
ছবিঃ সংগৃহীত
চীনের হুনান প্রদেশের চাংশা শহরের এক পুরনো পাড়ার ছোট মুদি দোকান এখন স্থানীয়দের জন্য শুধু কেনাকাটার জায়গা নয়, এক নিরাপত্তা আর নির্ভরতার প্রতীক। এই দোকানটির মালিক ৬০ বছর বয়সী সান মেইহুয়া গত ১৩ বছর ধরে প্রতিটি রাতেই দোকানের আলো জ্বালিয়ে রাখছেন—শুধু যাতে নারীরা রাতে বাসায় ফিরতে একটু হলেও নিরাপদ বোধ করেন।
২০১২ সালে সান মেইহুয়া তার দোকানটি চালু করেন। দোকান খোলার প্রথম মাসেই কয়েকজন তরুণী তাকে জানান, তার দোকানের আলো দেখে তারা রাতে নিরাপদ মনে করেন। সেই থেকেই তিনি প্রতিদিন রাতের আলো জ্বালিয়ে রাখা শুরু করেন এবং আর কোনোদিনও সেটি বন্ধ করেননি।
স্থানীয়রা এখন ভালোবেসে তাকে ডাকেন “স্ট্রিট লাইট আন্টি”, জানিয়েছে South China Morning Post।
তবে আলো জ্বালিয়ে রাখাই নয়, তার সহানুভূতির নজির আরও অনেক। তিনি তার দোকান বন্ধের সময় রাত ২টা পর্যন্ত বাড়িয়ে দিয়েছেন, যেন দেরি করে ফেরা মানুষজন একটু আশ্রয় পান। কখনও কখনও ভয় পাওয়া মেয়েদের সঙ্গেও তিনি নিজেই হাঁটেন নিরাপদভাবে তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে।
শুধু তাই নয়, সান তার বাড়ির ল্যান্ডলাইন ফোন দোকানে এনে রেখেছেন। অনেক বৃদ্ধ, যাদের মোবাইল নেই, বা ছোট শিশু যারা ফোন বহন করতে পারে না, তারা বিনামূল্যে এই ফোন ব্যবহার করে তাদের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
ল্যান্ডলাইনটি দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়, কিন্তু প্রতি বছরই তিনি সেটি বদলে নতুন ফোন বসান। আশেপাশের প্রতিবেশীরা এমনকি বাইরে যাওয়ার সময় তাদের একমাত্র বাসার চাবিও সানের কাছে রেখে যান, যার মধ্যে প্রতিফলিত হয় তার প্রতি নিঃশর্ত বিশ্বাস।
সান মেইহুয়ার এই নিরব দয়ালুতা এবং নিঃস্বার্থ সহানুভূতি তাকে করে তুলেছে স্থানীয়দের চোখে এক অসাধারণ মানবিক আইকন। এমন মানুষরা প্রমাণ করেন, সমাজ বদলানোর জন্য সবসময় বড় কিছু করতে হয় না—ছোট ছোট আলোও অনেক বড় অন্ধকার দূর করতে পারে।
ইমরান