
হাসনাত আবদুল্লাহ
গাজীপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহর গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় সোমবার সন্ধ্যায় মামলা হয়েছে। মামলায় ১০০ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও অনেককে আসামি করা হয়েছে। মামলায় সাবেক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুরের সাবেক মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ কয়েকজন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাসন থানার ওসি শাহীন খান।
এদিকে রবিবার সন্ধ্যায় ওই হামলার পর ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে বিশেষ অভিযানে নামে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ। জিএমপির ডিবি ও ৮টি থানা পুলিশের সমন্বয়ে গঠিত বেশ কয়েকটি টিম রাতভর অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন স্থান হতে ৫৪ জনকে আটক করে। গ্রেপ্তারকৃতরা সবাই আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী।
গাজীপুর মেট্টোপলিটন পুলিশের বাসন থানার ওসি শাহীন খান বলেন, হাসনাত আবদুল্লাহর ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এনসিপির গাজীপুরের কর্মী মো. আল আমিন খন্দকার বাদী হয়ে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে বাসন থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে মহানগরীর ১৪ নম্বর ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আলমগীর হোসেন রাব্বিকে।
এছাড়াও মামলায় সাবেক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল, গাজীপুরের সাবেক মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ কয়েকজন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকে হুকুমের আসামি করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, হাসনাত আবদুল্লাহর গাড়িতে হামলার পর রবিবার রাত থেকেই থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ গাজীপুর মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে সাঁড়াশি অভিযান চালায়।
ঘটনার পরপরই পুলিশ গাজীপুর মহানগরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের যুবলীগ নেতা নিজাম উদ্দিন ও কাশিমপুর থানা শেখ রাসেল শিশুকিশোর পরিষদের সভাপতি মাসুম আহমেদ ওরফে দিপু নামের দুইজনকে আটক করে। বিভিন্ন এলাকা হতে এ পর্যন্ত ৫৪ জনকে আটক করা হয়েছে। এরমধ্যে ৪৩ জনকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বাকি ১১ জনকে অন্য মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রবিবার সন্ধ্যার পর ঢাকায় ফেরার পথে গাজীপুর মহানগরীর বাসন সড়ক এলাকায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহর গাড়িতে হামলা হয়। মুখোশ পরিহিত একদল যুবক কয়েকটি মোটরসাইকেলে করে এসে হামলা চালিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। হামলায় তার গাড়ির কাঁচ ভেঙে যায়। তিনি হাতে রক্তাক্ত জখম হন।
পরে বোর্ডবাজার এলাকায় প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে পুলিশ প্রহরায় ঢাকায় ফিরেন তিনি। হামলার খবর জানাজানি হলে ক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠে গাজীপুর। এনসিপি, ছাত্রশিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা ঘটনার প্রতিবাদে এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা ও বোর্ডবাজার এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল, মশাল মিছিল এবং প্রতিবাদ সভা করে।