ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

যেভাবে জীবিত উদ্ধার হলেন রহিমা বেগম

প্রকাশিত: ১৩:০২, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২; আপডেট: ১৬:৩৩, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

যেভাবে জীবিত উদ্ধার হলেন রহিমা বেগম

উদ্ধার হওয়া রহিমা বেগম

অবশেষে নিখোঁজের ২৮ দিন পর ফরিদপুর থেকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে খুলনার রহিমা বেগমকে। শনিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত পৌনে ১১টার দিকে তাকে বোয়ালমারী উপজেলার সৈয়দপুর গ্রামের একটি বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে রাত ২টার দিকে তাকে খুলনার দৌলতপুর থানায় আনা হয়।

পুলিশ জানায়, রহিমা বেগম ফরিদপুরে আত্মগোপনে ছিলেন। তবে কী কারণে তিনি এ আত্মগোপন করেছিলেন তা তারা জানতে পারেননি। জিজ্ঞাসাবাদেও তিনি কোনো প্রশ্নের উত্তর দেননি।

খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের (কেএমপির) উপ-কমিশনার (উত্তর) মোল্লা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ২৭ আগস্ট রহিমা বেগম নিখোঁজ হন। পরে দৌলতপুর থানায় মামলা হয়। আমরা তার সন্ধানে কাজ করি। কিন্তু তিনি মোবাইল ফোন ব্যবহার করছিলেন না, যে কারণে সন্ধান পাচ্ছিলাম না। এক পর্যায়ে আমরা গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রাখি। শনিবার রাত পৌনে ১১টার দিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারীর সৈয়দপুর গ্রামের কুদ্দুসের বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। আমাদের টিম যখন ওই বাড়িতে যায়, তখন দেখতে পায় রহিমা দুই নারীর সঙ্গে কথা বলছেন। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি কথা বলা বন্ধ করে দেন।

তিনি জানান, ওই বাড়ির বাসিন্দারা জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, রহিমা তাদেরকে জানিয়েছেন তিনি বেশ কয়েকদিন চট্টগ্রাম ও মোকসেদপুরে ছিলেন। এরপর ১৭ আগস্ট বোয়ালমারীতে কুদ্দুসের বাড়িতে যান। তখন তার একটি ব্যাগে দুই প্যাকেট বিস্কুট, কিছু কাগজপত্র ও পরনের কয়েকটি কাপড় ছিল।

থানা হেফাজতে রমিমা বেগম।

জানা যায়, রহিমা যে কুদ্দুস মোল্লার বাড়িতে ছিলেন, সেই কুদ্দুস বেশ কয়েক বছর আগে খুলনার সোনালি জুট মিলে চাকরি করতেন। তখন রহিমা বেগমের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। পরে তিনি বোয়ালমারীতের চলে যান। বেশ কিছুদিন আগে রহিমার ছেলে একবার কুদ্দুসের বাড়িতে বেড়াতে যান। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কুদ্দুসের ছেলে আলামিন, কুদ্দুসের স্ত্রী ও ভাইয়ের স্ত্রীকে আটক করা হয়েছে।

তিনি বলেন, মামলাটি যেহেতু পিবিআইতে হস্তান্তর হয়েছে, তারা বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখবে। ভিকটিমক নিয়ে দেশব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। আমরা তাকে উদ্ধার করতে পেরে সবাই খুশি।

এদিকে গতকাল শনিবার মধ্যরাতে মরিয়ম মান্নান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে বলেন, মাকে উদ্ধারের খবর পেয়েছি। আমার থেকে খুশি এই মুহূর্তে কেউ নেই। আমি এই মুহূর্তে খুলনা যাচ্ছি।

গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে পানি আনতে বাড়ি থেকে নিচে নামেন রাহিমা বেগম (৫২)। এরপর আর বাসায় ফেরেননি। খোঁজ নিতে গিয়ে সন্তানরা মায়ের ব্যবহৃত জুতা, গায়ের ওড়না ও কলস রাস্তার ওপর পড়ে থাকতে দেখেন। রাতে সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজ নিয়েও তার সন্ধান মেলেনি। এরপর সাধারণ ডায়েরি ও পরে কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে দৌলতপুর থানায় মামলা করেন তার সন্তানরা। এ মামলা তদন্তকালে পুলিশ ও র‌্যাব ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয়জনকে আটক করে।

এমএইচ

সম্পর্কিত বিষয়:

×