
পরিবারের অভাব ঘোচাতে মাত্র দুই বছর আগে সৌদি আরবে পাড়ি জমিয়ে ছিলেন টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বড়চওনা ইউনিয়নের জামালহাঁটকুড়ার তরুণ আরিফ হোসেন (১৮)। সেখানে তার প্রবাস জীবন ভালোই চলছিল। কিন্তু ১৮ জুলাই এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন তিনি।
আরিফের বাবা লাল মিয়া এক যুগেরও বেশি সময় ধরে সৌদি আরবেই আছেন। ছেলের দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তিনি ছুটে যান ছেলের কাছে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস—ছেলের কাছে পৌঁছানোর আগেই শুনতে হয় মৃত্যুর খবর। মুহূর্তেই মাথায় যেন আসমান ভেঙে পড়ে প্রবাসী বাবার মাথায়।
মৃত্যুর খবর বাড়িতে পৌঁছাতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন আরিফের মা, ভাইবোন, আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসী। গোটা এলাকা যেন শোকের ছায়ায় ডুবে যায়।
১২ দিন পর, বুধবার (৩০ জুলাই) ভোর সাড়ে ৫টার দিকে ছেলের লাশ নিয়ে ঢাকায় পৌঁছান প্রবাসী বাবা। সন্তানের লাশ কাঁধে নেয়ার সেই অনুভূতি যেন ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। একসময় যে ছেলেকে হাত ধরে হাঁটা শেখাতেন, আজ তাকেই কবরে শুইয়ে দেবেন বাবা।
ছেলের মৃত্যুর পর বুকভরা শোক নিয়ে কোম্পানির চাকরি ছেড়ে তার লাশ নিয়ে দেশে ফেরেন লাল মিয়া। মাত্র দুই বছর আগে সুস্থ-সবল প্রিয় ছেলেকে বিদায় জানিয়েছিলেন, এবার তাকেই ফিরিয়ে আনলেন কফিনে বাঁধা অবস্থায়।
বুধবার সকালে লাশ বাড়িতে পৌঁছালে আবারও কান্নায় ভেঙে পড়ে পুরো এলাকা। মা ছেলের নিথর দেহ জড়িয়ে ধরে বিলাপ করেন, আর বাবার মুখে কোনো কথা নেই—শোকে পাথর হয়ে যান তিনি।
বুধবার বাদ যোহর জানাজা শেষে প্রবাসী আরিফ হোসেনকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
রাজু