ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

চাটমোহরে গমের বাম্পার ফলন, দ্বিগুণ লাভে খুশি কৃষক

রফিকুল ইসলাম রনি, চাটমোহর (পাবনা

প্রকাশিত: ১২:০৭, ১৫ মার্চ ২০২৩

চাটমোহরে গমের বাম্পার ফলন, দ্বিগুণ লাভে খুশি কৃষক

চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল হাসুপুর মাঠে কৃষক গম কর্তন করছেন।

পাবনার চাটমোহর উপজেলায় কৃষকরা গমের আবাদের দিকে ঝুঁকছেন। রবি শস্যের মধ্যে অন্যতম একটি লাভজনক আবাদ হচ্ছে গম। ধান চাষের পাশাপাশি উপজেলার কৃষকরা বর্তমানে এই লাভজনক আবাদের দিকে নজর দিয়েছেন। বিগত সময়ে গমের আবাদ কমলেও বর্তমানে দিন দিন কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। বর্তমানে গমের বাজার ভালো থাকায় গম চাষে লাভের আশা করছেন চাষিরা। 

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি রবি মৌসুমে চাটমোহরে উপজেলায় আশানুরূপ জমিতে গমের চাষ করা হয়েছে। এবার উপজেলার ৩ হাজার  ৪শ ৫০ হেক্টর জমিতে বারি গম- ২৮, ৩০, ৩২ ও ৩৩ জাতের অধিক ফলনশীল গমের চাষ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩শ ৩০ হেক্টর বেশি চাষ হয়েছে। এখন পর্যন্ত কর্তন করা হয়েছে ২৫ হেক্টর জমি। রোগ বালাইল ও পোকামাকড়ের তেমন আক্রমণ না থাকায় চলতি মৌসুমে গমের বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষক ও কৃষি বিভাগ। 

গম চাষে চাষিদের আগ্রহী করার লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে কৃষি বিভাগের মাধ্যমে তালিকাভুক্ত ১ হাজার ২শ জন চাষিদের মাঝে উন্নত জাতের গমবীজ, সার, বালাইনাশকসহ অন্যান্য উপকরণ বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও চাষিদের সার্বক্ষণিক পরামর্শসহ সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করে আসছে উপজেলা কৃষি অফিস। 
উপজেলার হান্ডিয়াল হাসুপুর গ্রামের গমচাষি নজরুল ইসলাম জানান, আবহাওয়া ভালো থাকায় বিগত সময়ের চেয়ে এবার গমের দানা খুব ভালো হয়েছে। সে এ মৌসুমে এক বিঘা জমিতে গম চাষ করেছেন। একবিঘা জমিতে গম চাষ করতে তার ১০ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। আশা করছেন ১০ থেকে ১২ মন গম পাবেন। বর্তমানে বাজারে প্রতিমন গম ২ হাজার ৪শ থেকে ২ হাজার ৬শ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এক বিঘা জমি থেকে খরচ বাদে প্রায় ২০ হাজার টাকা লাভ করা সম্ভব। 

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাঈদুর রহমান সাঈদ বলেন, গম চাষে পানি, সার, কীটনাশক, বালাইনাশক ও নিড়ানী তেমন প্রয়োজন হয় না বলে খরচ অনেক কম। আর কম পরিশ্রমে অধিক লাভ করা যায়। এছাড়াও গমে পোকা-মাড়কের আক্রমনও তেমন একটা হয় না। গমের শীষ নেওয়ার পর গমের গাছ জ্বালানি ও বেড়া হিসেবে ব্যবহার করা যায়। এসব বিবেচনায় রাখলে নিশ্চিত করে বলা যায় গম চাষ একটি অধিক লাভজনক আবাদ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এ.এ.মাসুম বিল্লাহ বলেন, চলতি মৌসুমে গমের বাম্পার ফলন দেখা যাচ্ছে। কারণ এ পর্যন্ত গমে তেমন উল্লেখ যোগ্য কোন রোগ-বালাইয়ের আক্রমন হয়নি। বীজ উৎপাদনের জন্য ১০ টি প্রদর্শনী প্লটে ১২০ বিঘা জমি রয়েছে। গম চাষ করলে জমির উর্বরতা শক্তি যেমন বৃদ্ধি পায় তেমনি গম চাষের পর কৃষকরা ওই জমিতে ভালো ভাবে আমন ধান কিংবা অন্য আবাদ করতে পারবেন। চলতি মৌসুমে হেক্টর প্রতি প্রায় ৩.৫ মেট্রিকটন হারে ফলন পাওয়া যাচ্ছে। এ বছর গম চাষে কৃষক ভালো ফলন ও দামেও খুশি। 

টিএস

×