
ছবি: সংগৃহীত
আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে ফের উত্তেজনা। এবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিরুদ্ধে শুল্ক আরোপের হুমকি দিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ১ জুন থেকে ইউরোপীয় পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর করা হবে বলে শুক্রবার ঘোষণা দেন তিনি। এর ফলে নতুন করে শুল্ক যুদ্ধের আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্ববাজারে।
চীনের পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। মার্কিন প্রশাসনের তথ্যমতে, ২০২৪ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি সদস্য দেশ যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য রপ্তানি করেছে প্রায় ৬০ হাজার কোটি ডলারের, আর আমদানি করেছে ৩৭ হাজার কোটি ডলারের পণ্য। এমন অবস্থায় ট্রাম্পের ঘোষণাকে একপেশে ও আক্রমণাত্মক বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ইইউ বাণিজ্য কমিশনার মারস সেফ কবিচ ট্রাম্পের বক্তব্যের জবাবে বলেন, "যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আমরা হুমকি-ধামকির মাধ্যমে নয়, সম্মানজনক একটি চুক্তির মাধ্যমে সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চাই।" তার মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের একতরফা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইউরোপকে মাথা নোয়ানো উচিত নয়।
এই হুমকির প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বিশ্ববাজারে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের পুঁজিবাজারে দরপতন দেখা গেছে। সবচেয়ে বেশি চাপে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের নিজস্ব টেক জায়ান্ট, অ্যাপল। ট্রাম্প জানিয়েছেন, অ্যাপল যদি ভারতে আইফোন উৎপাদন অব্যাহত রাখে, তাহলে তাদেরকে ২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক দিতে হবে। বরং উৎপাদন সরিয়ে এনে যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই কারখানা স্থাপন করতে হবে।
তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, অ্যাপল নিজের অবস্থান পরিষ্কারভাবে তুলে ধরতে ব্যর্থ হয়েছে। গেল ফেব্রুয়ারিতে কোম্পানিটি যুক্তরাষ্ট্রের নয়টি অঙ্গরাজ্যে কারখানা স্থাপন এবং কর্মসংস্থান বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিলেও, স্পষ্ট করে জানায়নি আইফোন উৎপাদন যুক্তরাষ্ট্রেই হবে কি না।
‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির আওতায় ট্রাম্প নতুন কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষ্যে আমদানি শুল্ককে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন। কিন্তু এতে খুশি নয় মার্কিন ভোক্তারা। কারণ, এ ধরনের পদক্ষেপ প্রযুক্তি পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেবে, যা শেষ পর্যন্ত সাধারণ মানুষের উপরই চাপ ফেলবে।
বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, ট্রাম্পের এমন আগ্রাসী বাণিজ্যনীতির ফলে যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপ সম্পর্ক আরও জটিল হয়ে পড়বে। একইসঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজারে অনিশ্চয়তা ও উদ্বেগ বাড়বে, যার প্রভাব পড়তে পারে বৈশ্বিক অর্থনীতিতেও।
এসএফ