২০১৯

আউটসোর্সিংয়ে দ্বিতীয় বাংলাদেশ

কারও কারও কাছে খবরটি অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে। মনে করতে পারেন যে কোন অখ্যাত অনিবন্ধিত একটি গণমাধ্যম চমক সৃষ্টির জন্য খবর প্রকাশ করেছে যে বিশ্বে আউটসোর্সিএ দ্বিতীয় অস্থানে বাংলাদেশ। মূলত ডিজিটাল প্রযুক্তির বিকাশেই দ্বিতীয় অস্থানে বাংলাদেশ। পাশের দেশ ভারত এতে প্রথম এবং খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের পেছনে তৃতীয় স্থানে অবস্থান করছে। চতুর্থ স্থানে পাকিস্তান এবং তারপরে ফিলিপিন্স, যুক্তরাজ্য, ইউক্রেন, কানাডা, রোমানিয়া, মিসর, জার্মানি, রাশিয়া ইত্যাদি। সফটওয়্যার উন্নয়নের ক্ষেত্রে ভারত সবার ওপরে এবং তাদের সফলতা ধরাছোঁয়ার বাইরে। ভারত সৃজনশীলতা ও মাল্টিমিডিয়াতেও সবার ওপরে। তবে ভারতের পরেই আমরা। ভারতের আগে থাকা নিয়ে আমাদের মোটেও উদ্বিগ্ন হওয়ার নয়। ওদের আউটসোর্সিংয়ের সূচনা সেই ৮৬ সালে। ২০০০ সালে দুনিয়া যখন ওয়াই টু কে নিয়ে উদ্বিগ্ন তখন ভারত দাপটের সঙ্গে আউটসোর্সিংয়ের কাজ করেছে। ভারতের দেওয়াং মেহতাকে এনে ’৯৭ সালে আমাদের সফটওয়্যারের সবক নিতে হয়েছে। জনসংখ্যা এবং প্রযুক্তি শিক্ষার কথা না হয় উল্লেখই করলাম না। সার্বিক অগ্রগতিতে বাংলাদেশের কাছাকাছি আমেরিকা ও পাকিস্তান। তবে বিক্রয় ও সাপোর্ট এ বাংলাদেশ বিশ্বসেরা। লেখা ও অনুবাদে আমেরিকা বিশ্বসেরা। ফিলিপিন্স সেরা করণিক কাজ ও ডাটা এ্যান্ট্রিতে। পেশাগত সেবায় যুক্তরাজ্য ভাল অবস্থানে। আমি নিজে এমন একটি অবস্থান দেখে মুগ্ধ হয়ে গেছি। কোথাকার কোন তলাহীন ঝুড়ির দেশ, লাঙ্গল জোয়াল ছেড়ে কম্পিউটারের চর্চা শুরু করল সেদিন আর সেই দেশটাই কিনা দ্বিতীয় শীর্ষ স্থান দখল করতে পারল। প্রতিবেদনটারও বিশেষত্ব আছে। এটি টম-ডিক-হ্যারির রিপোর্ট নয়, বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের, যারা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কথা বলে। এই প্রতিবেদনের আরও বড় চমকটি হলো আমেরিকার পতন। সারা বিশ্ব এক সময়ে তথ্যপ্রযুক্তি মানেই আমেরিকার কথা ভাবত। সেই আমেরিকা তৃতীয় স্থানে নেমে আসবে সেটি ধারণার বাইরে। এই নিবন্ধটি লেখার জন্য ধন্যবাদটা অবশ্যই ছোট ভাই মমলুক সাব্বিরকে। সে-ই আমাকে হুয়াটসএ্যাপে পাঠিয়েছিল। নিবন্ধটির আরও একটি আকর্ষণীয় দিক হলোÑ ডিজিটাল প্রযুক্তির কেন্দ্রটি ইউরোপ-আমেরিকা থেকে এশিয়ায় চলে এসেছে। ডিজিটাল প্রযুক্তির শতকরা ৬০ ভাগ যেখানে এশিয়ায় ইউরোপ সেখানে ২০ ভাগের কাছাকাছি আর উত্তর আমেরিকা ১৫ ভাগের নিচে। আফ্রিকা, দক্ষিণ আমেরিকা বা ওসেনিয়ার তো অস্তিত্বই নেই। সবচেয়ে বিস্ময়ের বিষয় হলো সফটওয়্যার উন্নয়ন, সৃজনশীলতা, বিক্রয় ও সাপোর্ট এশিয়ার সঙ্গে বাকি দুনিয়ার কোন তুলনাই হয় না। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের এই প্রতিবেদন বস্তুত সারা দুনিয়াকে ডিজিটাল প্রযুক্তিতে সারা দুনিয়ার ভবিষ্যতটা দেখিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক এজাজ আমিনের একটি প্রতিবেদন বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম গত ১৯ জুন তাদের ইন্টারনেট প্রকাশনায় প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনটির শিরোনাম ‘কেমন করে ডিজিটাল অর্থনীতি একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলছে।’ (https:/ww/w.weforum.org/agenda/2019/06/how-the-digital-economy-is-shaping-a-new-bangladesh?fbclid=IwAR0PSK6VGUde8fXrpdLByVlFdO09YqEqaucddcRUc2icW4xKkPOI1rg¸yo) প্রতিবেদনটিতে যেসব তথ্য প্রকাশিত হয়েছে তার মাঝে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আউটসোর্সে বাংলাদেশের দ্বিতীয় অবস্থান চিহ্নিত করা। এর আগে প্রকাশিত কোন প্রতিবেদনে বাংলাদেশের এই অবস্থানের কথা বলা হয়নি। রয়টার্সের এন্ড্রু বিরাজ এর তোলা বাংলাদেশের এক তরুণীর ছবির সঙ্গে প্রকাশিত এজাজ সাহেবের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে বাংলাদেশের একটি পত্রিকা এটি বাংলা প্রতিবেদনও প্রকাশ করে। সময়ের আলো পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে বড় ধরনের অবদান রাখতে শুরু করেছে ‘ডিজিটাল অর্থনীতি’। আউটসোর্সিংয়ের মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক খাতে নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি তৈরি হচ্ছে। ডিজিটাল অর্থনীতির কারণে বিশাল একটি জনগোষ্ঠী বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে সহযোগিতা করছে। অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, অনলাইন শ্রমশক্তির সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী হচ্ছে ভারত, যাদের প্রায় ২৪ শতাংশ গ্লোবাল ফ্রিল্যান্সার ওয়ার্কার। এর পরের অবস্থানটিই বাংলাদেশের। অনলাইন শ্রমশক্তিতে যাদের অবদান ১৬ শতাংশ। তৃতীয় অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্র, যাদের ফ্রিল্যান্সার ১২ শতাংশ। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক নিবন্ধে এ আভাস দেয়া হয়েছে। ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, গত ১০ বছরে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। এ সময়ে বিপুল মানবসম্পদকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। যারা আউটসোর্সিংসহ বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করছে। আন্তর্জাতিক মানের এসব প্রশিক্ষণের কারণে আইটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে আছে। সামনে আরও ভাল করবে। ডিজিটাল জগতে বাংলাদেশ ভাল অবস্থান তৈরি করেছে। এগুলো পরিশ্রমের ফসল। দেশের অর্থনীতিতে তারা ব্যাপক ভূমিকা রাখছে। বাংলাদেশে ডিজিটাল প্রক্রিয়ার শুরু ১৯৯৬-২০০১ সালে। পরে ২০০৯ সালে এর কার্যক্রম ব্যাপকভাবে শুরু হয়, যা আজ অনেক পরিধি বিস্তার করেছে। আর ভারতে শুরু হয় ১৯৮৬ সালে। তারা অনেক ক্ষেত্রে এগিয়ে। তাদের সঙ্গে তুলনা করলে হবে না।’ খুবই প্রাসঙ্গিকভাবে পত্রিকাটি বেসিস সভাপতির বক্তব্য গ্রহণ করেছেন। ‘বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবির বলেন, অর্থনীতিতে দ্বিতীয় এই সেক্টরে বাংলাদেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। ২০২১ সালের মধ্যে ১ বিলিয়ন ডলার অর্জনের লক্ষ্য রয়েছে। শিক্ষিত তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থানের একটি বড় খাত এটি। তবে অবকাঠামো এবং সুলভমূল্যে ইন্টারনেটের সুবিধা আরও বাড়তে হবে বলে মনে করেন তিনি।’ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় যে, শিক্ষিত বেকার জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি নারীদের কর্মসংস্থানেও অনন্য অবদান রাখছে এই ইন্টারনেটভিত্তিক ফ্রিল্যান্সিং। এক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলোও বাংলাদেশের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে শুরু করেছে। (http://www.shomoyeralo.com/details.php?id=51630&fbclid=IwAR2hvBttcYWUfRgXEXPLKK0NoQG1Ib9w3k6hllmb-L4459KX_pxmhcpowJg) জনাব এজাজের প্রতিবেদনটি আউটসোর্সিংয়ের দুনিয়ার একটি মৌলিক পরিবর্তনও তুলে ধরেছেন। তিনি দেখিয়েছেন যে ডিজিটাল প্রযুক্তির পাল্লা এখন আমাদের গোলার্ধের দিকে ভারি। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম প্রকাশিত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে সময়ের আলোর মন্তব্য ‘ডিজিটাল অর্থনীতিতে দুর্দান্ত অবদান রাখতে শুরু করেছে উন্নয়নশীল দেশগুলো, যেখানে প্রশ্নাতীতভাবে এশিয়া এগিয়ে রয়েছে। কম্পিউটার প্রোগ্রামিং থেকে শুরু করে ট্যাক্স প্রিপারেশন, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনসহ বহু কাজ অনলাইন ফ্রিল্যান্সিংয়ের আওতাভুক্ত। এ ধরনের কাজের সুবিধা অনেক। বিশেষ করে গ্রাহক ও কাজের পরিসর অনেক মুক্ত। বিশ্ববাজারে কাজ করা যায়, কাজের স্থান নিয়েও ভোগান্তি নেই। আর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো ফ্রিল্যান্সারদের ঢাকার মতো জনবহুল শহরের রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যাম ঠেলে অফিসে যেতে হয় না। এতে করে নতুন চাকরি বাজার তৈরি হয়েছে, তৈরি হয়েছে অনেক সুযোগ। এশিয়াতেই এখন আউটসোর্সিংয়ের বাজার সবচেয়ে বড়। ওই নিবন্ধে বলা হয়, খরচ ও ঝুঁকি কমাতে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়ার মতো অনেক উন্নত দেশও এখন বাংলাদেশের মতো আইটি আউটসোর্সিংয়ের দিকে ঝুঁকছে। বাংলাদেশে ফ্রিল্যান্সিং পেশা দিনকে দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। স্বাভাবিক জীবনযাত্রা অব্যাহত রাখতে এখান থেকে ভাল আয় করার সুযোগ রয়েছে। দ্রতগতিতে বাংলাদেশে ডিজিটাল রূপ লাভ করায়, শহরে ইন্টারনেট সুবিধা, সরকারী-বেসরকারী প্রচারণায় এই খাত ধীরে ধীরে সবার কাছে পরিচিত ও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। অক্সফোর্ড ইন্টারনেট ইনস্টিটিউটের তথ্য অনুযায়ী, অনলাইন কর্মী সরবরাহে ভারতের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। এখানে নিয়মিত কাজ করছে ৫ লাখ ফ্রিল্যান্সার। আর মোট নিবন্ধিত ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা ৬ লাখ ৫০ হাজার। বাংলাদেশ তথ্যপ্রযুক্তি অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর ফ্রিল্যান্সাররা ১০ কোটি ডলার আয় করে থাকেন। একেক দেশ একেক বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে এই পেশা নিয়ে কাজ করছে। যেমন ভারতীয় ফ্রিল্যান্সারদের দক্ষতা প্রযুক্তি ও সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট। আর বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা মূলত সেলস ও মার্কেটিং সেবায় পারদর্শী। ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের গবেষণা প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের ৪ কোটি ৪০ লাখ তরুণের প্রতি ১০ জনের একজন বেকার। প্রতিবছরই বিশ্ববিদ্যালয় পেরনো হাজার হাজার শিক্ষার্থী মনের মতো চাকরি না পেয়ে বেকার হয়ে বসে আছে। ফলে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। তবে খুব সহজেই আইটি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার সুযোগ রয়েছে তাদের সামনে। