ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৫ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

বান্দরবানে সেনা অভিযানে নিহত ২ কেএনএফ সদস্যের পরিচয় শনাক্ত ও মরদেহ হস্তান্তর

নিজস্ব সংবাদদাতা, বান্দরবান

প্রকাশিত: ২০:২৫, ৪ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ২০:২৫, ৪ জুলাই ২০২৫

বান্দরবানে সেনা অভিযানে নিহত ২ কেএনএফ সদস্যের পরিচয় শনাক্ত ও মরদেহ হস্তান্তর

ছবি: বান্দরবানে সেনা অভিযানে ঘটনাস্থল থেকে তিনটি এসএমজি, একটি চাইনিজ রাইফেল, বিপুল পরিমাণ গুলি, ইউনিফর্ম ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

বান্দরবানের রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ে সেনা অভিযানে নিহত কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সামরিক শাখা কেএনএর দুই সদস্যের পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে তাঁদের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

শুক্রবার (৪ জুলাই) সকালে বান্দরবান সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে বম সোশ্যাল কাউন্সিল (বিএসসি) ও ইয়াং বম অ্যাসোসিয়েশনের (ওয়াইবিএ) নেতারা নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করেন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন লালহিম সাং বম (৩০) ও লালতোলয়াং থাং বম (২৮), তিনি অজয় বাবু নামেও পরিচিত।

লালহিম সাং বম রুমা উপজেলার পাইন্দু ইউনিয়নের মুন্নুয়াপাড়ার বাসিন্দা ও সাবেক ইউপি সদস্য মৃত জিরখুম বমের ছেলে। অপরজন হলেন লালতোলয়াং থাং বম, একই ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রৌনিনপাড়ার লালতিন সম বমের ছেলে।

সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার ভোরে রুমা উপজেলার মুয়ালপিপাড়া ও পলিপ্রাংসা পাড়ার মাঝামাঝি নাইতং পাহাড় সংলগ্ন তাইদাংম্রং ঝিরি এলাকায় কেএনএফ-এর একটি আস্তানায় অভিযান চালায় সেনাবাহিনী। অভিযানে সন্ত্রাসীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাস্থল তল্লাশি করে দুটি মরদেহ, তিনটি এসএমজি, একটি চাইনিজ রাইফেল, বিপুল পরিমাণ গুলি, ইউনিফর্ম ও সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

এ বিষয়ে বিএসসি সভাপতি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য লালজার লম বম বলেন, নিহত দুজন কেএনএ’র সদস্য হিসেবে পরিচয় শনাক্ত করার পর আমরা মরদেহগুলো তাঁদের পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি। তিনি বলেন, সংগঠনটির শীর্ষস্থানীয় নেতা সাংমিন বম ওরফে পুতিন বমও ওই অভিযানে নিহত হয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তাঁর মরদেহ পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সোহরাওয়ার্দ্দী বলেন, নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় শনাক্ত হওয়ার পর তাঁদের মরদেহ দুর্গম স্বজনদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার জন্য বম সোশ্যাল কাউন্সিল ও ইয়াং বম অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চীন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ) দাবি করে যে, কেএনএ তাদের সশস্ত্র শাখা। ২০২২ সালের মাঝামাঝি থেকে রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলার দুর্গম এলাকায় সংগঠনটির সশস্ত্র তৎপরতা বেড়ে যায়। এ সংগঠনটি বান্দরবান ও রাঙামাটি জেলার নয়টি উপজেলা নিয়ে একটি আলাদা রাজ্য গঠনের ঘোষণাও দেয়। তাদের সঙ্গে দফায় দফায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষের পর আলোচনার টেবিলেও বসে তারা।

এ অবস্থায় জেলার রুমা ও থানচি উপজেলায় কৃষি ও সোনালী ব্যাংকের তিনটি শাখায় সশস্ত্র হামলা করে টাকা ও অস্ত্র লুটের ঘটনা ঘটায় সংগঠনটি। গেল দুই বছরে এ সংগঠনের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে ৬ সেনাসহ বিভিন্ন সময়ে ২৭ জন নিহত হয়। এ ঘটনায় কেএনএফ সন্দেহে দেড় শতাধিক লোকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ইমরান

×