
ছবি: সংগৃহীত
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দোসর হিসেবে প্রশাসনে বহাল থাকা ৪৪ জন সচিবের তালিকা প্রকাশ করেছে ‘জুলাই ঐক্য’। মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে শহিদ মুন্তাসির রহমান আলিফের বাবা গাজীউর রহমান এ তালিকা প্রকাশ করেন।
সংগঠনের নেতারা অভিযোগ করেন, গত ১৫ বছরে এসব আমলারা শেখ হাসিনার সরকারকে অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকিয়ে রেখেছে। এখনও তারা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় ও সরকারি প্রতিষ্ঠানে দায়িত্বে রয়েছেন। তারা আরও জানান, ৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ছাত্র জনতার ওপর গুলি চালানোর ঘটনায় জড়িত আটজন ম্যাজিস্ট্রেটের নামও প্রকাশ করা হয়েছে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে সাত দফা দাবি উত্থাপন করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে এসব দোসরদের বাধ্যতামূলক অবসর, তদন্ত কমিটি গঠন, সম্পদ জব্দ, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা এবং সংশ্লিষ্টদের তালিকা সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশ। দাবি মানা না হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
সংগঠনটি জানায়, এটি শুধু প্রাথমিক তালিকা, অচিরেই সব সেক্টরে থাকা দোসরদের পূর্ণ তালিকা প্রকাশ করা হবে।
প্রকাশিত ৪৪ সচিবের তালিকায় রয়েছে, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল হাসান, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ফারহানা আহমেদ, আলোচিত সমালোচিত কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়া, ভূমি আপীল বোর্ডের চেয়ারম্যান মুহম্মদ ইব্রাহিম, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক, ডাক ও টেলিযোগ বিভাগের মো. মুশফিকুর রহমান, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সচিব মো. আব্দুর রহমান খান, অর্থ সচিব ড. মোহাম্মদ খায়রুজ্জামান, বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য মো. রুহুল আমিন, দুদক সচিব খোরশেদা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়ম করপোরেশনের চেয়ারম্যান মো. আমিন উল্লাহ আহসান, বিপিএটিসি রেক্টর সাইদ মাহবুব খান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সচিব মো. মোকাব্বির হোসেন, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সায়েদুর রহমান, জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন অ্যাকাডেমির রেক্টর ড. মো. শহিদুল্লাহ, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন অ্যাকাডেমির রেক্টর ড. মো.ওমর ফারুক, শ্রম সচিব এ এইচ এম শফিকুজ্জামান, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান নাসরিন আফরোজ, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জয়নুল বারী।
এছাড়াও রয়েছেন, সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. মুসলিম চৌধুরী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আশরাফ উদ্দীন, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ইশরাত চৌধুরী, বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক শরিফা খান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সিদ্দিক জোবায়ের, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ (সংস্কার ও সময়ন্বয়) জাহেদা পারভীন, ইআরডি সচিব শাহরিয়ার কাদের চৌধুরী, প্লানিং কমিশনের সচিব এ এম আকমল হোসেন আজাদ, প্লানিং কমিশনের সদস্য ইকবাল আব্দুল্লাহ হারুন, জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অ্যাকাডেমির মহাপরিচালক সুকেশ কুমার সরকার, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মমতাজ আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার সংযুক্ত সচিব মোহাম্মদ মাহমুদুল হোসাইন খান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সচিব মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ সাইদুর রহমান, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক গাজী মুহম্মদ সাইফুজ্জামান, বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশনের চেয়ারম্যান ডক্টর লিপিকা ভদ্র, জাতীয় স্থানীয় সরকার ইন্সটিটিউট এর মহাপরিচালক মো. আব্দুল কাইয়ুম, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক সালেহ আহমেদ মোজাফ্ফর, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কেয়া খান, জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিউটএর মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ বশিরুল আলম, ইকোনমিক মিনিস্টার ওয়াশিংটন ডিসিতে কর্মরত মেহেদী হাসান, বস্ত্র ও পাট সচিব মো. আব্দুর রউফ, সরকারি কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক কাজী এনামুল হাসান এবং সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মফিদুর রহমান। সচিব ও সচিব পদমর্যাদায় থাকা প্রশাসনের এই ৪৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের স্বৈরাচারী নানা কর্মকাণ্ডের সহায়তা করা, কারো বিরুদ্ধে কট্টর আওয়ামী মনোভাবসহ নানা সুবিধাভোগের অভিযোগ তুলে ধরা হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে।
আসিফ