
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা হিসেবে পরিচিত আল-শাহাদাৎ জামান জিকোকে সংগঠনের সব ধরনের কর্মকাণ্ড থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। শনিবার (২৪ মে) রাতে এনসিপির কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) নাজমুল হাসান সোহাগ এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
জানা গেছে, এনসিপির স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
আল-শাহাদাৎ জামান জিকো সুন্দরগঞ্জ পৌর শহরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের হাসপাতাল মোড় এলাকার বাসিন্দা শফিকুল ইসলামের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জিকোর রাজনৈতিক জীবন শুরু ছাত্রদলের মাধ্যমে। ২০০৮ সালে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর তার রাজনৈতিক অবস্থানে নাটকীয় পরিবর্তন আসে। সে সময় তিনি যুবলীগে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করেন এবং জেলা যুবলীগের শীর্ষ নেতাদের সান্নিধ্য পেতে তৎপর হন। পরবর্তীতে তিনি জাসদে যোগ দেন এবং ‘মশাল’ প্রতীকের হয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করেন।
তিনি পৌর কাউন্সিলর ও জেলা পরিষদ সদস্য পদে নির্বাচন করলেও তেমন জনসমর্থন পাননি। ২০২৪ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এনডিএম থেকে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়ে পরাজিত হন। পরে জাসদ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ না করেই বিএনপিপন্থী সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসে যোগ দেন এবং সুন্দরগঞ্জ পৌর কমিটির যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পান। এরপর এনসিপিতে যোগ দিয়ে নিজেকে উপজেলা পর্যায়ের সংগঠক হিসেবে পরিচয় দিতে থাকেন।
সংগঠনের শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে চলতি বছরের ৩ মার্চ তাকে জাসাস থেকেও বহিষ্কার করা হয়। এছাড়া, এনসিপির ব্যানার ব্যবহার করে নিজেকে ‘ফাউন্ডার’ পরিচয়ে বিভিন্ন অফিসে প্রভাব খাটানো, আওয়ামী লীগ ঘরানার নেতাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলা ও আদর্শবিরোধী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠে তার বিরুদ্ধে।
‘জুলাই যোদ্ধারা’ নামের একটি সংগঠন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব কর্মকাণ্ডকে শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি অবমাননা বলে উল্লেখ করে এবং তাকে এনসিপি থেকে বহিষ্কারের দাবি জানায়।
এ বিষয়ে এনসিপির কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) নাজমুল হাসান সোহাগ বলেন, “সুন্দরগঞ্জে আল-শাহাদাৎ জামান জিকোকে ঘিরে দীর্ঘদিন ধরে নানা অভিযোগ আসছিল। স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনা করে তাকে আপাতত সংগঠনের সকল কার্যক্রম থেকে বিরত রাখা হয়েছে। সংগঠনের শৃঙ্খলা ও আদর্শ রক্ষার স্বার্থে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “সংগঠনের নীতি, আদর্শ ও ঐক্য রক্ষায় শৃঙ্খলাভঙ্গকারী কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
নুসরাত