ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চাষাবাদ ব্যাহত ॥ ফের চালুর দাবি

মীরসরাইয়ে ১৮ সেচ প্রকল্পের ১৪টি বন্ধ

রাজিব মজুমদার, মীরসরাই, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ০০:৫৪, ২৪ নভেম্বর ২০২২

মীরসরাইয়ে ১৮ সেচ প্রকল্পের ১৪টি বন্ধ

মীরসরাইয়ে একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে চাষের

বৈশ্বিক সম্ভাব্য খাদ্য সংকট মোকাবিলায় সরকার প্রতি ইঞ্চি জমি চাষের আওতায় এনে ফসলের আবাদ বাড়াতে তাগিদ দিলেও মীরসরাইয়ে একের পর এক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে চাষের অন্যতম অনুষঙ্গ পানির স্কিম। গত ১৫ বছরে ১৮টির মধ্যে ১৪টি পানির স্কিম বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ধান ছাড়াও অন্য ফসল উৎপাদনে বেগ পেতে হচ্ছে কৃষকদের। এ ছাড়া বাজারমূল্যের চেয়ে উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় কৃষিকাজে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষক।

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) সূত্রে জানা গেছে, শুষ্ক মৌসুমে ফসল উৎপাদন বাড়াতে ২০১২-১৩ ও এর আগে মীরসরাইয়ের ১৬ ইউনিয়ন ও ২ পৌরসভায় মোট ১৯টি পানির স্কিম দিয়েছিল বিএডিসি। ১৯টির মধ্যে একটি স্কিম ফেরত আসে। বর্তমানে ১৮টি পানির স্কিমের মধ্যে বন্ধ রয়েছে ১৪টি। চালু রয়েছে মাত্র ৪টি। এগুলোর মধ্যে করেরহাট ইউনিয়নে ২ , জোরারগঞ্জ ইউনিয়নে এক ও ধুম ইউনিয়নে একটি পানির স্কিম চালু রয়েছে। অথচ হিঙ্গুলী ও করেরহাট ইউনিয়নে ১৩টি পানি স্কিম দিয়েছিল বিএডিসি।
এ ব্যাপারে বিএডিসি মীরসরাইয়ের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাহেদ হাসান বলেন, বিভিন্ন স্ক্রিমে কিছু পাম্প নষ্ট হয়ে গেছে। কিছু পাম্প চালু করছে না স্কিম পরিচালকরা। এ ছাড়া সড়কের কাজ করতে গিয়ে পানি নিষ্কাশনের জন্য নির্মিত ড্রেন ভেঙে ফেলেছে এলজিইডি। মীরসরাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

আমন ধান কাটা শেষ হলেই বোরো আবাদ শুরু করবে কৃষক। বোরো আবাদ ছাড়াও কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন শীতকালীন সবজি চাষ হয়ে থাকে স্কিমের পানি দিয়ে।  মীরসরাই সদর ইউনিয়নের গড়িয়াইশ গ্রামের কৃষক সজল দেবনাথ, হানিফ ভূঁইয়া ও স্বপন দত্ত জানান, এলাকায় পানির স্কিম বন্ধ থাকায় তা চালু করার জন্য ইউএনও ও কৃষি কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদন করেছি।
এ ছাড়া ১২০ শতক জমি চাষ করতে খরচ হয় ৪০ থেকে ৪২ হাজার টাকা। কিন্তু ১২০ শতক জমিতে ধান চাষ হয় ৪৫ থেকে ৫০ মণ। যার বাজারমূল্য ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। তাই অনেকে বোরো আবাদে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। উপজেলার হিঙ্গুলী ইউনিয়নের পূর্ব হিঙ্গুলী গ্রামে স্কিম পরিচালক সুরুজ আলী জানান, ধানের বাজারমূল্য থেকে উৎপাদন খরচ বেশি হওয়ায় কৃষকরা বোরো চাষ করছে না।

তাই গত ৪ বছর ধরে তিনি স্কিম বন্ধ রেখেছেন। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রঘু নাথ নাহা জানান, বিএডিসির পানির স্কিম বন্ধ থাকলেও কৃষকরা মুহুরী প্রকল্প ও মহামায়া সেচ প্রকল্প ব্যবহার করে বোরো ও শীত কালীন সবজি চাষ করতে পারবে। এ জন্য কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। এ ছাড়া বন্ধ স্কিমগুলো চালুর বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুর রহমান জানান, আগামী বুধবার বন্ধ স্কিমগুলো চালুর বিষয়ে কৃষি অফিস, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিএডিসিকে নিয়ে যৌথ সভা করা করা হবে।

×