ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৬ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২

বাড়িঘর উচ্ছেদ না হওয়ায় থেমে থেমে চলছে

শিবগঞ্জে তিন দফা বন্ধ সেতুর কাজ

জাহিদ হাসান মাহমুদ মিম্পা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

প্রকাশিত: ২২:২৪, ৩ মে ২০২৫

শিবগঞ্জে তিন দফা বন্ধ সেতুর কাজ

পাগলা নদীর ওপরে জনপ্রত্যাশিত সেতু নির্মাণকাজ চলছে ঢিমেতালে

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে পাগলা নদীর ওপরে জনপ্রত্যাশিত সেতু নির্মাণকাজ চলছে ঢিমেতালে। নদীর দু’দিকের বাড়িঘর উচ্ছেদ না হওয়ায় থেমে থেমে চলছে সেতুটির নির্মাণকাজ। নির্মাণকাজ শুরু করার পর ঠিকাদার বন্যা, বৃষ্টি ও জমি অধিগ্রহণের অজুহাতে তিন দফা কাজ বন্ধ রাখেন। ফলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেতুটি সম্পন্ন না হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে শীঘ্রই উচ্ছেদ অভিযান করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করার আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।
সংশ্লিষ্টরা জানান, শিবগঞ্জ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে আন্তঃসীমান্ত নদী ‘পাগলা’। এ নদীর ওপর দিয়েই নির্মিত হচ্ছে জনপ্রত্যাশিত সেতুটি। পল্লি সড়কের গুরুত্বপূর্ণ সেতু নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মইন উদ্দিন আহমুদ মুন্টু নাম দিয়ে ২০২৩ সালের ১৪ অক্টোবর সেতুটির উদ্বোধন করেন সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল। সেতুর নির্মাণকাজের ব্যয় ধরা হয়েছে ২৭ কোটি ৫৫ লাখ ৪৮ হাজার ৭৩৮ টাকা। যার দৈর্ঘ্য ১৭২ দশমিক ৩০০ মিটার। 
সরেজমিন দেখা যায়, দীর্ঘদিন আগে সেতুটির নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার পরও এখন পর্যন্ত মাত্র দুটি পিলার স্থাপন করা হয়েছে। কিছু জায়গায় খোঁড়াখুঁড়ি হয়েছে। তবে সার্বিককাজ থেমে থেমে চলছে। নির্মাণ সামগ্রীগুলো যত্রতত্র পড়ে আছে। সামগ্রীগুলো অকেজো হওয়ার আশঙ্কা থাকলেও কারোরই কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।
পথচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জনপ্রত্যাশিত পাগলা নদীর ওপর সেতুটির নির্মাণকাজ খুব ধীরগতিতে চলছে। সেতুটির এক পাশে বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষের বসবাস। তারা পুরাতন সেতুর ওপর দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছেন। শুধু তাই নয়, চলচমান এসএসসি ও সমমানের পরির্থীদের যানজট মাথায় নিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে হয়। 
দুর্লভপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুর রব বলেন, অনেক আশা করে নতুন সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু খবুই ধীরে ধীরে কাজ হচ্ছে। এভাবে কাজ চলতে থাকলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেতুটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হবে না। 
মনাকষা ইউনিয়নের বাসিন্দা আয়াতুল্লাহ খোমেনি বলেন, পুরাতন সেতুটিতে এখনো ঝুঁকিপূর্ণভাবে আমাদের যাতায়াত করতে হয়। এ ছাড়া সেতুটিতে ভারি যানবাহন উঠলে দীর্ঘক্ষণ যান চলাচল ব্যাহত হয়। এতে করে এ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি যানবাহনগুলো যেতে পারে না। বিনোদপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা রেজাউল করিম বলেন, নতুন সেতুটিতে খুবই ধীরগতিতে কাজ চলছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ করার দাবি করছি। কারণ এখান দিয়ে মানুষ খুব ঝুঁকির মধ্যদিয়ে যাতায়াত করছে। 
সেতুটি নির্মাণকাজের ঠিকাদার আব্দুল মান্নান বলেন, সেতুর দু’দিকে প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণ ও বাড়িঘর উচ্ছেদ করা না হলে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ করা সম্ভব নয়। এ পর্যন্ত সেতুর কাজ ৫৫ ভাগ শেষ হয়েছে বলে জানান তিনি। 
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী হারুন অর রশিদ জানান, সেতু নির্মাণের জন্য অধিগ্রহণ করে জমি থেকে বাড়িঘর উচ্ছেদের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন জানান, সেতুর দু’দিকের জমি অধিগ্রহণ করে বাড়িঘর উচ্ছেদের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। শীঘ্রই উচ্ছেদ করা হবে। যথাসময়ে সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে।

×