ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

এ্যাশেজের আগে বলছেন কুক

সেরা অর্জনের সুযোগ

প্রকাশিত: ০৭:৩৯, ৭ জুলাই ২০১৫

সেরা অর্জনের সুযোগ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ এ্যালিস্টার কুকের ক্যারিয়ারটা যেন সিনেমার গল্প! ২০০৬ সালে জাতীয় জার্সি গায়ে চাড়ানোর পর গত ৯ বছরে ইংলিশ ক্রিকেটের পুনরুত্থান যেমন দেখেছেন, তেমনি তরুণ অধিনায়ক হিসেবে এ্যাশেজ জয়ের পাশাপাশি সর্বশেষবার আবার হয়েছেন ‘হোয়াইটওয়াশ’, আবার ফর্মহীনতায় জায়গা হয়নি গত ওয়ানডের বিশ্বকাপ দলে! বাংলাদেশে কাছে হেরে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয় ইয়ন মরগানরা। ভেতরে-বাইরে আসে ব্যাপক পরিবর্তন। কঠিন এই অবস্থায় কুলীন ইংলিশদের জন্য এ্যাশেজ পুনরুদ্ধার হতে পারে সেরা অর্জনÑ এমনটাই মনে করছেন চড়াই-উতড়াইয়ের মধ্য দিয়ে টেস্ট অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করা এ্যালিস্টার কুক। ঐতিহ্যের বহু পুরনো লড়াই মাঠে গড়ানোর আগে ইংল্যান্ড অধিনায়ক বলেন, ‘এ্যাশেজ জয় হতে পারে ক্যারিয়ারের সেরা অর্জন। শেষ পর্যন্ত সফল হলে নিজেকে অনেক গর্বিত মনে করব আমি।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টেস্ট ম্যাচটি হবে ওভালে। আর ওই শেষের সময়টাই আমাদের জন্য স্মরণীয় অর্জনের সুযোগ। কারণ, ওই ম্যাচ শেষে আমরা ট্রফি পুনরুদ্ধারের উল্লাস করতে চাই। এমনটাই প্রত্যাশা করছি। সেটি যদি বাস্তবে রূপ নেয়, তবে আসন্ন এ্যাশেজ সিরিজ জয় হবে ক্যারিয়ারের সেরা অর্জন। গোটা ইংল্যান্ডবাসী এখন সেদিকে তাকিয়ে। এ জন্য নিজেকে অনেক গর্বিতও মনে করব।’ এ্যাশেজ নিয়ে সুখ-দুঃখ দুটির স্বাদই আছে কুকের জীবনে। অধিনায়ক হিসেবেও। ২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে ইংল্যান্ডের টেস্ট দলের অধিনায়কত্ব পান কুক। এরপর ভারত ও নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে সিরিজ শেষ করে এ্যাশেজ পরীক্ষায় অবতীর্ণ হন। আর দেশের মাটিতে ২০১৩ সালের সিরিজে মতো এ্যাশেজে ইংল্যান্ডকে নেতৃত্ব দেয়ার সুযোগ পেয়ে যান। প্রথমবারেই বাজিমাত করেন। ৩-০ ব্যবধানে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ইংল্যান্ডকে ‘হ্যাটট্রিক’ এ্যাশেজ জয়ের আনন্দে ভাসান কুক। সুখটা দীর্ঘ হয়নি। বিশ্বকাপের জন্য অনেক আগেভাগে মাত্র ছয় মাসের ব্যবধানে ফিরতি এ্যাশেজে (২০১৩-১৪) অস্ট্রেলিয়া থেকে ৫-০তে হোয়াইটওয়াশ হয়ে দেশে ফিরতে হয় ‘হ্যাটট্রিক’ শিরোপাধারীদের! সমালোচনা বানে বিদ্ধ হন আধুনিক ইংল্যান্ডের অন্যতম সফল ব্যাটসম্যান। বড় কঠিন সময় ছিল সেটি। এ বছর দুটি টেস্ট সিরিজ খেলেছে কুকের দল। প্রথমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর ও পরে ঘরের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে। দুটি সিরিজেই ভাল অবস্থায় থেকেও শেষ পর্যন্ত ড্র করতে হয়েছে তাদের। এক ঝাঁক নবীন ক্রিকেটারের অন্তর্ভুক্তিতে দলে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন, যেটিকে বলা হচ্ছে বদলে যাওয়া ইংল্যান্ড। দুটি সিরিজ ড্র করলেও সার্বিক পারফর্মেন্স একেবারে মন্দ নয়। কুক তাই আশাবাদী, ‘এবার এ্যাশেজ পুনরুদ্ধারের ভাল সুযোগ রয়েছে আমাদের। সিরিজটা দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। তবে এটা ঠিক যে আমরা আন্ডারডগ হিসেবেই মাঠে নামব! কারণ অস্ট্রেলিয়া বর্তমান বিশ্বের অন্যতমসেরা দল। কিন্তু হোম কন্ডিশনের সুবিধাটা আমরা পাব। তারুণ্যের সঙ্গে এটিই হতে পারে আমাদের বড় শক্তি।’ ১১৪ টেস্টে ২৭ সেঞ্চুরির মালিক। দ্বিপক্ষীয় সিরিজ কিংবা টুর্নামেন্টÑ প্রথম ম্যাচটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যেটির ফল বাকি সিরিজে প্রভাব ফেলে। কেমন হবে কার্ডিফে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের প্রথম টেস্টের পিচ? ইংল্যান্ডের পিচ বরাবরই বাউন্সি আর গতিময়, যেখানে পেসারদের ভাল করার সুযোগ বেশি। অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে খুব একটা ভিন্নতা নেই। কার্ডিফের সুফিয়া গার্ডেনের পিচ স্পোটিং হবে বলে আশাবাদী স্টেডিয়ামের কিউরেটর কিথ এক্সটন। তিনি বলেন, ‘আশা করছি পিচ স্পোটিং হবে, প্রথমে পেসারদের জন্য যেমন ময়েশ্চার থাকবে, তেমনি শেষ দিকে স্পিনাররা সুবিধা পাবে, তবে ব্যাটসম্যানরাও বড় ইনিংস খেলতে পারবে।’ ঘরের মাটিতে ইংলিশদের মূল ভরসা জেমস এ্যান্ডারসন-স্টুয়ার্ট ব্রডদের নিয়ে গড়া পেস আক্রমণ। তবে ২০০৯ এ্যাশেজের সফল্যের কথা ভেবে এখানে দুই স্পিনারও খেলানো হতে পারে, সেক্ষেত্রে প্রথম পছন্দ মঈন আলির সঙ্গে থাকবেন আরেক নতুন মুখ আদিল রশিদ, কোচ ট্রেভর বেইলিস তেমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন।
×