
সোশ্যাল মিডিয়ায় ধনী বিদেশি সেজে বিনিয়োগের প্রলোভন দেখিয়ে বাংলাদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল একটি আন্তর্জাতিক প্রতারক চক্র। র্যাব-১ এর অভিযানে এই চক্রের দুই নাইজেরিয়ান ও এক বাংলাদেশি নারী সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছেন।
র্যাব জানায়, রবিবার রাত থেকে সোমবার পর্যন্ত রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা ও মিরপুর পল্লবীতে চালানো অভিযানে এই চক্রের সদস্য ফ্র্যাঙ্ক কোকো (৩৬), এম্যানুয়েল (৩৫) এবং সুইটি আক্তার (২৭) গ্রেপ্তার হন।
সোমবার রাতে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ জাহিদুল করিম বলেন,
“গ্রেপ্তারকৃতরা স্বীকার করেছে, তারা ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামের মতো মাধ্যমে পরিচয় গোপন রেখে বিদেশি পরিচয়ে বাংলাদেশিদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে। পরে দামী গিফট, বিনিয়োগ, বা কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের নামে টাকা আদায় করত।”
র্যাবের ভাষ্য অনুযায়ী, প্রতারকরা বাংলাদেশি নারীদের মিডিয়া বা ‘কো-অর্ডিনেটর’ হিসেবে ব্যবহার করত। এসব নারীদের মাধ্যমে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ হতো এবং প্রতারণা সফল হলে লভ্যাংশের ১০–১৫ শতাংশ পেত তারা।
গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে—দুটি ল্যাপটপ, চারটি আইফোন, তিনটি স্মার্টফোন, একটি ট্যাব, একটি হার্ডড্রাইভসহ বিভিন্ন ডিভাইস।
র্যাব আরও জানায়, এই চক্রের মাধ্যমে পরিচালিত নগদ ও বিকাশ অ্যাকাউন্টে প্রায় ১৮ লাখ টাকার লেনদেনের প্রমাণ পাওয়া গেছে। এই অ্যাকাউন্টগুলোতে এখনো লেনদেন চলছে। এর বাইরে আরও কয়েকটি মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট শনাক্ত করা হয়েছে, যা উদ্ধার প্রক্রিয়াধীন।
তদন্তে জানা গেছে, নাইজেরিয়ান নাগরিক কোকো ও এম্যানুয়েল বাংলাদেশে অন্তত দুই বছর ধরে প্রতারণা করে আসছে। কোকো আগেও একবার র্যাব-১০ এর হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। সুইটি আক্তার নতুন হলেও ইতোমধ্যে বহু ভুক্তভোগীর কাছ থেকে অর্থ আদায় করেছেন বলে জানিয়েছে র্যাব।
র্যাব জানিয়েছে, এই চক্রের সঙ্গে আরও দেশি-বিদেশি সদস্য জড়িত থাকতে পারে। তাদের শনাক্ত ও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
নুসরাত