ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

চালের দাম বাড়া নিয়ে গবেষণা রিপোর্ট সঠিক নয় ॥ মুহিত

প্রকাশিত: ০৫:৩৯, ২৫ ডিসেম্বর ২০১৭

চালের দাম বাড়া নিয়ে গবেষণা রিপোর্ট সঠিক নয় ॥ মুহিত

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ গ্রামীণ ব্যাংক এখন ভাল মুনাফা করছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ইতোমধ্যে গ্রামীণ ব্যাংক পরিচালক নির্বাচনের শিডিউল হয়ে গেছে। যথাসময়ে নির্বাচন হবে বলে আশা করছি। চালের দাম বাড়া নিয়ে সম্প্রতি বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) প্রতিবেদন সঠিক নয় বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, সানেম তাদের প্রতিবেদনে বলেছে চালের দাম বাড়ায় দেশের ৫ লাখ মানুষ দারিদ্র্য সীমার নিচে চলে গেছে। অন্য এক আলোচনায় অর্থমন্ত্রী মানিলন্ডারিং আইন সংশোধনের আভাস দিয়েছেন। রবিবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সচিবালয়ে গ্রামীণ ব্যাংকের মুনাফা গ্রহণকালে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এছাড়া তিনি সকাল ও বিকেলে একাধিক কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করেন। অর্থমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের চরিত্র বদলে গেছে। এটি নন-প্রোফিটেবল ব্যাংক ছিল, তখন সবকিছুতেই ভর্তুকি দিতে হতো। সরকার এখান থেকে কিছুই পেতো না। গ্রামীণ ব্যাংকের পক্ষ হতে ৬ কোটি ৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা ডিভিডেন্ট প্রদান করা হয়েছে। এ সময় গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালক রতন কুমার নাগ উপস্থিত ছিলেন। মুহিত বলেন, এখন এমন পরিবর্তন এসেছে যে গ্রাহকরা গ্রুপ করে এসে লোন নিচ্ছে এবং দিচ্ছে। গ্রামীণ ব্যাংক এখন প্রোফিট করছে। অর্থমন্ত্রী বলেন, সানেম তিন মাসের টাইম লাইনে এই যে গবেষণা জরিপটি করেছে তা সামগ্রিকভাবে মূল্যায়ন করা যৌক্তি না। তিনি বলেন, তাৎক্ষণিক এই রিপোর্টের ভিত্তি নেই। এজন্য কমপক্ষে একটা মৌসুম বা একটা প্রান্তিক রেখা দেখা দরকার। তিনি বলেন, চালের দাম কিছুটা বাড়ুক তা আমরা চেয়েছি। এটা চেয়েছি যেনো কৃষক দাম কিছুটা বেশি পায় সেই আশায়। কিন্তু আমাদের আশার চাইতে দাম একটু বেশিই বেড়েছে। দামটা ৫০ এর উপড়ে গেছে। ফলে সাধারণ মানুষ সমস্যায় পড়েছে সেটা আমরা স্বীকার করি। মুহিত বলেন, চাল কিনতে গিয়ে সঞ্চয় খরচ করছেন সাধারণ অনেক মানুষ। সেটা আমাদের অজানা না। আশা করি এবার মৌসুমের মধ্যেই চালের দাম কমে আসবে। জীবনে প্রথম ৩ টাকা বৃত্তি পেয়েছি ॥ শিক্ষা জীবনে ৮ বছর বৃত্তি পেয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। আর তার এ শিক্ষাবৃত্তি শুরু হয়েছিল মাত্র ৩ টাকায়। রবিবার মিরপুর শহীদ সোহরাওয়ার্দী ইনডোর স্টেডিয়ামে ডাচ-বাংলা ব্যাংক ২০১৭ সালে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে নিজের শিক্ষা জীবনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মন্ত্রী এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, আমাদের সময়ে নির্দিষ্ট বৃত্তি ছিল। টাকাও তেমন ছিল না। যে টাকা দিত তা দিয়ে পুরো লেখাপড়ার খরচ হতো না। আমার ১৬ থেকে ১৭ বছরের শিক্ষা জীবনের শেষ ৮ বছর বৃত্তি পেয়েছি। বৃত্তির শুরু হয়েছিল ৩ টাকা দিয়ে। এরপর ৪ টাকা, ৫ টাকা, ২০ টাকা ও সর্বশেষ ৪০ টাকা বৃত্তি পেয়েছি। ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ডাচ-বাংলা ব্যাংক ২০১৭ সালে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মধ্যে দেশের বিভিন্ন কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত তিন হাজার ১৯ জন দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীকে বৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। বৃত্তিপ্রাপ্তরা উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের পূর্ণ শিক্ষাবর্ষে মাসে দুই হাজার ৫০০ টাকা করে পাবেন। এছাড়া পাঠ্য উপকরণের জন্য পাঁচ হাজার টাকা এবং পোশাকের জন্য এক হাজার টাকা করে বার্ষিক অনুদান পাবেন। ডাচ-বাংলা ব্যাংকের চেয়ারম্যান সায়েম আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর ফজলে কবির, ডাচ-বাংলা ব্যাংক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান এম শাহাবুদ্দিন আহমেদ, ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মোঃ শিরিন প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সকলের জন্য শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করা আমাদের জাতীয় কর্তব্য। সরকারের একার পক্ষে এই বিশাল দায়িত্ব পালন করা দুরূহ ব্যাপার। সেজন্য সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান এমনকি ব্যক্তি বিশেষকে এগিয়ে আসতে হবে। তাহলে সরকারের হাত আরও বেশি শক্তিশালী হবে এবং ২০৪১ সালের আগেই বাংলাদেশ একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে। উন্নয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি অনুকরণীয় রাষ্ট্রে পরিণত হবে। তিনি আরও বলেন, আজকের ছাত্র-ছাত্রীরাই আগামী দিন দেশ পরিচালনা করবে। তারা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করবে। তাই তাদের মেধাবিকাশে সঠিক যত্ন ও রক্ষণাবেক্ষণ আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। তিনি বলেন, ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার সবসময় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মানিলন্ডারিং আইন সংশোধন হতে পারে ॥ অর্থপাচার বা মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত ঘটনার যথাযথ পদক্ষেপ নিতে মানিলন্ডারিং এ্যাক্ট সংশোধনের ইঙ্গিত দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত এ সংক্রান্ত এক বৈঠক শেষে এমন ইঙ্গিত দেন তিনি। বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, কেন্দ্রীয় ব্যাংক গর্বনর ড. ফজলে কবির, এ্যাটর্নি জেনারেল মোঃ মাহবুবে আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, একটা চুরি হয়েছে, মামলার ব্যাপার আছে। এখন এটা নিয়ে কথা বলা ঠিক হবে না। তিনি বলেন, আজকে বসেছিলাম, আমাদের যে মানিলন্ডারিং এ্যাক্ট আছে-সেটা দেখার দরকার আছে কি না। এ আইনটা নিয়ে আমরা কত দূর যেতে পারি-কোন সংশোধন প্রয়োজন হবে কি না।
×