ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শিববাড়িতে দেয়াল ভেঙ্গে সাঁজোয়া যান

প্রকাশিত: ২২:৩৫, ২৬ মার্চ ২০১৭

শিববাড়িতে দেয়াল ভেঙ্গে সাঁজোয়া যান

জনকন্ঠ রিপোর্ট ॥ সিলেট মহানগরের শিববাড়ি জঙ্গি আস্তানা ‘আতিয়া মহলের’ পাশের একটি ভবনের দেয়াল ভেঙে সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যান জঙ্গিদের অবস্থান করা ভবনে ঢুকে পড়েছে। এ সময় বেশ কয়েকটি শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, সকাল ১০টা ১মিনিট, ১০টা ৭মিনিট ও ১১টা ৪৩ মিনিটে শক্তিশালী তিনটি বোমার বিস্ফোরণ হয় আতিয়া মহল ও আশপাশে। এর মধ্যে শেষ বিস্ফোরণটি ছিল খুবই শক্তিশালী। বিস্ফোরণের পর গোটা এলাকা কেঁপে ওঠে। এদিকে, রোববার সকালে সিলেট মহানগর পুলিশের কমিশনার মো. গোলাম কিবরিয়া শনিবারের হামলায় হতাহত ব্যক্তিদের দেখতে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। সেখানে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি কথা বলেন। এ সময় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন, জঙ্গি আস্তানার অভিযানস্থলের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনো ধরনের গাফিলতি ছিল না। যে যার মতো চেষ্টা করে গেছেন। পুলিশ সব সময় সতর্ক ছিলো। দুপুর ২টার দিকে রিকাবীবাজারস্থ পুলিশ লাইন মাঠে বোমায় নিহত দুই পুলিশ পরির্দশকের জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এরপর নিহতদের নিজ নিজ গ্রামের বাড়িতে মরদেহ পাঠিয়ে দেয়া হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। এছাড়া শনিবার রাত ১২টা ১মিনিট থেকে পরবর্তী আদেশ না দেয়া পর্যন্ত দক্ষিণ সুরমার হুমায়ূন রশীদ চত্বর, সিলেট-ফেঞ্চুগঞ্জ সড়ক, পাড়াইরচক থেকে পীর হবিবুর রহমান চত্বর পর্যন্ত সব ধরনের সভা-সমাবেশ ও দলবদ্ধভাবে চলাফেরা করতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আতিয়া মহল থেকে উদ্ধার করা ৭৮ জনকে রোববার সকালে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সিলেট মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গণমাধ্যম) জেদান আল মুসা। উল্লেখ্য, দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার আতিয়া মহলে দুই দিন ধরে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। `অপারেশন টোয়াইলাইট` নামের এ অভিযান পরিচালনা করছে সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো। সিলেটের দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ি এলাকার পাঠানপাড়া সড়কের পাশে অবস্থিত পাঁচতলা বিশিষ্ট দুটি ভবনের নাম আতিয়া মহল। সিলেট নগরের আতিয়া ট্রাভেলসের স্বত্বাধিকারী দক্ষিণ সুরমার শিববাড়ির বান্দরঘাটের বাসিন্দা সাবেক সরকারি কর্মচারী উস্তার মিয়া ওই ভবনের মালিক। এই বাড়িতে জঙ্গিরা আস্তানা করেলে এমন সন্দেহে গত বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটায় থেকে বাড়িটি ঘিরে রাখে পুলিশ। শুক্রবার দিনভর পুলিশ, সোয়াট ও সেনা সদস্যরা বাড়িটিকে ঘিরে রাখেন। এসময় হ্যান্ডমাইকে করে বার বার সন্দেহভাজন জঙ্গিদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানানো হয়। তবে এতে সাড়া মিলেনি। অবশেষে বাড়িটি ঘিরে রাখার প্রায় ত্রিশ ঘন্টা পর শনিবার সকালে চূড়ান্ত অভিযান ‘টোয়াইলাইট’ শুরু করেন সেনা সদস্যরা। রোববার বেলা দেড়টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অভিযান চালাচ্ছেন সেনাবাহিনীর প্যারা কমান্ডো ব্যাটালিয়নের সদস্যরা।
×