ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গাজীপুরে খ্রিস্টানদের বৃহত্তম তীর্থ উৎসব

স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর

প্রকাশিত: ০০:৪৫, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

গাজীপুরে খ্রিস্টানদের বৃহত্তম তীর্থ উৎসব

আন্তনীকে শ্রদ্ধা জানান ভক্তরা

‘ধন্য তুমি, পুণ্য তুমি আন্তনী, মহাজ্ঞানী, মহাত্যাগী সাধু আন্তনী’- এ বন্দনার মধ্যদিয়ে হাজার হাজার ভক্তের উপস্থিতিতে শুক্রবার কালীগঞ্জের পানজোরা গ্রামে অনুষ্ঠিত হলো খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম সাধু আন্তনীর তীর্থোৎসব। বৃদ্ধ হতে শিশু পর্যন্ত মহান সাধক আন্তনীর দেশ-বিদেশের বিপুলসংখ্যক ভক্ত তীর্থোৎসবে যোগ দেন। তীর্থযাত্রীদের আগমনে মঙ্গলপ্রদীপ জ্বালিয়ে গানে গানে মুখরিত হয়ে ওঠে অনুষ্ঠান প্রাঙ্গণ।
রাজধানীর পার্শ্ববর্তী গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের প্রাচীন গ্রাম পানজোরা খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী অধ্যুষিত এলাকা। প্রত্যন্ত অঞ্চল হলেও পানজোরার রয়েছে নানা ইতিহাস ও ঐতিহ্য। শুক্রবার এ গ্রামটিতে প্রায় অর্ধলাখ বৃদ্ধ, নারী-পুরুষ ও শিশুদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল। খ্রিস্ট ধর্ম প্রচারক-যাজক সাধু আন্তনীর পার্বন উপলক্ষে শুক্রবারের এ তীর্থোৎসবে সাধু আন্তনীর ভক্তদের বিশাল সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী ছাড়াও এ সমাবেশে হিন্দু-মুসলিমসহ বিভিন্ন ধর্ম ও গোত্রের মানুষ ভিড় জমিয়েছিল। দেশ-বিদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল হতে খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী ৫০ হাজারেরও বেশী তীর্থযাত্রী এবারের সমাবেশে যোগ দিয়েছেন।
সাধু আন্তনীর স্মরণে গত ২৫ জানুয়ারি হতে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৯ দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত হয় নভেনা অর্থাৎ আধ্যাত্মিক প্রস্তুতির খ্রিস্টযাগ। প্রতিদিন সকাল ও বিকেলে এ খ্রিস্টযাগ অনুষ্ঠিত হয়। দশম দিন অর্থাৎ ৩ ফেব্রুয়ারি শেষদিনে শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয় আন্তনীর পার্বন। এদিন ভোর হতে দুপুর পর্যন্ত দুবার খ্রিস্টযাগ অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে ভক্তরা পার্বণের তিনদিন আগে মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) সন্ধ্যা হতে পরদিন বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত উপবাস করেন।  শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টায় প্রথম প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী এ খ্রিস্টযাগ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত হয় দ্বিতীয় ও শেষ খ্রিস্টযাগ। তারপর প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। উভয় প্রার্থনা সভা পরিচালনা করেন ঢাকার আর্চবিশপ বিজয় এনডি ক্রুশ। এ সময় তাকে সহায়তা করেন নাগরী ধর্ম পল্লীর ফাদার (পাল পুরোহিত) ও পানজোরা সাধু আন্তনীর পার্বন উৎসবের প্রধান জয়ন্ত এস গমেজসহ অন্য যাজকগণ। প্রার্থনায় বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল দেশের সকল ধর্ম-সম্প্রদায়ের মানুষের কল্যাণ কামনা করা হয়।

×