ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘রেকর্ড নিয়ে খুব একটা ভাবী না’

প্রকাশিত: ০৬:৫৫, ৭ নভেম্বর ২০১৮

‘রেকর্ড নিয়ে খুব একটা ভাবী না’

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ শুধু টেনিস নয়, যে কোন খেলাতেই এমন খেলোয়াড় খুব কমই আছেন- যাকে সব দেশের, সব ধরনের দর্শকই পছন্দ করে। জীবন্ত কিংবদন্তি স্টেফি গ্রাফ সেই ছোট্ট গ্রুপের একজন অন্যতম সদস্য! টেনিসের রানী বলা হয় তাকে। সর্বকালের সেরা চ্যাম্পিয়ন! মাত্র ১৩ বয়সে পেশাদার টেনিস শুরু করেন তিনি। ১৯ বছর বয়সেই অর্জন করেন গোল্ডেন স্লাম! এক বর্ষপঞ্জিকায় চারটি গ্র্যান্ড স্ল্যামসহ অলিম্পিকের স্বর্ণ পদক। টেনিসের ইতিহাসে এই অর্জন পুরুষ বা মহিলা এককে অন্য কারও নেই! টেনিসের ওপেন যুগে সর্বোচ্চ ২২ গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের রেকর্ডটিও দীর্ঘদিন নিজের করে রেখেছিলেন জার্মান কিংবদন্তি। কিন্তু গত বছর তাকে ছাড়িয়ে যান সেরেনা উইলিয়ামস। আমেরিকান টেনিসের এই কিংবদন্তি টানা চারটি গ্র্যান্ড স্লাম জয়ের রেকর্ড গড়েছেন দুইবার। ২০০২-২০০৩ মৌসুমের পর ২০১৪-১৫ মৌসুমে। কিন্তু একই বর্ষপঞ্জিকায় টানা চারটি মেজর টুর্নামেন্ট ও স্বর্ণপদক জয়ের রেকর্ড নেই সেরেনার। সেরেনা উইলিয়ামসের বর্তমান বয়স ৩৭। এই বয়সেও দুর্দান্ত গতিতে ছুটছেন। এ বছরে টানা দুটি গ্র্যান্ড স্লাম টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলেছেন। সেরেনা উইলিয়ামস কিংবা অন্য কেউ কী পারবেন স্ট্রেফি গ্রাফের সেই রেকর্ডকে ছাড়িয়ে যেতে? রেকর্ড প্রসঙ্গে স্টেফি গ্রাফ অবশ্য কিছুই ভাবছেন না। তবে ৪৯ বছর বয়সী গ্রাফ জানালেন তার অতীতের স্মৃতিগুলো ছিল খুবই মধুর এবং আঁকড়ে রাখার মতো। এ প্রসঙ্গে ঝুহাইতে ডব্লিউটিএ এলিট টুর্নামেন্টের ব্র্যান্ড এ্যাম্বাসেডর স্টেফি গ্রাফ বলেন, ‘সেইসব দিনগুলোর স্মৃতি সত্যিই অসাধারণ, সেই সময়গুলো আমার কাছে এখন মহামূল্যবান সম্পদের মতো মনে হয়। তবে আমি পেছনে ফিরে তাকাতে চাই না। তবে আমি এমন একজন মানুষ যিনি সেই সব রেকর্ড নিয়ে মোটেও কখনও চিন্তা করি না। আগেও কখনও করিনি।’ টেনিসের জন্য ভালবাসার শুরুটা হয়েছিল একেবারে ছোটবেলা থেকেই। মাত্র তিন বছর বয়সেই হাতে তুলে নিয়েছিলেন কাঠের তৈরি র‌্যাকেট! যদিও তাতে বাবার অবদানই বেশি ছিল। শুরুর দিকে তার প্রধান অস্ত্র ছিল শক্তিশালী ফোরহ্যান্ড, ক্রিস এভার্টের মতে যা ছিল ‘মেয়েদের টেনিসের সেরা।’ পরবর্তীতে তিনি ব্যাক-হ্যান্ডেও দক্ষ হয়ে ওঠেন, বিশেষ করে তার স্লাইস করে মারা ব্যাক-হ্যান্ড শট ছিল প্রতিপক্ষের অন্যতম মাথাব্যথার কারণ! স্টেফি গ্রাফ সার্ভও করতেন দুর্দান্ত! সার্ভের গতি ছিল ১১০ মাইল/ঘণ্টার মতন, যা ছিল তৎকালীন সময়ের অন্যতম দ্রুতগতির! তিনি ছিলেন অত্যন্ত ক্ষিপ্র এবং দারুণ এ্যাথলেটিক। অনেকে হয়ত চেষ্টাও করবে না, এমন অনেক বল স্টেফি অবলীলায় ফেরত পাঠাতেন। টেনিস খেলোয়াড় না হয়ে স্প্রিন্টার হলেও নিঃসন্দেহে তিনি দারুণ সফল হতেন। বিভিন্ন সময়ে মারাত্মক ইনজুরিতে আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও ফিটনেসের কারণে প্রতিবারই মাঠে ফিরে আসতে সক্ষম হয়েছিলেন স্টেফি গ্রাফ। ১৯৯৯ সালে ফ্রেঞ্চ ওপেনে ফর্মের তুঙ্গে থাকা হিঙ্গিসকে হারিয়ে জীবনের শেষ স্লামটি জিতে নেন তিনি। দুই মাস পর মাত্র ৩০ বছর বয়সেই র‌্যাকেট তুলে রেখে চিরদিনের জন্য টেনিসকে বিদায় জানান স্টেফি গ্রাফ। পাঁচ বছরের মাথায় তাকে আন্তর্জাতিক টেনিসের ‘হল অব ফেম’ এ অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০০১ সালের ২২ অক্টোবর আন্দ্রে আগাসির সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন স্টেফি গ্রাফ। সোমবার এএফপিকে দেয়া সাক্ষাতকারে জার্মান কিংবদন্তি জানান, তিনি সত্যিই সৌভাগ্যবান। এ প্রসঙ্গে গ্রাফ বলেন, ‘আমার যে ক্যারিয়ার ছিল তাতে সত্যিই আমি সৌভাগ্যবান।’ তবে সেরেনা উইলিয়ামসের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন গ্রাফ। তার ভাষ্যমতে, ‘সে (সেরেনা) বার বার নিজেকে প্রমাণ করেছে। সে যা অর্জন করতে পারে তা সত্যিই অবিশ্বাস্য। আমি মনে করি সে পারে না তেমন কিছু নেই! সে দৃঢ়প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তার ইচ্ছেও প্রবল, অসাধারণ প্রতিভার অধিকারী সে।’
×