ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

ভিকারুননিসায় ভর্তিবাণিজ্য

মন্ত্রণালয় ও দুদকের তদন্তের মধ্যেই অনিয়ম!

প্রকাশিত: ১০:২৮, ১৯ মে ২০১৯

  মন্ত্রণালয় ও দুদকের তদন্তের মধ্যেই অনিয়ম!

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল এ্যান্ড কলেজে ভর্তি বাণিজ্যের অভিযোগ নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও দুদকের তদন্তের মধ্যেই বড় ধরনের অনিয়মের তথ্য মিলেছে। গবর্নিং বডির অনুমোদন ছাড়া বড় ধরনের ভর্তি বাণিজ্য ও অনৈতিক পন্থায় শত শত শিক্ষার্থীর শাখা বদলির প্রমাণ মিলেছে। গবর্নিং বডিকে না জানিয়ে তাহলে কে বা কারা এ ভর্তিবাণিজ্য করেছে তা নিয়ে তোলপাড় চলছে প্রতিষ্ঠানটিতে। প্রতিষ্ঠানটির বর্তমান ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ফেরদৌসী বেগম প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব নেন গত ৩০ মার্চ। অধ্যক্ষ পদে তার যোগদানের আগেই ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। নতুন এ তথ্যের বিষয়ে ফেরদৌসী বেগম জনকণ্ঠকে বলেন, হ্যাঁ রেজ্যুলেশনের বাইরে বহু ভর্তি ও বদলির ঘটনা ঘটেছে। আমি কিছুদিন আগে দায়িত্ব নিয়েছি। ভর্তি কার্যক্রম আমার সময়ে হয়নি। তবে সরকারের যে তদন্ত কমিটি কাজ করছে তাদের কাছে এ তথ্য আমি দিয়েছি। কারণ এ তথ্য দেয়া আমার দায়িত্ব বলে মনে করেছি। জানা গেছে, চলতি শিক্ষাবর্ষে এখানে নিয়মিত ভর্তির বাইরে (প্রথম থেকে নবম শ্রেণী) মোট ছাত্রী ভর্তি করা হয়েছে ৪৭৩ জন। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির তিনটি ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থী বদলি করা হয়েছে ৩৮৩ জন। এই বদলিতে মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রথম শ্রেণীতে নিয়মিত ভর্তির বাইরে ১৯০ জন ছাত্রী ভর্তি করা হয়েছে বলে প্রমাণ পেয়েছে নতুন প্রশাসন। যার মধ্যে ৩০ জনকে ভর্তি করা হয়েছে গবর্নিং বডির রেজ্যুলেশন (সিদ্ধান্ত) ছাড়াই। একইভাবে দ্বিতীয় থেকে নবম শ্রেণী পর্যন্ত নিয়মিত ভর্তির বাইরে মোট ছাত্রী ভর্তি করা হয়েছে ২৮৩ জন। বিভিন্ন শ্রেণীতে শাখা বদলি করা হয়েছে প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থীর। অথচ এ কাজে গবর্নিং বডির কোন অনুমোদন নেই। এই ২৮৩ জন ছাত্রী ভর্তি ও বদলির বিষয়ে গবর্নিং বডির কোন অনুমোদন নেয়নি ভিকারুননিসা নূন স্কুলের ওই সময়কার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। এই ভর্তি কার্যক্রমের সঙ্গে স্থানীয় ও বহিরাগত একটি অভিভাবক চক্র, প্রভাবশালী কয়েকজন শিক্ষক জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে। ভর্তির দায় দায়িত্ব বিধান অনুসারে অধ্যক্ষের ওপরই বর্তায়। এ অতিরিক্ত ভর্তি ও বদলির বিষয়ে সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হাসিনা বেগম গণমাধ্যমকে বলেছেন, গত ৮ ডিসেম্বর আমাকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়া হয় এবং গত ১ জানুয়ারি অব্যাহতি দেয়া হয়। পরবর্তীতে আমাকে আবারও অধ্যক্ষের দায়িত্ব দেয়া হয় এবং সর্বশেষ গত ২৮ মার্চ অব্যাহতি দেয়া হয়। এদিকে ভিকারুননিসা নূন স্কুল এ্যান্ড কলেজের নির্বাচিত গবর্নিং বডির মেয়াদ শেষ হয় গত ৬ মে। প্রতিষ্ঠানটির গবর্নিং বডির সাবেক সভাপতি গোলাম আশরাফ তালুকদার তাদের না জানিয়ে ভর্তির খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বিশিষ্ট নাগরিক, জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার উর্ধতন কর্মকর্তার সুপারিশে আমরা সর্বমোট ১৬০ জন ছাত্রী ভর্তি করেছি, এটা গবর্নিং বডির সিদ্ধান্ত।
×