ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

আরও ভাল করতে বেশি টেস্ট খেলতে হবে বাংলাদেশকে ॥ আমলা

প্রকাশিত: ০৬:১৮, ৪ আগস্ট ২০১৫

আরও ভাল করতে বেশি টেস্ট খেলতে হবে বাংলাদেশকে ॥ আমলা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ দুই টেস্টে ১০ দিনের মধ্যে তিন দিন খেলা হয়েছে। তাই দুই টেস্ট ড্র, সিরিজ শেষে ফলাফল-বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা সমাবস্থানে। লাভটা কিন্তু হয়েছে বালাদেশেরই। বৃষ্টির আশীর্বাদে সিরিজ ড্র হওয়াতে রেটিং বেড়েছে ৬। আর খেলা না হলেও বিশ্বসেরা টেস্ট দল দক্ষিণ আফ্রিকার রেটিং কমেছে ৫। সে কারণে দারুণ হতাশা ব্যক্ত করে প্রোটিয়া অধিনায়ক হাশিম আমলা আশা জানালেন আইসিসি হয় তো পরবর্তীতে রেটিং বাড়া-কমার বিষয়টি অন্যভাবে বিবেচনা করবে। হতাশা জানালেও আমলা অবশ্য স্বীকার করেছেন পূর্বের যে কোন সময়ের চেয়ে বাংলাদেশ দল ক্রিকেটে যথেষ্ট উন্নতির ছাপ দেখিয়েছে। তবে যে কোন ফরমেটের চেয়ে ওয়ানডেতে সেই উন্নতির গ্রাফটা অনেক উর্ধমুখী দেখতে পাচ্ছেন তিনি। টেস্ট ক্রিকেটেও টাইগাররা দ্রুতই উন্নতি করবে এমন বিশ্বাস তার। কিন্তু সে জন্য বেশি বেশি টেস্ট ম্যাচ খেলতে হবে বাংলাদেশকে এমনটাই মনে করেন আমলা। সোমবার মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট ড্র ঘোষণার পর সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি। ওয়ানডে সিরিজে দুর্দান্ত খেলেছে বাংলাদেশ এবং প্রথমবারের মতো দক্ষিণ আফ্রিকাকে পরাজিত করেছে সিরিজে। তবে টেস্ট ক্রিকেটে এখনও পিছিয়ে আছে যথেষ্ট সেটার ছাপ দুই টেস্টে যতটুকুই হয়েছে সেখান থেকেই স্পষ্ট হয়েছে। এ বিষয়ে আমলা বলেন, ‘বাংলাদেশ অবশ্যই অনেক উন্নতি করেছে গত কয়েক বছরে। অন্য যে কোন ফরমেটের চেয়ে তাদের ওয়ানডে রেকর্ড অনেক ভাল। কিন্তু এতে কোন সন্দেহ নেই যে দলটি ওয়ানডেতে উন্নতি করে তারা অবশ্যই স্বাভাবিকভাবে টেস্ট ক্রিকেটেও উন্নতি করার পথে এগিয়ে যায়। আমি বিশ্বাস করি তারা কয়েক মাস ক্রিকেটের বাইরে ভালভাবেই থাকবে এবং তারপর অস্ট্রেলিয়াকে দেশের মাটিতে পাবে। সুতরাং আমি মনে করি যত বেশি টেস্ট ক্রিকেট তারা খেলবে, এতে কোন সন্দেহ নেই যে সেটা অনেক ভাল হবে তাদের জন্য। অবশ্যই অস্ট্রেলিয়া অনেক ভাল দল এবং অনেক ভাল একটা সিরিজ হবে।’ চট্টগ্রাম ও মিরপুরের ড্রেনেজ ব্যবস্থা দেখে অভিভূত হয়েছেন প্রোটিয়া অধিনায়ক। তার দাবি দক্ষিণ আফ্রিকায় এভাবে বৃষ্টি হলে অনেক আগেই খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করতে হতো। খেলা না হওয়াতে হতাশা জানিয়ে আমলা বলেন, ‘শেষ টেস্ট ম্যাচের তিনদিনই বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়ার পর আমি মনে করি কিছুই ভাল করার নেই। এটা এই ক্ষেত্রে খুবই হতাশার যে আমরা বাংলাদেশে সিরিজ জয়ের অভিপ্রায় নিয়ে এসেছিলাম এবং ভাল ক্রিকেট খেলার জন্য এসেছিলাম। আর অবশ্যই আমরা সেটা করতে পারিনি। আমরা অতৃপ্ত মনোভাব নিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু এটা মেনে নিয়েছি কারণ এ বিষয়ে কিছুই করার নেই।’ আমলা মনে করেন টেস্ট সিরিজ থেকে আসলে সেভাবে প্রাপ্তির কিছু নেই। আর মূলত খেলা না হওয়ার পরেও দক্ষিণ আফ্রিকার রেটিং কমে যাওয়াতে দারুণ হতাশ তিনি। আমলা বলেন, ‘আপনি বুঝতে পারতেন যদি অনেক ক্রিকেট খেলা হতো এবং ১-১ সমতায় ড্র হতো, সেক্ষেত্রে কিছুটা সত্যিকারের প্রতিফলন দেখা যেত। সুতরাং হতে পারে আইসিসির পক্ষ থেকে এ বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হবে। সব দলই যা কিছু ন্যায় এবং সবার জন্য একই রকম সেটাই চাইবে। সুতরাং এটা আমার জন্য খুবই আশ্চর্যের যে ক্রিকেট প্রচুর পরিমাণে খেলা না হলেও সেটা বিবেচনায় না এনে কিছু পয়েন্ট হারাতে হচ্ছে।’ বর্ষাকালে খেলা হওয়াটাই উচিত কি না এখন সেটা ভাবনার বিষয়। এ বিষয়ে আমলা বলেন, ‘আমি যেমনটা বলেছি যে আমি জানি না বাংলাদেশের আবহাওয়াটা কেমন আচরণ করে, কিন্তু যদি এমনটাই হয় সেক্ষেত্রে অবশ্যই ক্রিকেট খেলার উপযুক্ত সময় নয় এটা। কিন্তু সেটা আমার সিদ্ধান্ত নয়। এটা যারা নির্ধারণ করে তাদেরই সিদ্ধান্ত। কিন্তু আমরা ওয়ানডে খেলতে পেরেছি এবং শেষ করতে পেরেছি। হয় তো ওয়ানডে ম্যাচগুলোই অনেক ভাল হতে পারে এ সময়।’ মিরপুর টেস্টের পঞ্চম ও শেষ দিনে হয় তো খেলা সম্ভব ছিল। কিন্তু নরম হয়ে যাওয়া মাঠ এবং অনেক জায়গায় কাদা হয়ে যাওয়াতে সেটা হয়ে যেত ক্রিকেটারদের জন্য ইনজুরি ঝুঁকি। তবে দুই টেস্টে মাত্র তিনদিন খেলা হলেও ইতিবাচক বেশকিছুই দেখছেন আমলা। তিনি বলেন, ‘আমার ক্যারিয়ারে যত খেলেছি এটাই সবচেয়ে বিচিত্র অভিজ্ঞতা অর্জনের টেস্ট সিরিজ। আমার মনে হয় না আমি এমন কোন টেস্ট সিরিজ খেলেছি যেখানে দশদিন খেলার বাইরে থাকতে হয়েছে এবং ৬ দিন বৃষ্টিতে ভেসে গেছে। হয় তো মাত্র দুই ইনিংস খেলার সুযোগ হয়েছে, কিন্তু এ সফর থেকে ইতিবাচক অনেক কিছুই নিতে পারি আমরা। আমি ছেলেদের সঙ্গে মজা করছিলাম এবং বলছিলাম যে একটা উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা এ সফরে এসেছি এবং মেষ পর্যন্ত ডেলের ৪০০ উইকেট হওয়াতে আমরা সৃষ্টি কর্তাকে ধন্যবাদ জানাই। আমরা যদি প্রথম ব্যাট করতাম সেক্ষেত্রে হয় তো ওটার জন্য আরও তিন মাস অপেক্ষায় থাকতে হতো। সুতরাং বেশকিছু ইতিবাচক বিষয় এখানে-সেখানে আছে। কিন্তু এত কম ক্রিকেট খেলে সে সব একসঙ্গে করে বলা কঠিন। বাংলাদেশ সফর তরুণদের জন্য বড় সুযোগ ছিল আরও অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের। দল সুসংবদ্ধ রাখার ক্যাম্প হয়েছে। যদিও দুই টেস্টের পুরোটা খেলা সম্ভব হয়নি কিন্তু প্রস্তুতির ক্ষেত্রে যা প্রয়োজন সেটার অনেক কিছুই হয়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলার বিষয়টা কেমন হতে পারে সে বিষয়টার শিক্ষা এ সফর থেকে তরুণরা নিতেই পারে।’
×