ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মুসলমানরা আমাদের বিশ্বাস করে না ॥ বিজেপি নেতা

২২ লাখ শূন্যপদে চাকরির প্রতিশ্রুতি রাহুলের ॥ কংগ্রেসের ইশতেহার

প্রকাশিত: ১০:৫৪, ৩ এপ্রিল ২০১৯

২২ লাখ শূন্যপদে চাকরির প্রতিশ্রুতি রাহুলের ॥ কংগ্রেসের ইশতেহার

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ লোকসভা নির্বাচন সামনে রেখে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি ও প্রতিপক্ষ প্রধান বিরোধীদল কংগ্রেস নিজ নিজ জোট নিয়ে নেমেছে ভোটের লড়াইয়ে। নিজেদের পক্ষে ভোটারদের টানতে দলীয় প্রধানরা চষে বেড়াচ্ছেন দেশের একপ্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত। চমকপ্রদ সব প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের মন জয় করতে চাইছেন তারা। এরই মধ্যে মঙ্গলবার ইশতেহার প্রকাশ করেছে কংগ্রেস। আর বুধবার নির্বাচনী প্রচারে পশ্চিমবঙ্গে দুটি জনসভায় ভাষণ দেবেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। -খবর ওয়েবসাইটের। নির্বাচন সামনে রেখে মঙ্গলবার নয়া দিল্লীর আকবর রোডে ভারতীয় কংগ্রেসের সদর দফতরে রাহুল গান্ধী ইশতেহার প্রকাশ করেন। ক্ষমতায় গেলে ভারতের বেহাল কর্মসংস্থানের হাল ফেরাতে দেশের ২২ লাখ সরকারী শূন্যপদে চাকরি দেয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন রাহুল। পাশাপাশি গরিবদের এ্যাকাউন্টে বছরে ৭২ হাজার রূপী দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। এই প্রকল্পের মাধ্যমে গরিব এবং কৃষকেরা পাঁচ বছরে তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত পেতে পারেন বলে অনুষ্ঠানে পুনর্ব্যক্ত করেন রাহুল। কংগ্রেসের দাবি, এর ফলে উপকৃত হবে ভারতের প্রায় পাঁচ কোটি গরিব মানুষ। কংগ্রেসের ইশতেহারে বেকারত্ব হ্রাস, শিক্ষাখাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি, কৃষকদের সহায়তা, নারী নিরাপত্তা, বিজেপির দেয়া একশ দিনের কাজের প্রতিশ্রুতির জায়গায় দেড়শ দিনের কাজের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। এছাড়া দলিত, পররাষ্ট্রনীতি, স্বাস্থ্যসেবা, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, সীমান্ত নিরাপত্তা ও জম্মু-কাশ্মীর ইস্যুতেও আলোকপাত করা হয়েছে। কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা পি.চিদম্বরমসহ দলটির প্রথম সারির অনেক নেতা মিলে প্রায় এক বছর ধরে এই ইশতেহার তৈরি করেন। ইশতেহারের শিরোনাম দেয়া হয়েছে, ‘সম্পদ ও জণকল্যাণ। এ বিষয়ে ইশতেহার কমিটির প্রধান চিদম্বরম বলেন, বিজেপি উগ্রজাতীয়তাবাদকে উস্কে দিতে চাইছে। তবে আমরা এই ইশতেহারে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোকপাত করেছি। অনুষ্ঠানে ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং জানান, দেশের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে উন্নয়নের অংশীদার করতে এবং দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার লক্ষ্যেই এই ইশতেহার। এই বক্তব্য মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার দাবি এবার কংগ্রেস কর্মীদের বলে জানান তিনি। এদিকে নির্বাচনের দিন যত ঘনিয়ে আসছে উত্তেজনার পারদ তত বাড়ছে। এরই অংশ হিসেবে আজ বুধবার পশ্চিমবঙ্গে জনসভার ডাক দিয়েছে বিজেপি ও রাজ্যে ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস। পশ্চিমবঙ্গে আজ প্রথমদফা নির্বাচনী প্রচারে এসে শিলিগুড়ি ও কলকাতা মিলে দুটি জনসভায় অংশ নেবেন নরেন্দ্র মোদি। রাজনৈতিক মহলের আভাস, মূলত মোদির রাজনৈতিক চালের সরাসরি জবাব দিতে জনসভার তারিখ একদিন এগিয়ে এনে বুধবার বিকেলে কোচবিহারের দিনহাটায় সমাবেশের আয়োজন করেছে তৃণমূল। এ বিষয়ে তৃণমূলের একাধিক সূত্রের দাবি, মোদির সঙ্গে সরাসরি বিতর্কের ডাক দিয়েছিলেন মমতা। কিন্তু বিজেপি শিবির থেকে এ বিষয়ে কোন আভাস না মেলায় এই পশ্চিম বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে মোদির কথার যোগ্য জবাব দিতে চান মমতা। এজন্য তৃণমূলের সমাবেশের তারিখ এগিয়ে বুধবার করা হয়। আজ মোদির জনসভা দুটি শেষ হওয়া মাত্র কোচবিহারের দিনহাটায় বক্তব্য রাখবেন মমতা। মোদির প্রতিটি কথার যোগ্য জবাব দেয়ার জন্য প্রস্তুত তিনি। এই দুই শীর্ষ নেতার বাগযুদ্ধ দেখার প্রতীক্ষায় সমগ্র ভারত। পশ্চিমবঙ্গের একাধিক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করেন, এ রাজ্যে বিজেপির একতরফা প্রচার আটকাতেই মমতা ব্যানার্জী এই সমান্তরাল কৌশল অবলম্বন করেছেন। কর্নাটক বিজেপির সিনিয়র নেতা ও রাজ্যটির সাবেক উপ-মুখ্যমন্ত্রী কেএস ঈশ্বরাপ্পা বলেছেন, মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকেরা আমাদের বিশ্বাস করে না। তাই কর্নাটকে আমরা তাদের নির্বাচনী টিকেট দিচ্ছি না। লোকসভা নির্বাচন সামনে রেখে বিজেপির অন্যতম এ দায়িত্ববান নেতার এই ধরনের মন্তব্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, কর্নাটকে মুসলিমদের আমরা সরাসরি নির্বাচনের টিকেট দেব না। কারণ কংগ্রেস মুসলিমদের শুধু ভোট ব্যাংক হিসেবে ব্যবহার করে। তবে আমরা কর্নাটকে বিজেপির হয়ে তাদের লড়তে দেব না। কারণ মুসলমানরা আমাদের বিশ্বাস করে না। মঙ্গলবার কর্নাটকের কোপাল এলাকার সংখ্যালঘু কুরুবাসহ অন্যান্য সম্প্রদায়ের উদ্দেশে দেয়া ভাষণে কেএস ঈশ্বরাপ্পা এ মন্তব্য করেন। আগামী ১৮ এপ্রিল থেকে কর্নাটক রাজ্যে লোকসভা নির্বাচনে ভোট শুরু হবে।
×