
ছবিঃ সংগৃহীত
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, আমরা যারা দেশপ্রেমিক, যদি একত্রিত হয়ে দেশের পক্ষে, ইসলামের পক্ষে, মানবতার পক্ষে আওয়াজ তুলতে পারি, তাহলে হক আসবে, বাতিল দূর হবে, আলো আসবে, অন্ধকার দূর হবে। আমরা দেশপ্রেমিকরা যদি আওয়াজ তুলতে পারি, তাহলে ক্ষমতাপ্রেমিরা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হবে। এ কারণে আমরা সকলকে আহ্বান জানাবো—আসুন, আমরা সবাই সেই আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে কাজ করি।
তিনি বলেন, আপনারা দেখছেন, ৫ আগস্টের পরে ইসলামের পক্ষে বাংলাদেশের মানুষের একটা হৃদ্যতা সৃষ্টি হয়েছে—সেটাকে আমাদের কাজে লাগাতে হবে। এজন্যই আমরা ঘোষণা করেছি, ইসলামের পক্ষে আমরা চেষ্টা করছি, একটা বাক্স পাঠানো যায় কিনা। আল্লাহর রহমতে সেই প্রক্রিয়ায় আমরা আগাচ্ছি, এগিয়েছি—এখন আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন। আমার ভাই-বোনদের, মা-বোনদের কাছে আমি বলতে চাই, যদি দেশ গঠনের লক্ষ্যে ইসলামের মর্মবাণীর পক্ষে দাওয়াত দিতে পারি, আমার মন বলছে—এ দেশে আগাছা মাথাচাড়া দিয়ে দাঁড়াতে পারবে না।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুপুরে পিরোজপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ পিরোজপুর জেলা শাখার উদ্যোগে ‘প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যার বিচার এবং সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে সুস্থ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের’ দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি আরও বলেন, আমাদের এখন পরিবর্তনের সময় এসেছে। ৫ আগস্টের পরে দেশে যখন অভ্যুত্থান হলো, এরপর যারা পেছনে থেকে দেশ চালিয়েছে, তাদের মাধ্যমে দেশ আবার সুন্দর হবে—এটা ভাবা বোকামি ছাড়া কিছু নয়। তারা তো পরীক্ষিত, নতুন করে আর কী পরীক্ষা দেবে? এজন্য আমরা সবাইকে উদাত্ত আহ্বান জানাবো—আসুন, আমরা দেশটাকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলার জন্য সংস্কার, দৃশ্যমান বিচার এবং পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করি।
তিনি বলেন, বাস্তবতা হলো, সবাই বোঝেও, জানেও—কিন্তু অনেকেই ব্যক্তি ও দলের স্বার্থে ভালো কিছুকে গ্রহণ করতে চায় না, বরং বিতর্কিত করতে চায়। বাংলাদেশের ভেতরে আর বৈষম্য চলবে না—এটাই বাস্তবতা, এটাই ইসলামের ইতিহাস, এটাই আমাদের দাবি।
সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ মুক্তি চায়। ৫৩ বছরে যারা ক্ষমতায় এসেছে, তারা শুধু জনগণকে ধোঁকাই দিয়েছে। চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, গুম-খুন, স্বৈরাচার, ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্তি চায় বাংলাদেশ। আগে গণহত্যার বিচার, তারপর সংস্কার, পরে দেখা যাবে নির্বাচন—এবং সেই নির্বাচন হতে হবে অবশ্যই পিআর (প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) পদ্ধতিতে। কারণ, আর কোনো স্বৈরাচার, ফ্যাসিস্ট বাংলাদেশে জন্ম নিতে পারবে না, ইনশাআল্লাহ।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী আন্দোলনের পিরোজপুর জেলা সভাপতি মাওলানা মুহাম্মাদ ইয়াহইয়া হাওলাদার এবং সঞ্চালনায় ছিলেন জেলা সেক্রেটারি মুহাম্মাদ মনিরুল হাসান।
এছাড়া আরও বক্তব্য রাখেন—ইসলামী আন্দোলনের বরিশাল বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক উপাধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজুল ইসলাম, পিরোজপুর জেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি নজরুল আহসান, ইসলামী যুব আন্দোলনের পিরোজপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মাদ হাফিজুল ইসলাম এবং জাতীয় ওলামা-মাশায়েখ ও আইম্মা পরিষদ পিরোজপুর জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।
মারিয়া