ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ধ্রুব হাসান

‘ব্যাটেল অব মাইন্ড’

প্রকাশিত: ০৬:৫২, ১০ জানুয়ারি ২০১৭

‘ব্যাটেল অব মাইন্ড’

রাহাত সবেমাত্র একটি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করে বের হয়েছে। দুই ভাই আর এক বোনের মধ্যে সবার বড় রহাত। ওর কাঁধে অনেক দায়িত্ব কারণ ওর বাবা একটি ছোটখাটো চাকরি করেন। তাই রাহাত চায় তার বাবার কষ্ট লাঘব করতে। কিন্তু বর্তমানে চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কিভাবে যে ভাল একটি চাকরি পাবে। আর কিভাবেই নিজেকে যোগ্য করে তুলবে চাকরিদাতাদের কাছে, সে চিন্তাই প্রতিনিয়ত ঘুরপাক খেতে থাকে মাথায়। রাহাতের মতো ওর বন্ধু জামিল, মিলন, সন্দীপ ওদের ও একি চিন্তা। কিন্তু কিভাবে এই সবকিছুর সমাধান দিতে ব্যাটেল অব মাইন্ডস। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অভিনবত্বের অনন্য উদাহরণ ব্যাটেল অব মাইন্ডস। এটা চাকরি জগতে প্রবেশের আগেই শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসের ভিত তৈরি করতে এই ধরনের উদ্যোগের জুড়ি নেই। অনেক সময় আশানুরূপ চাকরি না পেয়ে হতাশায় ভুগতে থাকেন অনেকেই। তবে হতাশ হলে চলবে না। হতাশ হয়ে বসে থাকলে এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না সামনের দিকে। তাই প্রয়োজন ধৈর্য। এ ধৈর্যই পারে আপনার চাহিদা অনুযায়ী চাকরির খবরটি দিতে। প্রতি বছরই প্রায় দুই লাখ শিক্ষিত তরুণ-তরুণী প্রবেশ করছে চাকরির বাজারে। কিন্তু সেইসঙ্গে চাকরির ক্ষেত্র খুব একটা বাড়ছে না। আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে বাংলাদেশের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেই। আগে যে পরিমাণ কাজ তিন ব্যক্তি করত এখন এক ব্যক্তিকেই সেই কাজ করতে হয়। ফলে প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক চাকরির পদসংখ্যা কমছেই। কিন্তু তাই বলে যে আপনাকে হতাশ হতে হবে তা নয়। নিজেকে যোগ্য করে তুলুন প্রতিষ্ঠানের চাহিদানুযায়ী। ‘প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আর কর্পোরেট জগতের মধ্যে যে দূরত্ব বা ভিন্নতা থাকে তার সেতুবন্ধন ব্যাটেল অব মাইন্ডস। কাজের জগতে যাত্রা শুরু“করার আগেই ব্যাটেল অব মাইন্ডসে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা বাস্তবতা সম্পর্কে ধারণা পেয়ে যায়। শুধু তাই নয়, যেহেতু বাস্তব প্রেক্ষাপট নিয়ে এই আয়োজন থাকে তাই শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা, দলগতভাবে কাজ করার ক্ষমতা সর্বোপরি নেতৃত্ব প্রদানে তাদের সক্ষমতাও বেরিয়ে আসে।’ ব্যাটেল অব মাইন্ডস ২০১৫-এর বিজয়ী জিদনী রুবাইয়াত্ সোম্য এখন বিএটি বাংলাদেশের কর্মকর্তা। ব্যাটেল অব মাইন্ডসে অংশগ্রহণ করার কারণেই কর্পোরেট জগতের সম্পর্কে ধারণা পেয়েছিলেন। যা রুবাইয়াত্ সোম্য কাজের জগতকে সহজ করেছে। বাস্তবিক চাকরিজীবনে যুক্ত হয়ে আমার উপলব্ধি আসলেই ব্যাটেল অব মাইন্ডস প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও কর্মজগতের সেতুবন্ধন।’ উল্লেখ্য, ২০০৪ সাল থেকে শুরু হওয়া ব্যাটেল অব মাইন্ডেসর এবারের আয়োজনে ১৮টি পাবলিক এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩০০’র বেশি শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। গত বছর ‘ব্যাটেল অব মাইন্ডস-২০১৬’ এ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস এ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ)। প্রথম রার্নাস আপ এবং দ্বিতীয় রানার্স আপ যথাক্রমে বুয়েট এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির দল। হলি আর্টিজান হামলার পরবর্তীতে রেস্টুরেন্ট ব্যবসার স্থবিরতা কাটাতে গত বছরের ১ জুলাই হলি আর্টিজান হামলার পরবর্তীতে আতঙ্ক আর অনিশ্চয়তায় স্থবির হয়ে পড়ে রেস্টুরেন্ট ব্যবসা। সেই স্থবির পরিস্থিতি কাটিয়ে রেস্টুরেন্টগুলোর বিক্রি বাড়ানোর চ্যালেঞ্জ দেয়া হয় ব্যাটেল অব মাইন্ডসে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের। বিশ্ববিদ্যালয় ভিত্তিক ৪ জন করে ১০টি দল গঠন করা হয়। দশটি দল দশ দিনের জন্য ঢাকার দশটি রেস্টুরেন্ট পরিচালনার দায়িত্ব পায়। রেস্টুরেন্ট উদ্যোক্তাদের পরামর্শ নিয়ে খাবারের তালিকা, খাবারের দাম, অফারের প্রচারণা, অফার নিয়ে গ্রাহকদের প্রতিক্রিয়া সিদ্ধান্তই উদ্যোক্তা হিসেবে পরিচালনা করে এই চার তরুণ শিক্ষার্থীদের দলগুলো। কোন ধরনের পূর্ব অভিজ্ঞতা ছাড়াই দশ দিনের রেস্টুরেন্ট পরিচালনার সফলতার ভিত্তিতে চূড়ান্ত পর্বের জন্য নির্ধারিত হয় সেরা পাঁচটি দল।
×