ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কারের অভাবে দুর্ভোগ

সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কে থৈ থৈ পানি

মোস্তফা কামাল প্রধান, শ্রীপুর, গাজীপুর

প্রকাশিত: ২১:৩৩, ২৯ মে ২০২৩

সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কে থৈ থৈ পানি

গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি-বেড়াইদেরচালা-বেপারিবাড়ী-লিচু বাগান বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন সড়ক

সামান্য বৃষ্টিতেই থৈ থৈ পানি। দেখে সহজেই মনে হবে মাছ চাষের উপযোগী কোনো জলাশয়। এ সড়কের পিচ উঠে  গেছে অনেক আগেই। কাদাপানি ও খানাখন্দে ভরা সড়কের পুরো এক কিলোমিটার জুড়ে। গত প্রায় সাত বছরেরও বেশি সময় যাবত সড়কের এমন বেহাল অবস্থা হলেও গর্ত ভরাট করতে শ্রীপুর পৌরসভার পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ। 
দীর্ঘদিন যাবত সংস্কারের অভাবে গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি-বেড়াইদেরচালা-বেপারিবাড়ী-লিচু বাগান (বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন) সড়কের বেহাল দশায় চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন অর্ধশত কলকারখানার শ্রমিক ও কয়েক গ্রামের মানুষ। সোয়া এক কিলোমিটার এ সড়কটির বিভিন্ন স্থানে গর্ত হয়ে পানি জমে সৃষ্টি হয়েছে খানাখন্দ। গর্তে রিক্সা আটকে উল্টে গিয়ে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। 
অন্তহীন দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন এ সড়ক দিয়ে চলাচলকারী বেড়াইদেরচালা, দোখলা, মাওনা ইউনিয়নের বেলতলী, কবরঘাটা, দক্ষিণ বারতোপা গ্রামের বাসিন্দাসহ একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একাধিক বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন পোশাক কারখানায় কর্মরত শ্রমিক-কর্মচারীরা। সোয়া এক কিলোমিটার ওই সড়কটি শ্রীপুর পৌরসভার ৫ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের আওতাধীন। বর্তমানে সড়কটিতে যান চলাচল তো দূরের কথা, পায়ে হেঁটে চলাচলেরও অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা মেয়র ও কাউন্সিলরদের বাসার গিয়ে সড়ক সংস্কারের আশ^াস পায়নি। তবে সোয়া এক কিলোমিটার সড়কের সংস্কারের জন্য আলাদাভাবে দরপত্রের মাধ্যমে সংস্কারের জন্য ঠিকাদারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলররা।
সোমবার বেলা ১১টায় সরেজমিনে ওই সড়ক পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কে কোনো পিচ ঢালাই নেই। স্থানে স্থানে খানাখন্দ ও গর্তে কাদাপানি পানি জমে আছে। হেঁটে যাওয়ারও উপায় নেই। 
স্থানীয় বাসিন্দা ও সচেতন নাগরিক খোরশেদ আলম বলেন, প্রায় ১০/১৫ বছর আগে সড়কটি পাকা করা হয়। তারপর আস্তে আস্তে ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। গর্তে পানি জমে সড়কটি চলাচলের একবারে অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। কিন্তু পৌরসভার আওতাধীন দেড় কিলোমিটার সড়ক সংস্কার না হওয়ায় প্রতিদিন দুর্ভোগে পড়ছেন এ সড়কে চলাচলকারী পোশাক শ্রমিক, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা। গিলারচালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফা বেগম জানান, মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন সড়কের পুরোটাই ভাঙা থাকার কারণে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসতে সমস্যা হয়। অনেক শিক্ষার্থী হাঁটতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে তাদের স্কুল ড্রেসে কাদা ও নোংরা পানি লেগে যায়। 
ওই সড়কের পাশের বাড়ির মালিক বেসরাকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী খন্দকার আসাদুজ্জামান বলেন, আমি নিজেই এ সড়ক দিয়ে চলাচলে অতিষ্ঠ হয়ে গিয়েছে। প্রতিদিন কাদাপানি মাড়িয়ে আমার অফিসে যেতে হয়। দীর্ঘদিন সড়ক সংস্কারের কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় অনেক ভাড়াটিয়া চলে গেছে। ইতোমধ্যে অনেক ভাড়াটিয়া বাসা ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছে। সোয়া এক কিলোমিটার সড়কের জন্য আমরা স্থানীয় বাসিন্দারা অনেক দিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। 
শ্রীপুর পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর রমিজ উদ্দিন এবং ৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাবিবুল্লাহ জানান, গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি-বেড়াইদেরচালা-বেপারিবাড়ি-লিচু বাগান (বীর মুক্তিযোদ্ধা ইসমাইল হোসেন) সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কারবিহীন থাকায় পৌরসভা থেকে ইতোমধ্যে দরপত্রের মাধ্যমে সংস্কারের জন্য ঠিকাদারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। অতি দ্রুত ঠিকাদার ওই সড়কের সংস্কার কাজে হাত দেবেন। শ্রীপুর পৌরসভার মেয়র আনিছুর রহমানের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ না করায় তার এ বিষয়ে বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

×