
ছবি: জনকণ্ঠ
দেশের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তবর্তী জেলা ঠাকুরগাঁও। অপার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, কৃষিনির্ভর অর্থনীতি ও ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিতে ভরপুর এই জেলা আজও পিছিয়ে রয়েছে উচ্চশিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার গুরুত্বপূর্ণ দুটি খাতে—বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল কলেজের অভাব।
জেলার একমাত্র সরকারি হাসপাতাল, ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতাল, সীমিত সামর্থ্য নিয়েই সেবা দিয়ে চলেছে। তবে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা ও রোগীর চাপ সামাল দিতে গিয়ে বারবার দেখা দিচ্ছে সংকট। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সংকট, যন্ত্রপাতির অপ্রতুলতা ও ইনফ্রাস্ট্রাকচারের দুর্বলতা যেন প্রতিদিনের চিত্র।
"একজন হার্টের রোগীকে রাজশাহী বা রংপুরে নিতে ৫-৬ ঘণ্টা লেগে যায়। এই সময়টাই তার জীবনের জন্য মারাত্মক হয়ে দাঁড়ায়।
একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ থাকলে জেলার হাজারো শিক্ষার্থী যেমন চিকিৎসাশাস্ত্রে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পেত, তেমনি স্বাস্থ্যসেবায় আসত গুণগত পরিবর্তন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্ন এখনও স্বপ্নই রয়ে গেছে। ঠাকুরগাঁও জেলার অনেক মেধাবী শিক্ষার্থী এই জেলার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা শেষ করার পর উচ্চশিক্ষার জন্য বাধ্য হয়ে ঢাকাসহ অন্যান্য বড় শহরে চলে যান। এতে একদিকে যেমন খরচ বেড়ে যায়, অন্যদিকে মানসিক চাপও বাড়ে শিক্ষার্থীদের ও তাদের পরিবারগুলোর ওপর।
জেলার অনেকাংশে এখনো বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সেবার সমস্যা থাকলেও একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠলে পুরো অঞ্চলে শিক্ষার আলোর পাশাপাশি টেকসই উন্নয়নের সুযোগ তৈরি হতো।
বিভিন্ন সময়ে ঠাকুরগাঁওয়ে মেডিকেল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবি ওঠে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলে প্রচার, স্থানীয় রাজনীতিবিদরাও প্রতিশ্রুতি দেন নির্বাচনের মৌসুমে। তবে বাস্তবে উদ্যোগ বা অগ্রগতি নেই বললেই চলে।
এই জেলার মানুষ মনে করেন, সরকারি পর্যায়ে একটি সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছাড়া এ অবস্থা থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।
ঠাকুরগাঁওয়ের লাখো মানুষের প্রাণের দাবি একটি সরকারি মেডিকেল কলেজ ও একটি পূর্ণাঙ্গ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। শুধু উন্নয়নের পোস্টার নয়, প্রয়োজন বাস্তবিক পরিবর্তন। স্বাস্থ্য ও শিক্ষার উন্নয়ন ছাড়া কোনো উন্নয়নই টেকসই নয়—এই সত্যকে সামনে রেখে এখনই সময় সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের।
সাব্বির