ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৪ আগস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩২

আদালতে দুই বাংলাদেশির পক্ষে রায়, ক্ষুব্ধ ইতালির প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ১১:৪২, ৪ আগস্ট ২০২৫

আদালতে দুই বাংলাদেশির পক্ষে রায়, ক্ষুব্ধ ইতালির প্রধানমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত

ইতালির আলোচিত আলবেনিয়া অভিবাসন প্রকল্প বড় ধাক্কা খেল ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বোচ্চ আদালতের এক ঐতিহাসিক রায়ে। বাংলাদেশের দুই নাগরিকের করা মামলায় এই রায়ে আদালত জানিয়েছে, কোনো দেশকে "নিরাপদ দেশ" হিসেবে ঘোষণা করা যাবে না, যদি সেই নিরাপত্তা প্রতিটি ব্যক্তির জন্য সমভাবে প্রযোজ্য না হয়। এই রায়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলনি, যিনি এই অভিবাসন প্রকল্পের মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে পরিচিত।

 

 

সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে যাওয়ার পথে সমুদ্রে উদ্ধার হন এবং তাদেরকে আলবেনিয়ার এক অভিবাসন ক্যাম্পে পাঠানো হয়। সেখানে তাদের আশ্রয় আবেদন খারিজ করা হলে, তারা ইতালির আদালতে মামলা করেন। পরে মামলাটি ইউরোপীয় আদালতে গড়ায়।

২০২৫ সালের ১ আগস্ট ইউরোপীয় ইউনিয়নের সর্বোচ্চ আদালত রায় দেয় বাংলাদেশের দুই নাগরিকের পক্ষে। রায়ে বলা হয়:

নিরাপদ দেশ ঘোষণা করতে হলে অবশ্যই তা সকল ব্যক্তির জন্য সমভাবে নিরাপদ হতে হবে। এর জন্য বিচারিক পর্যালোচনার সুযোগ থাকতে হবে এবং বিশ্বস্ত ও গ্রহণযোগ্য প্রমাণ থাকতে হবে। যদি একটি দেশ নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর জন্য নিরাপদ না হয়, তাহলে তাকে সামগ্রিকভাবে নিরাপদ বলা যাবে না।

 

 

ইতালির প্রধানমন্ত্রী মেলনির নেতৃত্বাধীন ডানপন্থী সরকার এই রায়ের তীব্র সমালোচনা করে বলেছে, এটি জাতীয় সার্বভৌমত্বের ওপর হস্তক্ষেপ। তাদের দাবি, আদালত সরকারের পরিচালিত "গভীর তদন্তের" চেয়ে বিচারকদের মতামতকেই বেশি গুরুত্ব দিয়েছে, যা সীমান্ত নিরাপত্তা ও অবৈধ অভিবাসন নিয়ন্ত্রণে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

 

২০২৪ সালের অক্টোবরে ইতালি বাংলাদেশ, মিশরসহ কিছু দেশকে "নিরাপদ দেশ" হিসেবে তালিকাভুক্ত করে। কিন্তু বিশেষজ্ঞ মহলে এই সিদ্ধান্ত সমালোচিত হয়, কারণ এতে অনেক ব্যক্তির সম্ভাব্য ঝুঁকি উপেক্ষিত হয়।

আদালতের রায় সত্ত্বেও ইতালি এখনো আলবেনিয়ায় অভিবাসীদের পাঠানোর প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। তবে এখন শুধুমাত্র তাদেরই পাঠানো হচ্ছে যাদের আশ্রয় আবেদন ইতিমধ্যে প্রত্যাখ্যাত হয়েছে।

এই রায়টি ইউরোপে অভিবাসন ইস্যুতে এক নতুন নজির স্থাপন করল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। একইসাথে, এটি *বাংলাদেশি নাগরিকদের মানবাধিকার ও ন্যায্য বিচার পাওয়ার পক্ষে এক গুরুত্বপূর্ণ বিজয়* হিসেবেও বিবেচিত হচ্ছে।

ছামিয়া

×