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত ওই নিবন্ধে আশা প্রকাশ করা হয়েছে, এতে করে তারা শুধু নিজের জীবিকাই নিশ্চিত করবে না, বরং দেশে অনেক বৈদেশিক মুদ্রা আয়েও সমর্থ হবে, যা ‘নতুন বাংলাদেশ’র অর্থনৈতিক ভিত্তি হিসেবে কাজ করবে। বাংলাদেশে এখন অনেক শিক্ষিত নারীকে সংসারের দায়িত্ব নিয়ে চাকরি ছেড়ে দিতে হয়। তাদের জন্যও ফ্রিল্যান্সিং দারুণ সুযোগ। ঘরে বসেই কাজের সুযোগ থাকায় বাংলাদেশের নারীরা এখন তাদের প্রথাগত সাংসারিক দায়িত্বের গন্ডি পেরিয়ে ফ্রিল্যান্স কাজকে ক্যারিয়ার সঙ্কটের সমাধান হিসেবে দেখছে। গবেষণা বলছে, বাংলাদেশের নারীরা ফ্রিল্যান্সার হিসেবে এখন পুরুষের চেয়ে বেশি নির্ভরযোগ্য। আর নারীদের অংশগ্রহণে এই সেক্টর আরও শক্তিশালী হয়ে উঠছে। এখানে শ্রমব্যয় কম থাকায় বিশ্বের আউটসোর্সিং বাজারে গুরুত্বপূর্ণ অবস্থান তৈরি করতে পেরেছে বাংলাদেশ। তবে এখনও বেশকিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। তবে সীমাবদ্ধতার বাইরে সম্ভাবনার জায়গাও কম নেই। এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ এমন একটি দেশ, যাদের বিশাল একটি তরুণ জনগোষ্ঠী আছে। ১৬ কোটি ৩০ লাখ মানুষের মধ্যে প্রায় ৬৫ শতাংশেরই বয়স ২৫ বছরের নিচে। এই বিশাল তরুণ ও শক্তিশালী জনসম্পদ এখনও এই ফ্রিল্যান্স বাজারের সম্ভাবনা নিয়ে পুরোপুরি অবগত নয়। বিগত বছরগুলো ফ্রিল্যান্সিং জনপ্রিয় হলেও এখনও বাংলাদেশের হাজার হাজার তরুণের এটা নিয়ে উপযুক্ত প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। এই সুযোগ যেন তারা ভালভাবে কাজে লাগাতে পারে সেজন্য প্রয়োজন সরকারী সহযোগিতা। বাস্তবতা হচ্ছে সরকারী সহযোগিতা, প্রণোদনা, বাজারজাতকরণ প্রচেষ্টা, প্রশিক্ষণ ও সংশ্লিষ্ট সুযোগ-সুবিধাগুলো দৃঢ়তার সঙ্গে বাস্তবায়িত হয়েছে বলেই বাংলাদেশ আজকের অবস্থানে পৌঁছাতে পেরেছে। কেউ যদি ভুলে গিয়ে থাকেন তবে স্মরণ করিয়ে দিই আমাদের যাত্রাপথটির কথা। বাংলাদেশে কম্পিউটার আসে ১৯৬৪ সালে। ৮৭ সালে বাংলাদেশে কম্পিউটার দিয়ে বাংলা পত্রিকা প্রকাশ করি আমি। ’৮৮ সালে এই দেশে বাংলা লেখার জন্য বিজয় কীবোর্ড উদ্ভাবন করি। দেশে কম্পিউটার বিপ্লবে সরকার অংশ নেয় ৯৬ সালে। ৯৭ সালে সরকার ৪৫টি সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন গ্রহণ করে এবং ৯৮-৯৯ সালের বাজেটে কম্পিউটারের ওপর থেকে শুল্ক ও কর প্রত্যাহার করে। ২০০৮ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণার পর ০৯ সাল থেকে প্রতিদিন ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। লক্ষাধিক ছেলে-মেয়েকে প্রশিক্ষণ প্রদান, ২৪ সাল পর্যন্ত ট্যাক্স অবকাশ প্রদান ছাড়াও আছে শতকরা ১০ ভাগ রফতানি প্রণোদনা। দেশটির ডিজিটাল অবকাঠামো গড়ে তোলার দিক থেকে সরকার সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছে। ২৮টি হাইটেক পার্ক ছাড়াও ২১ সালের মাঝে দেশের ইউনিয়নে দ্রুতগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌঁছানোর লক্ষ্য রয়েছে আমাদের। সরকার মাধ্যমিক স্তরে তথ্যপ্রযুক্তি বাধ্যতামূলক করেছে। এখন প্রাথমিক স্তরে প্রোগ্রামিং শেখানো হচ্ছে। আমি অবাক হব না ২১ সাল নাগাদ প্রকাশিত প্রতিবেদনে সবার ওপরের নামটা যদি বাংলাদেশেরই থাকে। ঢাকা, ২২ জুন ১৯। লেখক : তথ্যপ্রযুক্তিবিদ, কলামিস্ট, দেশের প্রথম ডিজিটাল নিউজ সার্ভিস আবাসের চেয়ারম্যান- সাংবাদিক, বিজয় কীবোর্ড ও সফটওয়্যারের জনক
×