
ছবিঃ সংগৃহীত
চার্জ কম থাকলেই আশপাশে খোঁজা শুরু হয়—“চার্জার আছে?” বিশেষ করে বন্ধু বা সহকর্মীর ফোনের চার্জার দিয়েই আমরা নির্বিঘ্নে ফোন চার্জ করে ফেলি। কিন্তু জানেন কি, এই অভ্যাসেই ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আপনার প্রিয় ফোনটি?
বিশেষজ্ঞদের মতে, অন্যের চার্জার ব্যবহার করা থেকে হতে পারে একাধিক বিপদ ও ক্ষতি। চলুন জেনে নিই সেই ভয়ঙ্কর দিকগুলো—
অন্যের চার্জার ব্যবহারে যে ৫টি ভয়ঙ্কর ক্ষতি হতে পারে:
১. হার্ডওয়্যার ক্ষতির ঝুঁকি
সব ফোনের চার্জিং স্পেসিফিকেশন এক নয়। অন্য চার্জারে ভোল্টেজ বা অ্যাম্পিয়ার বেশি হলে আপনার ফোনের মাদারবোর্ড বা ব্যাটারি সার্কিট পুড়ে যেতে পারে।
২. ব্যাটারির আয়ু দ্রুত কমে যায়
ভিন্ন মানের চার্জার দীর্ঘ সময় ব্যবহারে ব্যাটারির উপর চাপ পড়ে। ফলে ব্যাটারির সেল ড্যামেজ হয়, চার্জ ধরে না বা অল্পতেই ব্যাটারি ড্রেইন হয়ে যায়।
৩. অতিরিক্ত গরম হয়ে ফোনে আগুন লাগার ঝুঁকি
কম মানের বা ভারি চার্জার ব্যবহার করলে ফোন অস্বাভাবিকভাবে গরম হয়ে যায়, যা একসময় বিস্ফোরণ বা শর্ট সার্কিট ঘটাতে পারে।
৪. চিপসেট বা প্রসেসরের ক্ষতি
একাধিকবার অনুপযুক্ত চার্জার ব্যবহারে ফোনের সিস্টেম প্রসেসর ও সেন্সর ড্যামেজ হতে পারে, যার কারণে ফোন স্লো হয়ে যায় বা অটো-রিস্টার্ট দেয়।
৫. ভাইরাস বা ম্যালওয়্যার প্রবেশের আশঙ্কা
বিশেষ করে পাবলিক চার্জিং পোর্ট বা স্মার্ট চার্জার থেকে "জুস জ্যাকিং" নামক হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে আপনার ফোনে প্রবেশ করতে পারে ভাইরাস বা স্পাইওয়্যার।
কী করবেন?
✔️ চেষ্টা করুন সবসময় অরিজিনাল চার্জার ব্যবহার করতে।
✔️ অন্য চার্জার ব্যবহার করলেও ভোল্টেজ ও অ্যাম্পিয়ার ম্যাচিং কিনা দেখে নিন।
✔️ পাওয়ার ব্যাঙ্ক ব্যবহার করলে ব্র্যান্ডেড ও সঠিক রেটিং যুক্ত ব্যাঙ্ক ব্যবহার করুন।
✔️ অনিরাপদ বা অচেনা চার্জার থেকে দূরে থাকুন।
✔️ দ্রুত চার্জিং ফিচার থাকলেও সবসময় সেটি চালু রাখা এড়ান।
বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন?
"একেক ফোন একেক রকম চার্জিং স্ট্যান্ডার্ডে চলে। অন্যের চার্জার ব্যবহারে যদি সিস্টেম সামঞ্জস্য না পায়, তাহলে ফোন ক্ষতিগ্রস্ত হতে বাধ্য।" — প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ তন্ময় দত্ত
অনেকেই ভাবেন, ‘চার্জার তো চার্জারই—সবারই তো এক কাজ!’ এই ধারণাই আসলে সবচেয়ে বড় ভুল। আজকের দামে একটি স্মার্টফোন কোনো ছোটখাটো বিনিয়োগ নয়। তাই সামান্য অসচেতনতায় ফোনটির আয়ু কমিয়ে ফেলবেন না। নিজের ফোনের জন্য নিজের চার্জার—এই নীতিই হোক প্রযুক্তিতে বুদ্ধিমত্তার পরিচয়।
ইমরান