ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৫ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সুইচগেট বিকল, ব্রিজ মুখে জাল-জলাবদ্ধতায় ধ্বংসের মুখে ফসল

মো. রয়িসুল ইসলাম, কন্ট্রিবিউটিং রিপোর্টার, লালমনিরহা

প্রকাশিত: ০০:৩২, ২৫ মে ২০২৫

সুইচগেট বিকল, ব্রিজ মুখে জাল-জলাবদ্ধতায় ধ্বংসের মুখে ফসল

দৈনিক জনকণ্ঠ

সারাদেশের অন্যান্য জায়গার মতো লালমনিরহাটেও গত সপ্তাহ ধারে টানা বৃষ্টিতে জেলার বিস্তীর্ণ ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ধান, ভুট্টা, শাকসবজি, বাদাম ও কাউনসহ এ মৌসুমের প্রায়  সব ধরনের ফসলের মারাত্মক ক্ষতির সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ক্ষতির আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন জেলার হাজার হাজার কৃষক।

জেলার বিভিন্ন এলাকায় এখনও বোরো ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজ শেষ হয়নি। কেউ কেউ ধান কাটলেও বৃষ্টির কারণে তা মাড়াই করতে পারছেন না। আবার অনেকের ক্ষেত এখনও পানির নিচে ডুবে রয়েছে। এতে ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বেড়েছে।

সরেজমিনে এলাকার কৃষি জমি ঘুরে দেখা যায়, টানা বৃষ্টির কারণে অনেক জমিতেই ফসলের আর তেমন কোনো চিহ্ন নেই। চারদিকে শুধুই থইথই পানি। মনে হচ্ছে যেন বিস্তীর্ণ ফসলি জমি ছোট ছোট নদীতে পরিণত হয়েছে। 

ফসলি জমিতে পানি জমে থাকার মূল কারণ হচ্ছে ছোট ছোট ব্রিজ ও কালভার্টগুলোর মুখ একবারেই ছোট। যার ফলে পানি গুলো বের হতে পাচ্ছে না। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সুইস গেট কয়েকটি অকার্যকর যার ফলে সুইস গেট গুলো দিয়েও পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এর ফলে ফসল নষ্ট হচ্ছে। 

আদিতমারীর মহিষখোচা ইউনিয়নের বারঘরিয়া গ্রামের কৃষকরা জানান, আমরা বোরো ধান চাষ করেছিলেন। চার মাসের পরিশ্রমের পর ধান পেকে গেলেও এখন সবই পানির নিচে। কেননা খালের পানি গুলো ব্রিজ ও কালভার্ট গুলো দিয়ে পানি বের হতে পাচ্ছে না ।

দোলা এগুলোর ব্রিজ বা কালভার্টের পাশে কিছু মানুষ পানির রাস্তা বন্ধ করে কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধারে। এমন ভাবে আশেপাশের সব দোলার একই অবস্থা। প্রশাসন এর কাছে আমাদের দাবি কালভার্ট ও ব্রিজগুলোর সংস্কার করা হোক। 


দক্ষিণ বালাপাড়া গ্রামের কৃষকেরা বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে দোলার সব ধান ভুট্টা সহ অনন্য ফসল ডুবে গিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। প্রতিবছর পানি যাওয়ার সেতু বা কালভার্টে পানি যাওয়ার ভালো ব্যবস্থা না থাকায় দোলা তুলিয়ে যায়। আবার কিছু অসাধু ব্যক্তি ব্রিজ ও কালভার্ট এর মুখ বন্ধ করে দিয়ে মাছ জাল শিকার করেন।  

তবে প্রশাসন কে প্রতিবছর জানালেও এর সফল পাওয়া যায়নি। প্রশাসন এর কাছে আমাদের দাবি দ্রুত নতুন সংযোগ সেতু বা কালভার্ট নির্মাণ করা হোক। 

আদিতমারী উপজেলা কৃষি অফিসার ওমর ফারুক বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধ সৃষ্টি হয়ে ফসলি জমি গুলো ডুবে গেছে। কিছু মানুষ মাছ ধরার জন্য পানি যাওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছেন বা আরোও অন্য কোন কারণ হতে পারে জলাবদ্ধ সৃষ্টি হওয়ার। আমি পরিদর্শন করে সার্বিক বিষয়গুলো ইউএনও মহোদয়কে জানাবো। 

আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিধান কান্তি হালদার বলেন, যে গুলো কালভার্ট নষ্ট হয়ে গেছে বা পানি যেতে পারছে না সেগুলো সরজমিনে দেখে আমরা সংস্কারের ব্যবস্থা করব। সুইচগেট গুলো পানি উন্নয়ন বোর্ডের আন্ডারে আমি তাদের নির্বাহী প্রকৌশলীর সাথে কথা বলব।  এবং পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে জলাবদ্ধ সৃষ্টি হয় এমন কোনও কৃত্রিম জাল বা অন্য কিছু যদি কেউ করে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। 

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, লালমনিরহাটে আমাদের ছোট বড় ১৪ টি রেগুলেটর পাইপ সুইচ গেট রয়েছে তার মধ্যে বেশ কয়েকটি অকার্যকর রয়েছে এর মধ্যে মহিষখোচা বারঘরিয়া আংশিক অকার্যকর। এগুলো তথ্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পেশ করেছি বাজেট পেলে মেরামত করা হবে।

×