
ছবি: সংগৃহীত।
অনেকেই সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখেন, বালিশ ভিজে গেছে—মুখ দিয়ে লালা পড়ে গেছে রাতে। এটি অনেক সময় বিব্রতকর মনে হলেও, চিকিৎসাবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে এটি একেবারে অবহেলা করার মতো নয়। কারণ নিয়মিত মুখ দিয়ে লালা পড়া শরীরে লুকিয়ে থাকা কিছু শারীরিক বা নিউরোলজিক্যাল সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে। আবার কিছু অভ্যাসজনিত কারণও এর পেছনে কাজ করে।
তাহলে আসুন জেনে নিই ঘুমের সময় মুখ দিয়ে লালা পড়ার কারণ ও এর কার্যকর প্রতিকার।
কেন মুখ দিয়ে লালা পড়ে?
১. পাশ ফিরে ঘুমানো বা মুখ খোলা রেখে ঘুমানো
অনেকেই পাশে ফিরে ঘুমান বা মুখ খোলা রেখে ঘুমান। এতে লালা সহজেই মুখ দিয়ে বের হয়ে আসে।
২. সাইনাস বা নাক বন্ধ থাকা
নাক বন্ধ থাকলে মানুষ মুখ দিয়ে শ্বাস নেয়। এর ফলে মুখ শুকিয়ে যায় ও লালা মুখের বাইরে চলে আসে।
৩. গ্যাস্ট্রিক ও এসিড রিফ্লাক্স
পেটে অতিরিক্ত অ্যাসিড হলে বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকলে লালা নিঃসরণ বেড়ে যেতে পারে।
৪. স্নায়বিক (নিউরোলজিক্যাল) সমস্যা
পারকিনসন, স্ট্রোক বা স্নায়ুজনিত রোগের কারণে মুখের পেশি দুর্বল হলে লালা নিয়ন্ত্রণে সমস্যা হয়।
৫. ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
কিছু ওষুধ—বিশেষ করে স্নায়ু বা মনোরোগের ওষুধ—লালা নিঃসরণ বাড়িয়ে দিতে পারে।
প্রতিকার কী?
১. ঘুমানোর ভঙ্গি পরিবর্তন করুন
পিঠের উপর সোজা হয়ে ঘুমালে লালা পড়া অনেকাংশে কমে যায়।
২. সাইনাসের চিকিৎসা নিন
নাক বন্ধ বা সাইনাসের সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চিকিৎসা শুরু করুন।
৩. জিহ্বার ও মুখের ব্যায়াম করুন
দিনে কয়েকবার মুখ ও জিহ্বার ব্যায়াম করলে মুখের পেশি শক্তিশালী হয় এবং লালার নিয়ন্ত্রণ বাড়ে।
৪. বেশি ঝাল বা অ্যাসিডিক খাবার এড়িয়ে চলুন
এসিড রিফ্লাক্স বা গ্যাস্ট্রিক কমাতে খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করুন।
৫. প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
যদি লালা পড়ার পরিমাণ অতিরিক্ত হয় বা সঙ্গে অন্য কোনো উপসর্গ দেখা যায়, তবে দেরি না করে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করুন।
মুখ দিয়ে লালা পড়া মাঝে মাঝে হলে তেমন সমস্যা নয়, তবে নিয়মিত হলে সেটিকে গুরুত্ব দিতে হবে। স্বাস্থ্যকর ঘুম, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং পেশাদার চিকিৎসা নিতে দেরি করা উচিত নয়। আপনার ছোট একটি লক্ষণই হতে পারে শরীরের বড় কোনো সংকেত।
নুসরাত