ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেলেন নতুন এক সত্তা!

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৩:৩৮, ১ জুলাই ২০২৫

বিজ্ঞানীরা খুঁজে পেলেন নতুন এক সত্তা!

ছবি: সংগৃহীত

জীবনের সংজ্ঞা কি আসলেই নির্দিষ্ট? প্রাণী বা এককোষী জীব, যাদের নিজস্ব শক্তি উৎপাদন, বংশবৃদ্ধি ও বিপাকক্রিয়া আছে—তারা তো ‘জীব’ হিসেবে গণ্য হয়। কিন্তু ভাইরাস? তারা নিজে থেকে এসব কিছু করতে পারে না, বরং হোস্টের উপর নির্ভর করে। এ কারণেই ভাইরাসকে অনেক সময় জীব বলেই স্বীকার করা হয় না।

কিন্তু সম্প্রতি কানাডা ও জাপানের বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করেছেন এক রহস্যময় জীব—যেটা ভাইরাস আর জীব কোষের মাঝামাঝি কিছু। নাম রাখা হয়েছে একটি মাইথোলজিকাল জাপানি দেবতার নামে, ‘Sukunaarchaeum mirabile’, যার আকৃতি ক্ষুদ্র। এটি নিজে RNA তৈরি করে তবু হোস্ট ছাড়া টিকে থাকতে পারে না!

এই নতুন সত্তাটি নিজের রিবোজোম ও মেসেঞ্জার RNA তৈরি করতে পারে, যা সাধারণ ভাইরাসের ক্ষমতার বাইরে। কিন্তু এর জিনোম অত্যন্ত ক্ষুদ্র—মাত্র ২,৩৮,০০০ বেস পেয়ার। তুলনায়, আর্কিয়ার সবচেয়ে ছোট সম্পূর্ণ জিনোম প্রায় ৪,৯০,০০০ বেস পেয়ার। অর্থাৎ, Sukunaarchaeum হলো আর্কিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে ক্ষুদ্র জিনোমধারী সত্তা।

বিজ্ঞানীরা বলেন, “এর জিনোমে কোনো সাধারণ বিপাকীয় পথ নেই, বরং কেবল ডিএনএ প্রতিলিপি, ট্রান্সক্রিপশন ও ট্রান্সলেশন-এর জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ আছে।"

অর্থাৎ, এটি নিজে থেকে শক্তি তৈরি করতে পারে না, খাবার হজম করতে পারে না—সবকিছু করতে হয় হোস্টের ওপর নির্ভর করে। তবু এটিকে ভাইরাস বলা যাচ্ছে না, কারণ এটি নিজেই নিজের জিন অনুলিপি করতে পারে। এই দ্বৈত অবস্থানই এটিকে ব্যতিক্রমী করে তুলেছে।

এই প্রাণীটি আবিষ্কারের নেপথ্যে ছিলেন ডালহৌসি বিশ্ববিদ্যালয়ের মলিক্যুলার বায়োলজিস্ট রিও হারাডা। তিনি ও তার দল Citharistes regius নামক একটি সামুদ্রিক প্ল্যাঙ্কটনের জিনোম বিশ্লেষণ করার সময় একটি অপরিচিত ডিএনএ লুপ খুঁজে পান। সেটি ছিল আর্কিয়া গোত্রের, কিন্তু সম্পূর্ণ নতুন।

এই আবিষ্কার নতুন করে প্রশ্ন তোলে জীবন বলতে আমরা আসলে কী বুঝি?
এ আবিষ্কারের পর গবেষকদল বলেন, “Sukunaarchaeum এমন এক স্তরে দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে সাধারণ সেলুলার জীব ও ভাইরাসের পার্থক্য ঘুচে যায়। এটি কোষীয় বিবর্তনের ধারা নিয়েও আমাদের ভাবতে বাধ্য করছে।”

মুমু ২

×