
মৌসুমী বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্ত বোরো ধান
কুড়িগ্রামের উত্তরের কৃষিজীবী মানুষ এখন এক গভীর উদ্বেগের মধ্যে সময় পার করছেন। মৌসুমের শেষ প্রান্তে এসে প্রকৃতির বৈরী আচরণে ধান ঘরে তোলা নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন তারা। পরিশ্রমে ফলানো সোনালি ফসল খোলা আকাশের নিচেই ঝরে পড়ে যাচ্ছে।
গত কয়েকদিন ধরেই থেমে থেমে দিন-রাত বৃষ্টি হচ্ছে। মাটি সর্বক্ষণ ভেজা থাকায় কৃষকরা ঠিকভাবে ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজ করতে পারছেন না। বৃষ্টির আগে যে ধান কেটে বাড়িতে আনা হয়েছে সেগুলোও শুকাতে না পারায় উঠানেই গজাতে শুরু করেছে চারা। আর যেসব জমিতে ধান এখনো কাটা হয়নি সেগুলোতে ঝড় বা বাতাস হলেই শীষ থেকে ধান ঝরে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
নাগেশ্বরী পৌরসভার বানিয়াপাড়া ও পাশের গ্রামগুলোর নুনখাওয়া বাহুবল ম-লের ভিটা, ভাঙ্গামোড়সহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কৃষকদের মুখে একই আক্ষেপ শোনা গেছে। কৃষক আবেদ আলী, কছিমুদ্দিন ইসলাম, নূর হোসেন, আ. ছালাম, সেকেন্দার আলী, আব্দুল মতিন, রফিকুল ইসলাম, আলতাফ হোসেন, আনিছুর রহমান, আ. হাকিম ও হামিদুল ইসলাম বলেন, এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে, কিন্তু সেই ধান ঘরে তোলা যাচ্ছে না। দিন-রাত বৃষ্টিতে খেতেও রাখা যাচ্ছে না, আবার উঠানেও রাখা যাচ্ছে না।
আবহাওয়া ও কৃষি পর্যবেক্ষণাগারের রাজারহাট কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানিয়েছেন, এটি মৌসুমি বৃষ্টি, যা ২১ মে পর্যন্ত চলতে পারে। তবে ঘূর্ণিঝড় বা শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।
এদিকে উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে এ বছর বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৩ হাজার ৭৫৫ হেক্টর জমি। অর্জিত হয়েছে ২৩ হাজার ৮৫০ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১১০ হেক্টর বেশি। ফলনও হয়েছে আশাব্যঞ্জক। কিন্তু ফসল ঘরে তোলার শেষ সময়ে এসে বৃষ্টি যেন কৃষকদের জন্য বড় এক বিড়ম্বনা সৃষ্টি করেছে।
উপজেলা সিনিয়র কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার হোসেন জানান, এ সময়ের বৃষ্টিতে সাধারণত ধানের বড় ক্ষতি হয় না। তবে শিলাবৃষ্টি হলে বিপদ বাড়ে। এখন সে আশঙ্কা নেই।
তবুও কৃষকরা তাকিয়ে আছেন আকাশের দিকে একটু রোদ উঠলেই হয়তো তারা আবারও ব্যস্ত হয়ে উঠবেন ধান ঘরে তোলার কাজে।