ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৫ শ্রাবণ ১৪৩২

আলৌকিক ভাবে গড়ে ওঠা শরীয়তপুরে গোসাইরহাটের শিবপুরের জ্বীনের মসজিদ

মোঃ আমির হোসেন, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, শরীয়তপুর 

প্রকাশিত: ২৩:০০, ২৯ জুলাই ২০২৫

আলৌকিক ভাবে গড়ে ওঠা শরীয়তপুরে গোসাইরহাটের শিবপুরের জ্বীনের মসজিদ

শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট উপজেলার নাগেরপাড়া ইউনিয়নের শিবপুর গ্রামে অবস্থিত এই মসজিদটিকে এলাকাবাসী ‘জ্বিনের মসজিদ’ নামে চেনে। শোনা যায়, মসজিদটি কোনো মানুষের নকশা ও শ্রমে গড়ে ওঠেনি। অলৌকিকভাবে এক রাতের মধ্যে গড়ে উঠেছে মসজিদটি। তাই স্থানীয়রা এর নাম দিয়েছে ‘জ্বিনের মসজিদ’। 

প্রচলিত ধারণা, আনুমানিক দুইশ’ বছর আগে কোনো এক রাতে অলৌকিকভাবে গড়ে ওঠে এই মসজিদ। আগের দিন পর্যন্ত যেখানে ছিল অথৈ পানি। এক রাতের মধ্যে পানির ভেতর মাটি ফেলে কারুকার্যখচিত একটি মসজিদ নির্মাণ করা কোনো মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। নিশ্চয়ই এটা জ্বিনের কাজ।

স্থানীয় প্রবীণরা দাবি করেন, সম্ভবত দুইশ’ বছর আগে একরাতে জ্বিনেরা এ মসজিদের কাজ শুরু করে। ভোররাতের দিকে পাশের বাড়ির একজন মাছ ধরতে গেলে জ্বিনেরা সেখান থেকে চলে যায়। এজন্য কিছু কাজ অসমাপ্ত থেকে যায়। এখন পর্যন্ত সেভাবেই আছে।

মসজিদটি নির্মিত হওয়ার পর প্রায় ৫০-৬০ বছর কেউ সেখানে নামাজ পড়তে যাননি। কারণ তার আশপাশে তেমন বসতি ছিল না। যে দু’একটা ঘর ছিল, তারা ভয়ে মসজিদের কাছে যেত না। পরে বসতি বাড়ার সাথে সাথে কিছু মানুষ নামাজ পড়তে যেতে থাকে। তখন নামাজের সময় কিছু অপরিচিত মানুষ অংশগ্রহণ করতো বলে কথিত রয়েছে।

প্রায় এক'শো বছর পর মসজিদের কিছুটা সংস্কার করা হয়। তবে ছাদের ওপর ওঠার সাহস এখনো কেউ দেখাননি। সেখানকার সব ধর্মের মানুষ এই মসজিদটিকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করে এবং তাদের ঐতিহ্য হিসেবে দেখে থাকে।

পাঁচ কাঠা জমির ওপর স্থাপিত চতুর্ভূজ আকৃতির মসজিদটি এক গম্বুজবিশিষ্ট। মসজিদের ভেতরে নামাজের জন্য তিনটি কাতার বা লাইন রয়েছে। প্রতি লাইনে কমপক্ষে দশজন দাঁড়াতে পারে। মসজিদে এখনো নির্দিষ্ট কোনো ইমাম নেই বা কেউ মসজিদের অভ্যন্তরে অবস্থান করে না। একা একা কেউ নামাজও পড়তে আসেন না। বিশেষ করে জোহর ও এশার নামাজ পড়তে এখনো ভয় পান মুসল্লিরা। বর্তমানে অনেক কৌতূহলী মানুষ মসজিদটি দেখতে আসে। তাই মসজিদকে ঘিরে জ্বিনের ভয় অনেকটা কেটে গেছে।

 

রিফাত

×