
ছবি: সংগৃহীত
মানসিক চাপ একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে এখন। বয়সের সঙ্গে দায়িত্বের পরিবর্তন হয়ে থাকে। এর সঙ্গে চাপের ধরনও বদলায়। আর এর কারণ ও প্রতিক্রিয়া কীভাবে বদলায়, সেটি বুঝতে পারা জরুরি।
এ ব্যাপারে ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কয়েকজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ কথা বলেছেন। তাহলে এ বিষয়ে জেনে নেয়া যাক এবার।
শৈশব ও কৈশোর- চাপে বেড়ে উঠা:
শিশু কিশোরদের ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময় মানসিক চাপ আসে পারিবারিক অশান্তি, পড়ালেখার চাপ ও সমাজে বিভিন্ন ক্ষেত্রে মানিয়ে চলা নিয়ে। পরীক্ষায় ভালো করা, ক্লাসে সেরা হওয়া, বন্ধুদের সঙ্গে মানিয়ে নেয়া এবং অভিভাবকদের প্রত্যাশা অনেক বেশি হওয়ায় অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয় শিশু-কিশোরদের মধ্যে।
তারুণ্য- সম্পর্ক, ক্যারিয়ার ও আর্থিক চ্যালেঞ্জ:
এই বয়সটা বেশ ঝুঁকির। তারুণ্যে সম্পর্ক, ক্যারিয়ার ও আর্থিক চ্যালেঞ্জ অনেক বেশি থাকে। এ সময় প্রেমের সম্পর্ক, চাকরি পাওয়া, স্বনির্ভর হওয়া, সমাজে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য চারদিক থেকে চাপ সামলাতে হয়। সবকিছু সামলে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার সংগ্রাম থাকে। ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে আবার আর্থিক অনিশ্চয়তা ও আত্মপরিচয়ের সংকটও মানসিক চাপ সৃষ্টি করে তরুণের মনে।
মধ্যবয়স- দ্বৈত দায়িত্বের চাপ:
এ ব্যাপারে গুরুগ্রামের মারেঙ্গো এশিয়া হাসপাতালের মনোবিজ্ঞানী ডা. মুনিয়া ভট্টাচার্য বলেন, মধ্য বয়সে মানুষের একদিকে যেমন পেশাগত চাপ থাকে, অন্যদিকে সন্তান, বৃদ্ধ মা-বাবার দায়িত্ব পালন ও পারিবারের অন্যান্য বিষয় সামলানো নিয়ে তীব্র মানসিক চাপে থাকতে হয়। এই বয়সের মানুষ মানসিক চাপ পরিচালনায় তুলনামূলকভাবে কিছুটা দক্ষ হয়ে থাকে। কেননা, তারা যেকোনো জটিল সমস্যা সমাধানে কৌশল ও সামাজিক সহায়তার ওপর নির্ভর করতে দক্ষ হয়ে থাকেন।
বার্ধক্য- চাপের নতুন ধরন:
স্বাভাবিকভাবেই বয়স্ক ব্যক্তিরা শারীরিকভাবে দুর্বলতা, প্রিয়জন হারানো ও আর্থিক নিরাপত্তার অভাবের কারণে চাপ অনুভব করেন। মনোবিজ্ঞানী ডা. মুনিয়া ভট্টাচার্য বলেন, বয়স্ক মানুষরা জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে মানসিকভাবে স্থিতিশীল থাকেন। একইসঙ্গে চাপের সঙ্গে দারুণভাবে মানিয়ে নিতে পারেন।
চাপ কমাতে করণীয়:
গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস: প্রতিদিন অন্তত ১০ মিনিট সময় ধীরে ধীরে নিঃশ্বাস নিন ও ছাড়ুন।
সুস্থ জীবনধারা: নিয়মিত ঘুম, পুষ্টিকর খাবার ও ব্যায়াম করতে হবে। এসব কার্যক্রম মানসিক ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে।
লেখালেখি: প্রতিদিন নিজের অনুভূতি বা ভালোলাগা বিষয়গুলো লিখে রাখতে পারেন। এসব রেকর্ড চাপ কমাতে সাহায্য করে।
মননশীলতা অনুশীলন: মেডিটেশন, যোগব্যায়াম বা ধ্যান মানসিক প্রশান্তি বয়ে আনে। অবসরে এসব চর্চা করতে পারেন।
সামাজিক সম্পর্ক বজায় রাখা: পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন। তাদের সঙ্গে কথা বলুন।
সাহায্য নেয়া: কখনো কোনো কারণে যদি মনে করেন নিজেকে ঠিক রাখতে পারছেন না বা অসহনীয় লাগছে সব, তাহলে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে ভুল করবেন না।
তাসমিম