ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ইফতেখারুল ইসলাম

অটোরিক্সার নৈরাজ্য

প্রকাশিত: ০৬:১৯, ২৬ অক্টোবর ২০১৭

অটোরিক্সার নৈরাজ্য

কেউ যদি মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ খাইয়ে রোগীকে সুস্থ করতে চান, তবে রোগীর মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে। একই কথা খাটে মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহনের ক্ষেত্রেও। লক্কড়-ঝক্কড় বডিকে মেরামত করা যায় কিন্তু আয়ুষ্কাল পেরুনো গাড়ির ইঞ্জিন তো আর রঙের প্রলেপ দিয়ে নতুনের মতো করে তোলা যায় না। ওই ইঞ্জিন দিয়ে পুনরায় যানবাহন চালানো হলে সেটি স্বাভাবিকভাবেই বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। সেই যান অটোরিক্সাই হোক বা বাস-মিনিবাসই হোক। অটোরিক্সার মতো ছোট বাহনের বেলায় আবার চেসিস না বদলে নতুন ইঞ্জিন সংযোজনও হয়ে উঠতে পারে বিপজ্জনক। এক শ্রেণির অসাধু গাড়িমালিকরা ঠিক এধরনের কাজই করতে চান। ফাঁকি দিয়ে অপকর্মটি করতে সক্ষম না হলে, অর্থাৎ সড়ক নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ কঠোর আইন অনুসরণ করলে মালিকরা অন্যায্য দাবি তোলেন। এটিকে অবশ্য দাবি না বলে আবদার বলাই সংগত। ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলাচলরত সিএনজিচালিত অটোরিক্সার পুরনো ইঞ্জিন ও গ্যাস সিলিন্ডার প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে ইকোনমিক লাইফ (আয়ুষ্কাল) ৬ বছর বৃদ্ধির দাবি করেছেন মালিকেরা। সিএনজি অটোরিক্সার মতো হালকা এবং সড়কে অতিরিক্ত সময় ধরে চলাচলকারী যানের ক্ষেত্রে পনের বছরই যথেষ্ট সময় বলে মনে হয়। কেননা এইসব যান দিনে ১৬ ঘণ্টা চালানো হয়। ইঞ্জিন আর সিলিন্ডার বদলালেই কি সেটি অতিরিক্ত ছয় বছর চলাচলের উপযুক্ত হয়ে উঠবে! অধিক মুনাফালোভই এমন অপরিণামদর্শী চিন্তার কারণ। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক অটোরিকশা রীতিমতো ‘চলন্ত বোমায়’ পরিণত হয়ে আছে। এর আগে সিলিন্ডার পরীক্ষাসহ ছয়টি শর্তে পুরোনো অটোরিকশার মেয়াদ বাড়ানোর অভিজ্ঞতা কি সুখকর হয়েছে? মালিক বা চালক কেউ কোনো শর্ত পূরণ করেননি। এই নৈরাজ্য এখনই বন্ধ করতে হবে। সিএনজিচালিত অন্তত ১০ হাজারের বেশি মেয়াদোত্তীর্ণ অটোরিকশা, যা শর্ত মোতাবেক অনেক আগেই সড়ক থেকে প্রত্যাহার করার কথা ছিল, সেগুলো এখনো দাপটের সঙ্গে চলছে। এসব আর প্রশ্রয় দেওয়া ঠিক হবে না। আমরা আশা করবো কর্তৃপক্ষ জনস্বার্থ পরিপন্থী, মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ এবং মোটরযান আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হবে এমন কোনো কার্যক্রমের অংশীদার হবে না। আম্বরখানা, সিলেট থেকে
×