ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

কর্মশালায় লেখক সাংবাদিক, প্রকাশক ও বিক্রেতাদের অভিযোগ

বিদেশী বই অনুবাদে কোন নিয়মকানুন মানা হচ্ছে না

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ১০ জুন ২০১৬

বিদেশী বই অনুবাদে কোন নিয়মকানুন মানা হচ্ছে না

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জাপান ও অন্যান্য উন্নত দেশের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে কপিরাইটের অন্তর্নিহিত নীতিবাক্য শিশুদের পাঠ্য পুস্তকে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েছেন লেখক, প্রকাশক ও পুস্তক বিক্রেতারা। তারা বলছেন, জমি বা হীরের মুকুট যেমন মূল্যবান সম্পদ, তেমনি নিজের মেধাও সমান মূল্যবান সম্পদ। তবে নিজের এই সৃষ্টিশীল সম্পদ নিকটতম পুত্রকন্যাকেও হস্তান্তর করা যায় না। এই বোধ শিশু বয়সেই জাগ্রত হওয়া উচিত। বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নাট্যশালা সেমিনার কক্ষে আয়োজিত এক কর্মশালায় বক্তারা এসব কথা বলেন। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীন কপিরাইট অফিস ‘কপিরাইট আইন যুগোপযোগীকরণ ও সাহিত্যকর্মের স্বত্বাধিকারীর স্বার্থ সংরক্ষণ শীর্ষক এই কর্মশালার আয়োজন করে। কপিরাইট বোর্ডের চেয়ারম্যান ও অতিরিক্ত সচিব মশিউর রহমান এতে সভাপতিত্ব করেন। কর্মশালায় কপিরাইট ও কপিরাইট আইনের বিভিন্ন বিষয়ে তিনটি প্রবন্ধ উপস্থাপিত হয়। এগুলো উপস্থাপন করেন কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, বাংলাদেশ জ্ঞান ও সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির সভাপতি ওসমান গনি এবং বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সভাপতি মোঃ আরিফ হোসেন। এসব প্রবন্ধে বলা হয়, সাহিত্য যে নেশার পাশাপাশি একটা অর্থকরী পেশা হতে পারে, এটা দেশের দু-একজন কবি-সাহিত্যিক ছাড়া অন্যরা ভাবতেই পারেননি। ফলে সাহিত্যস্রষ্টার মেধাস্বত্ব চেতনা এখানে তেমনভাবে গড়ে উঠেনি। মেধাস্বত্ব রক্ষায় আইনও সমান গুরুত্বপূর্ণ। দেশে মেধাস্বত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে যথাযথ আইন ও আইনী প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তবে এসবের প্রয়োগ ও কার্যকারিতা ‘যথাযথ’ কিনা বিবেচ্য। কপিরাইট আইন সম্পর্কে দেশের লেখক, প্রকাশক ও বিক্রেতা-কারোরই স্পষ্ট কোন ধারণা নেই। এই বোধ থাকতে হবে যে, মেধাস্বত্বহীন সৃষ্টি যেমন বৈধ সৃষ্টি নয়, তেমনি মেধাস্বত্বহীন রচয়িতাও বৈধ স্রষ্টা নন। কর্মশালায় লেখক, সাংবাদিক, প্রকাশক সমিতি ও পুস্তক বিক্রেতা সমিতির কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা পর্বে তাঁরা বলেন, বিদেশী বইয়ের অনুবাদের ক্ষেত্রে কোন নিয়মই দেশে মানা হচ্ছে না। বড় বড় প্রতিষ্ঠান যথাযথ অনুমতি ছাড়াই গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজের মতো লেখকদের বইয়ের অনুবাদ বের করছেন। আবার প্রকাশিত অনেক বই বাজারে আসার কয়েকদিন পরই অনলাইন-ওয়েবসাইটে পাওয়া যাচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে মেধাস্বত্ব তো দূরের কথা লেখক বা প্রকাশকের অনুমতি পর্যন্ত নেয়া হচ্ছে না। তাই কপিরাইট আইন ই-বুক বা অনলাইন মেধাস্বত্বের বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। তাছাড়া আইনের যথাযথ প্রয়োগের স্বার্থে স্বনির্ভর কপিরাইট অফিস প্রতিষ্ঠা, লোকবল ও সক্ষমতাও বাড়ানো প্রয়োজন। বর্তমানে কপিরাইট অফিসে অনুমোদিত ৪৯ লোকবলের বিপরীতে আছেন ২৯। কর্মশালার সমস্ত সুপারিশ ও প্রস্তাবনা কপিরাইট আইন সংশোধনের ক্ষেত্রে বিবেচনায় নেয়া হবে বলে জানান কপিরাইট বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ মশিউর রহমান।
×