ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৪ আগস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২

১৯৯২ সালের পর প্রথম দুই ম্যাচেই টানা হার

অথৈ সাগরে অস্ট্রেলিয়া

জিএম মোস্তফা

প্রকাশিত: ২২:২৪, ১৩ অক্টোবর ২০২৩

অথৈ সাগরে অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স

বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে সফল দলের নাম অস্ট্রেলিয়া। পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন তারা। টানা হ্যাটট্রিক চ্যাম্পিয়ন হওয়ার নজিরও গড়েছিল অজিরা। অথচ সেই দলটাই এবারের বিশ্বকাপে যেন অথৈ সাগরে ডুবে হাবুডুবু খাচ্ছে। চলমান ২০২৩ বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচেই যে লজ্জাজনকভাবে পরাজয়ের স্বাদ পেয়েছে প্যাট কামিন্সের দল।

বিশ্বকাপের ১৩তম সংস্করণে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই স্বাগতিক ভারতের কাছে হেরে মিশন শুরু করে অস্ট্রেলিয়া। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছেও ১৩৪ রানের বড় ব্যবধানে পরাস্ত হতে হয়েছে তারা। পরপর দুটো ম্যাচেই হার! প্রোটিয়াদের ছুড়ে দেওয়া ৩১২ রান তাডা করতে নেমে অস্ট্রেলিয়া মাত্র ১৭৭ রানেই গুটিয়ে যায়। এর ফলে নিজেদের বিশ্বকাপ ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ব্যবধানে হারতে হয়েছে অজিদের। পরপর দুই ম্যাচে হার যে কোনো দলের জন্যই বড় ধাক্কা। এমন বাজে সূচনার ফলে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে যাওয়ার রাস্তাটা বেশ কঠিনই হয়ে গেল অজিদের।

ওয়ানডে বিশ্বকাপের দীর্ঘ ৩১ বছর পর আবারও প্রথম দুই ম্যাচে হেরে মিশন শুরু করল অস্ট্রেলিয়া। এর আগে সর্বশেষ ১৯৯২ বিশ্বকাপের প্রথম দুই ম্যাচে হেরেছিল তারা। সেবার নিউজিল্যান্ড এবং দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হার মেনেছিল। এর আগে ১৯৭৯ এবং ১৯৮৩ বিশ্বকাপের শুরুর গল্পটাও এক এবং অভিন্ন। ভারত বিশ্বকাপে প্রথম দুই ম্যাচে হারের পর চরম হতাশ অস্ট্রেলিয়া। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ম্যাচে হারের পর প্যাট কামিন্স তো সাফ জানিয়ে দিলেন যে, দলের সবাই খুব কষ্টের মধ্যে রয়েছে। অজি অধিনায়কের ভাষ্যমতে, ‘আমাদের সবাই খুব কষ্ট পাচ্ছে। তাই আজ (বৃহস্পতিবার) রাতে বেশি কিছু বলার নেই। সব মান দণ্ডেই আমরা ভালো পিছিয়ে ছিলাম। টুর্নামেন্টে চ্যালেঞ্জিং দল হতে চাইলে আপনাকে সব কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে।

এবারের বিশ্বকাপে দুর্দান্ত ফর্মে রয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা। প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তিন সেঞ্চুরির নজির দেখেছিল ক্রিকেট দুনিয়া। যেখানে কুইন্টন ডি কক, রসি ভ্যান ডার ডুসেনের সেঞ্চুরির পাশাপাশি ছিল এইডেন মার্করামের বিশ্বকাপ ইতিহাসের দ্রুততম শতকও। যার ফলে ৪২৮ রানের বিশাল স্কোর গড়েছিল প্রোটিয়ারা। যা এযাবৎকালের বিশ্বকাপ ইতিহাসের সর্বোচ্চ দলীয় ইনিংস। লঙ্কানদের বিপক্ষে ম্যাচের পর অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গেও পারফর্ম্যান্সের ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছেন কুইন্টন ডি কক। সেইসঙ্গে গড়েন বিশ্বকাপে টানা দ্বিতীয় সেঞ্চুরির রেকর্ড। অথচ এর আগের দুটি বিশ্বকাপে কোনো সেঞ্চুরিই করতে পারেননি তিনি।

সেই ককই যেন এবারের বিশ্বকাপে হয়ে উঠলেন সত্যিকারের ডেঞ্জারম্যান। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ ১০৯ রানের ইনিংস খেলেন ডি কক। ম্যাচ শেষে তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ প্রতিপক্ষের খোদ অধিনায়ক প্যাট কামিন্সও। তিনি বলেন, ‘কুইন্টন ডি কক দারুণ ব্যাট করেছে। ওকে আউট করে আমরা দ্রুত ম্যাচে ফিরতে পারিনি। আমরা মনে করছিলাম ৩১২ রান তাড়া করতে পারব। তবে আসল সময় করতে পারিনি। আমাদের বোলাররা দারুণ বল করেছেন, আমার মনে হয় ফ্লাডলাইটে ব্যাটারদের সমস্যা বেড়েছে। এরকম চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হলে আমাদের সমাধান বের করতে হবে।প্রথম দুটি ম্যাচেই হারের ফলে ১০ দলের এই টুর্নামেন্টে এখন দ্বিতীয় দল হিসেবে পয়েন্ট তালিকার তলানীতে অবস্থান করছে অস্ট্রেলিয়া। এবার তাদের পারফর্ম্যান্স এতটাই বাজে যে নেদারল্যান্ডসের চেয়েও পিছিয়ে থাকা অজিদের পর শেষ দল হিসেবে তলানিতে রয়েছে আফগানিস্তান। অন্যদিকে টানা দুই জয়ে এখন পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে দক্ষিণ আফ্রিকা। অস্ট্রেলিয়ার নেট রান রেট এখন .৮। কোন দলকে সেমিফাইনালে খেলতে হলে কমপক্ষে ৬টা ম্যাচে জিততে হবে।

×