নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ২৯ অক্টোবর ॥ রানীশংকৈ?ল উপজেলার রাজোর গ্রামের কৃষিজমিতে ইটভাঁটি স্থাপনের কাজ চলছে। যেখানে ভাঁটি নির্মাণ করা হচ্ছে, তার চারপাশ সবুজে ঘেরা, ফসলি জমি। ওই জায়গায় ইটভাঁটি হলে ধোঁয়ায় জমির ফসল, ফলের বাগান, গাছপালা ক্ষতিগ্রস্ত এবং পরিবেশ দূষিত হবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
এলাকার কয়েক বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত আগস্ট মাসের শুরুর দিকে ইটভাঁটি নির্মাণের উদ্যোগ নেন হাসান আলী নামের এক ব্যবসায়ী।
শুক্রবার রাজোর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কৃষিজমিতে ইটভাঁটি নির্মাণ করছেন ১০ থেকে ১২ শ্রমিক। চিমনির কাজ শেষ হয়েছে। চলছে চুল্লির নির্মাণ কাজ। নির্মাণাধীন ওই ইটভাঁটির পশ্চিমে কাতিহারহাট-নেকমরদ সড়ক।
সেখানে ভাঁটির প্রবেশদ্বার করা হয়েছে। ভাঁটিটির নাম দেয়া হয়েছে ‘আরবিবি ব্রিকস’। কয়েকদিনের মধ্যেই চালু হবে বলে জানান শ্রমিকরা। ইট প্রস্তুত ও ভাঁটি স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন অনুযায়ী, কৃষিজমি, সরকারী বা ব্যক্তিমালিকানাধীন বন, অভয়ারণ্য, বাগান ও জলাভূমি এলাকায় ইটভাঁটি স্থাপন দণ্ডনীয় অপরাধ। স্থানীয় চাষী পুলিন চন্দ্র বলেন, ‘শুনেছি, আবাদি জমিতে ইটভাঁটি নির্মাণ বেআইনি। তাহলে এ ইটভাঁটি কী ভাবে হচ্ছে?’ গ্রামের আরেক চাষী রমেন চন্দ্র বলেন, পাশের গ্রামের জমিতে ধান, ডাল, ভুট্টা চাষ হতো। সেই জমিতে ইটভাঁটি স্থাপনের পর এখন তা পুকুর হয়ে গেছে। এখানে ভাঁটি স্থাপন হলে আশপাশের জমিতে আর ফসল চাষ করা যাবে কি না, এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি।
রানীশংকৈল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাজেদুর রহমান বলেন, কৃষিজমিতে ভাঁটি স্থাপনের অনুমতি দেয়ার কোন সুযোগ নেই। পরিবেশ অধিদফতর রংপুর কার্যালয় সূত্র জানায়, নীতিমালা অনুযায়ী নতুন ইটভাঁটি স্থাপনের জন্য পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় শর্তপূরণ সাপেক্ষে পরিবেশগত ছাড়পত্র নিতে হয়। এই ছাড়পত্র পাওয়ার পর আরও কিছু বিধিনিষেধ ও শর্তপূরণ সাপেক্ষে জেলা প্রশাসক অনুমোদন (লাইসেন্স) দেন।
পরিবেশ অধিদফতরের রংপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আখতারুজ্জামান বলেন, ‘ফসলি জমিতে ইটভাঁটি নির্মাণ করা যাবে না। করলে তা হবে অবৈধ।’ ইটভাঁটির মালিক হাসান আলী বলেন, ‘যে জমিতে ভাঁটি তৈরি করা হচ্ছে, তা আমারই।’
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: