
ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইনের ভবিষ্যদ্বাণী অনুসরণ করে আবিষ্কৃত হলো একটি নতুন বহির্গ্রহ। লিথুয়ানিয়ার ভিলনিয়াস বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বে, পোল্যান্ডসহ একাধিক দেশের বিজ্ঞানীদের যৌথ গবেষণায় আবিষ্কৃত গ্রহটি মহাকর্ষীয় মাইক্রোলেন্সিং পদ্ধতিতে শনাক্ত করা হয়েছে। এ পদ্ধতি আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতার তত্ত্বের ওপর ভিত্তি করে তৈরি।
‘২০২১ উয়ে বি’ নামের গ্রহটি গ্যালাক্সির স্ফীতিস্থলে, পৃথিবী থেকে প্রায় ৩ হাজার ২০০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। বৃহস্পতির মতো গঠনের এ গ্রহটি একটি ক্ষুদ্র ও ম্লান এম শ্রেণির বামন নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘূর্ণায়মান, যার একটি পূর্ণ আবর্তন সম্পন্ন হতে সময় লাগে প্রায় ৪ হাজার ১৭০ দিন—অর্থাৎ, পৃথিবীর হিসাবে প্রায় ১১ বছর।
বিজ্ঞানীরা জানান, কোনো বড় বস্তু যখন একটি দূরবর্তী নক্ষত্রের সামনে দিয়ে যায়, তখন সেই নক্ষত্রের আলো বাঁক নেয় ও অনেক সময় বৃদ্ধি পায়—এ আলোকবিকৃতি থেকেই মাইক্রোলেন্সিংয়ের মাধ্যমে গ্রহের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়।
লিথুয়ানিয়ান গবেষক দলের প্রধান মারিয়াস মাসকোলিউনাস বলেন, ‘এ ধরনের আবিষ্কারে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়, কারণ উৎস নক্ষত্র ও গ্রহের সঠিক সারিবিন্যাস খুবই বিরল। আবার যে সমস্ত নক্ষত্র পর্যবেক্ষণ করা হয়, তার ৯০ শতাংশই নিজস্ব কারণে কম্পন করে, তাই সঠিক তথ্য বের করা বেশ জটিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘মাইক্রোলেন্সিং অনেকটা একটি পাখির ছায়া দেখে তার রূপ-রঙ বোঝার মতো। আপনি সরাসরি কিছু দেখছেন না, কিন্তু ছায়া থেকেই বিশ্লেষণ করছেন এটি চড়ুই, নাকি রাজহাঁস। গ্রহটি আমাদের থেকে কত দূরে, সেটিও এমনভাবেই বোঝা যায়।’
বিজ্ঞানীদের মতে, গ্যালাক্সির কিনারায় থাকা এ গ্রহের আবিষ্কার গ্রহ গঠনের প্রচলিত তত্ত্বগুলোকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করছে। কারণ, এত দূরের ও এমন পরিবেশে গ্রহের অস্তিত্ব বিজ্ঞানীদের ধারণার বাইরে ছিল।
সূত্র: এনডিটিভি।
রাকিব