ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বিচ্ছেদ হতেই পারে...

প্রকাশিত: ১২:৩৮, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

বিচ্ছেদ হতেই পারে...

বাস্তব জীবনে মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক হওয়া নতুন কিছু নয়। পৃথিবী সৃষ্টির শুরু থেকেই জোড়ভাবে মানুষের আগমন হয়ে আসছে। জোড় মানুষ আমৃত্যু জোড় থাকেও না। মৃত্যু আলাদা করে নেয়। অথবা জীবিত থাকা অবস্থায় সম্পর্কে বিচ্ছেদ ঘটে। অনেক দিন ভাল লাগা থেকে সম্পর্ক যেমন শক্ত হয় আবার নিজেদের কারণে সম্পর্কে ফাটল ধরাও কিন্তু দোষের নয়। সারা জীবন এক সঙ্গে এক ছাদের নিচে থাকার প্রত্যয়ে সম্পর্কের জোড়া লাগলেও অনেক সময় আলাদা হতেই হয়। কিন্তু আলদা হওয়ার মানে প্রতিপক্ষ কিংবা শত্রু হওয়া নয়। আমাদের দেশে অনেক সময় এমনই দেখা যায়। প্রেমের সম্পর্ক কিংবা বিয়ের পর তালাক পর আলাদা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দু’জনের মধ্যে সহ্যহীনতা সৃষ্টি হয়। বদনাম, অপ্রীতিকর ছবি, ভিডিও, অডিও জনসম্মুখে কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। যার ফলে সম্পর্কোচ্ছেদর সঙ্গে সঙ্গে শত্রুতার সৃষ্টির হয়। কিন্তু কেন? কোন সম্পর্ক বিচ্ছেদর পরও দু’জনের মধ্যে সৌজন্যতাবোধ করাও কর্তব্যের বিষয় হয়ে যায়। এমন সৌজন্যতা থাকলে জীবন, সমাজ ও রাষ্ট্রেও সৌজন্যতাবোধ প্রচার হয়। অনেকাংশে প্রতিহিংসার মাত্রা কমে যায়। সম্পর্কে বিচ্ছেদ হতেই পারেÑ পেছনের গ্লানি মুছে ফেলুন : যখন দেখছেন দু’জন এক সঙ্গে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। এ মুহূর্তে বিচ্ছেদই উপযুক্ত। নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া করুন। পরামর্শের মাধ্যম নিজেরই নিজেদের মতো করে আলাদা হয়ে যান। পেছনের গ্লানি মুছে সাদরে বলে চলে যান। হয়ত এক সঙ্গ থাকছেন না কিন্তু সম্পর্কটা সুন্দর থাকলে ক্ষতি কি? মিথ্যার আশ্রয় নেবেন না : বিচ্ছেদর সময় অনেকই মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে থাকেন। মামলা পর্যন্ত গড়ায় এক সময়। কিন্তু কেন? যার সঙ্গে বিচ্ছেদ করতে চান তার সঙ্গে তো অতীতে অনেক সময় কাটিয়েছেন। ভালবেসেছন শাসন করেছেন। এক সময়ের প্রিয় মানুষের ওপর তবে কেনো নির্মম মিথ্যার আশ্রয় নেবেন? সরাসরি বলে আলাদা হলে অসুবিধা কোথায়? ‘আজ থেকে আমরা আলাদা হতে চাই। তুমি তোমার মতো আমি আমার মতো একেবারই আলাদা হতে চাই।’ বলায় ক্ষতি কি? যার সঙ্গে থাকা সম্ভব নয় তার সঙ্গে ছলাখলা না করাই ভাল। স্বেচ্ছায় চলে যাওয়া সৎ মানসিকতার পরিচয়। দেখা হলে এড়িয়ে যাবেন না : একদিন হলেও তো একজনকে ভালবেসেছেন। হয়ত নিজেদের ভুলের কারণে অথবা ছাড় দেয়া-নেয়ার ঘাটতিতে এখন আলাদা হয়ে গেছেন। তাতে কি দেখা হলে না চেনা বা না দেখার ভান ধরবেন না। কুশল বিনিময় করতে পারেন। ‘আমাকে ছাড়া কেমন আছ? এখন কোন মেয়ে বা ছেলের সঙ্গে আছ কি?’ এসব বিষয় ছাড়াও সমাজের অন্য মানুষের মতো সৌজন্য আচরণ করলে সময় নষ্ট হবে না। নিজেদের মধ্যে প্রতিহিংসার মাত্রা কমেও যেতে পারে। বাড়তে পারে সৌজন্যতা। আগের ঘটে যাওয়া সব ঘটনা ভুলে যান : এক সঙ্গে অনেক দিন ছিলেন। দু’জন এক সঙ্গে থাকলে অনেক কিছু হয়। ভালবাসা রোমাঞ্চ, ঝগড়া বাগ্বিত-া যে কোন কিছু হতে পারে। এসব বিষয় অন্যের সঙ্গে আলোচনা করবেন না। যাকে এসব বিষয় বলবেন সে আপনাকে এবং যার বিষয় বলছেন। দু’জনকে ভাল মনে নাও করতে পারে এবং আরও দু’চার জনকে বলে আপনাদের ব্যক্তিত্ব নষ্ট করতেই পারে। তাই পেছনের সব কিছু নিজের মধ্যেই গোপন রাখেন। বিচ্ছেদ হওয়ার মুহূর্তেও শেষবার ভাবুন : আজই হয়ত চলে যাচ্ছেন দু’জন দু’জনকে ছেড়ে। কিছুক্ষণ পর থেকে আপনি ও আপনার অনেক দিনের সঙ্গী আলাদা হয়ে যাচ্ছেন। এ মুহূর্তেও শেষবার ভাবুনÑ এক সঙ্গে কি থাকা যায় না? কোন ভুলে এত দিনের সম্পর্ক বিচ্ছেদ হতে যাচ্ছে? বিচ্ছেদ হতেই পারেই। কিন্তু কোন ভুলের কারনে? তা নিয়ে আজই শেষ বার আলোচনা করুন দু’জন। একজন ছাড়া দিতেই পারেন। অথবা ভুলটা আজকেই মুছে ফেলতে পারেন। মনে রাখবেন বিচ্ছেদ কোন অপরাধ নয় যদি তা সমঝোতার মাধ্যমে হয়। কিন্তু এটাও ভুলে যাবেন না বিচ্ছেদ হয় সামান্য সময়ের ব্যবধানে অথচ সম্পর্ক গড়তে অনেক সময় লাগে। মাস, বছর এমনকি দশকও। তাই বিচ্ছেদ হওয়ার আগে নিজেকে শোধরাতে অসুবিধা কোথায়?
×