ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০২ আগস্ট ২০২৫, ১৮ শ্রাবণ ১৪৩২

‘৩৩৩’ হেল্পলাইন এখন দুস্থদের ভরসা

প্রকাশিত: ১৭:৩৪, ১৪ জুলাই ২০২১

‘৩৩৩’ হেল্পলাইন এখন দুস্থদের ভরসা

নিজস্ব সংবাদদাতা, নেত্রকোনা ॥ ‘লকডাউনের ফলে কর্মহীন হয়ে পড়েন দুর্গাপুর উপজেলার কালিকাবর গ্রামের ক্ষুদ্র-নৃগোষ্ঠীর নারী শ্রমিক সুষমা মারাক। ঘরে খাদ্যসামগ্রী বলতে কিছুই ছিল না তার। হাতে টাকা-পয়সা না থাকায় কিনতেও পারছিলেন না। এমন অবস্থায় এক প্রতিবেশীর পরামর্শে ফোন করেন সরকারী হেল্পলাইন ৩৩৩-এ। ফোনে খাদ্যসহায়তা চান তিনি। ঠিক এর পরদিন সকালে তার ঘরে পৌঁছে যায় ১০ কেজি চাল ও এক কেজি ডালসহ বড় এক ব্যাগ খাদ্যসামগ্রী। শুধু সুষমা মারাকই নন, ৩৩৩ নম্বর সরকারী হেল্পলাইনে ফোন করে এমন সহায়তা পাচ্ছেন আরও অনেকে। উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, গত দুই সপ্তাহে র্দ্গুাপুর উপজেলার ৬শ ২০টি পরিবার এভাবে খাদ্য সহায়তা পেয়েছেন। অপেক্ষমান আছে আরও দুই শতাধিক পরিবার। এদের একটি বড় অংশ ক্ষুদ্র ও নৃগোষ্ঠীর। দুর্গাপুরের উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সাইফুল ইসলাম জানান, দ্বিতীয় দফার লকডাউন শুরু হওয়ার পর থেকে হেল্পলাইন ৩৩৩-এর মাধ্যমে প্রতিদিন গড়ে ৫০-৬০ জনের চাহিদা আসছে। উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সরাসরি বাড়িতে গিয়ে অথবা, অনেককে নির্দিষ্ট স্থানে জড়ো করে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দিচ্ছেন। সহায়তা হিসেবে প্রতিজনকে দেয়া হচ্ছে: ১০ কেজি চাল, এক কেজি করে ডাল, চিনি, পেঁয়াজ, দুই কেজি আলু, এক লিটার তেল ও এক প্যাকেট করে নুডুলস্ এবং মুড়ি। কাপাসাটিয়া গ্রামের দিনমজুর আব্দুল কাদির, আড়াপাড়া গ্রামের ঝুমা ক্ষত্রিয় ও গাওকান্দিয়া গ্রামের সাহিদা খাতুনও একইভাবে হেল্পলাইনে ফোন করে খাদ্যসামগ্রী পাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। দুর্গাপুর সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহীনূর রহমান জানান, এমনিতেই দুর্গাপুরের সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষজন খুব দরিদ্র। তার ওপর লকডাউন ও বিধিনিষেধ তাদের ‘মরার ওপর খাড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে দুর্গাপুর সদর এবং কুল্লাগড়া ইউনিয়নের ক্ষুদ্র ও নৃ-গোষ্ঠীর (গারো, হাজং প্রভৃতি) শ্রমিক ও দিনমজুর শ্রেণির লোকেরা কোন কাজ পাচ্ছেন না। তাই সরকারী হেল্পলাইন এখন তাদের ভরসা হয়ে ওঠেছে। দুর্গাপুর উপজেলার ইউএনও রাজীব উল আহসান জানান, ‘হেল্পলাইনের মাধ্যমে পাওয়া বার্তাগুলো আমরা খুব গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করছি। আর যারা ফোন করছেনÑ তারা আসলেই দরিদ্র ও নি¤œ আয়ের মানুষ। তাই কাউকে বঞ্চিত করছি না।’ জেলা প্রশাসক কাজি মোঃ আব্দুর রহমান বলেন, দ্বিতীয় দফার লকডাউন চলাকালে হেল্পলাইন ৩৩৩-এর মাধ্যমে ১০ উপজেলার ১ হাজার ৭শ ৪৫টি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে দুর্গাপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি। তিনি আরও বলেন, কারও না খেয়ে কষ্ট করার দরকার নেই। আমরা সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে সাধারণ ও নি¤œ আয়ের মানুষজনের কষ্ট লাঘবের চেষ্টা করছি। এ সেবাটি চালু থাকবে।’
×